কোম্পানি প্রবর্তিত নতুন ভূমিরাজস্ব নীতির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকশ্রেণি, কোম্পানি প্রবর্তিত ভূমিরাজস্বের উচ্চ হার, শিল্পবিপ্লব, জমিদারী উত্পীড়ন, মহাজনদের শোষণ, সরকারি বঞ্চনা, ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে পলাশির যুদ্ধে জয়লাভের পর থেকে একের পর এক কৃষক বিদ্রোহ সংঘটিত হয় ...

দেশীয় শিল্পী ও কারিগরদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রাজন্য শ্রেণির অবক্ষয়, সরকারের বৈষম্যমূলক শুল্ক নীতি, কোম্পানির একচেটিয়া বাণিজ্য, অবাধ বাণিজ্য নীতি, শিল্পবিপ্লব—কোম্পানির ভারসাম্যহীন শিল্পনীতি—ভারতীয় শিল্পের আদিম কৃতকৌশল ও কারিগরি শিক্ষার অভাব ...

ভারতের সঙ্গে ব্রিটিশ কোম্পানির বাণিজ্যিক সম্পর্কে, উনিশ শতকে ইংল্যান্ডের সঙ্গে ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রকৃতিতে পরিবর্তনের প্রধান দুটি কারণ । উনিশ শতকে ভারতের বাণিজ্যের প্রকৃতিতে পরিবর্তনের ফল। শিল্পবিপ্লব, শিল্পবিপ্লবের ফল

ভারতবর্ষ কৃষি প্রধান দেশ । কৃষি অর্থনীতিই ছিল এদেশের অর্থনৈতিক জীবনের মেরুদন্ড । এদেশে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য বিস্তার ও কোম্পানির আমলে পাঁচশালা বন্দোবস্ত, একশালা বন্দোবস্ত, চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত, রায়তওয়ারি বন্দোবস্ত, মহলওয়ারি বন্দোবস্ত প্রভৃতি ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থাগুলি ...

১৮২৪ খ্রিস্টাব্দে এলফিনস্টোন ও ম্যাকেনজির চেষ্টায় পাঞ্জাবে কয়েকটি মহল বা গ্রাম নিয়ে যৌথভাবে এই ব্যবস্থা চালু হয় । জনসংখ্যা কম থাকায় এই ধরণের ভূমিরাজস্বনীতি এই অঞ্চলে কার্যকর হয় । এতে প্রত্যেক চাষির সঙ্গে জমির বন্দোবস্ত ও রাজস্বের হার ...

১৮২২ খ্রিস্টাব্দে রাজস্বসচিব ম্যাকেনজি নিয়মবিধি জারি করে গাঙ্গেয় উপত্যকায়, বিশেষভাবে উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, দিল্লী এবং পাঞ্জাবে ব্যক্তিগত ভাবে প্রতিটি কৃষকদের পরিবর্তে প্রতিটি গ্রামের জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কোনো কোনো অঞ্চলে যে রাজস্ব বন্দোবস্ত প্রবর্তন করা হয় তা মহলওয়ারি বন্দোবস্ত ...

উনিশ শতকের প্রথম দিকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম ভারতে ইংরেজদের আধিপত্য সুদৃঢ় হওয়ার পর প্রধানত মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সিতে প্রবর্তিত রায়ত বা প্রকৃত চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি খাজনা আদায়ের সরকারি ব্যবস্থা চালু হয় । এটি ‘রায়তওয়ারি বন্দোবস্ত’ নামে পরিচিত । ...

পাঁচশালা বন্দোবস্ত । কর্ণওয়ালিশ প্রথম দশ বছরের জন্য জমিদারদের জমির মালিকানা দিয়েছিলেন । বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা ও বেনারসে এই ব্যবস্থা চালু হয় । তিনি এর নাম দেন দশশালা বন্দোবস্ত । চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সুফল, চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের কুফল ...

রাজস্ব আদায় সংক্রান্ত ব্যবস্থা দেখাশুনা করার জন্য বোর্ড অফ রেভিনিউ বা রাজস্ব সমিতি গঠন করা হয় । ওয়ারেন হেস্টিংস রাজস্বের পরিমাণ নির্ধারণ ও সর্বাধিক রাজস্ব আদায়ের জন্য বোর্ডের অধীনে একটি ভ্রাম্যমাণ কমিটি গঠন করেন । এই কমিটি জেলায় জেলায় ঘুরে জমি নিলামে ...

লর্ড কর্ণওয়ালিসের আমলে ভারতে কোম্পানির ঔপনিবেশিক শাসনব্যবস্থার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব হলো 'আইনের শাসন' প্রবর্তন । এদেশে ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠার আগে ভারতীয়দের আইনের শাসন সম্পর্কে কোনো সুস্পষ্ট ধারণাই ছিল না । আইনের শাসন -এর অর্থ হল এই যে ...

শাসন বিভাগের মতো ওয়ারেন হেস্টিংস বিচার বিভাগেরও নানা সংস্কার সাধন করেন । ভারতে ইংরেজ রাজত্বের সূচনায় দেওয়ানি ও ফৌজদারী মামলার ভার নবাবের হাতেই ন্যস্ত ছিল । ভূমি ও রাজস্ব সংক্রান্ত মামলা দেওয়ানি মামলা এবং খুন জখম রাহাজানি ...

লর্ড কর্নওয়ালিশ পুলিশ বিভাগের আমুল সংস্কার সাধন করেছিলেন । দেশীয় জমিদারদের নিযুক্ত বিশেষ বাহিনী পাইক, বরকন্দাজ প্রভৃতির বিলোপ সাধন করেন । তিনি কয়েকটি গ্রাম নিয়ে এক একটি থানা গঠন করেছিলেন । থানার দায়িত্বে দারোগা নিয়োগ করা হত ...

ভারতে ব্রিটিশ রাজ প্রতিষ্ঠা ও রাজ্য শাসনের মূল সহায়ক ছিল সেনাবাহিনী । ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের পলাশির যুদ্ধর পর ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের সিপাহী বিদ্রোহ পর্যন্ত মাত্র ১০০ বছরের মধ্যে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি যে অস্বাভাবিক দ্রুততায় সারা ভারত জয় করে নেয় ...

লর্ড কর্নওয়ালিসের আমল থেকে শাসনকার্যে নিযুক্ত সাধারণ রাজকর্মচারীদের দুর্নীতিমুক্ত করে ভারতীয় শাসন ব্যবস্থাকে উন্নত করার উদ্দেশ্যে একদল শিক্ষিত, বুদ্ধিমান ও সূদক্ষ উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারী নিয়োগ করার যে প্রথা চালু হয়, তা ভারতীয় সিভিল সার্ভিস নামে পরিচিত । ...

১৭৮৬ খ্রিস্টাব্দে লর্ড কর্নওয়ালিশ ভারতে গভর্নর জেনারেল পদে নিযুক্ত হয়ে আসার পর প্রথমে কোম্পানির কর্মচারীদের দুর্নীতি দমনের ব্যবস্থা করেন । তিনি মনে করতেন কম বেতন কর্মচারীদের দুর্নীতির একটি প্রধান কারণ । তাই তিনি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির ব্যবস্থা করেন । ...

হেস্টিংস যখন ভারতে আসেন তখন আদর্শ শাসনব্যবস্থার কোনো দৃষ্টান্ত তাঁর কাছে ছিল না । তাই শাসন ও রাজস্ব সংক্রান্ত নানা পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্যে হেস্টিংসের শাসনকাল অতিবাহিত হয়েছিল । নিজ প্রতিভা ও সাংগঠানিক ক্ষমতার জোরে তিনি ভারতের কেন্দ্রীয় শাসন ও রাজস্ব ব্যবস্থার ...

দ্বৈতশাসনের ফলে বাংলার অর্থনীতি যে একবারে ভেঙ্গে পড়ছিল ওয়ারেন হেস্টিংস ভারতে এসেই তা প্রত্যক্ষ করেন । বাংলার ভেঙ্গে পড়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য তিনি কতকগুলি ব্যবস্থা গ্রহন করেন । প্রথমেই দ্বৈত-শাসনব্যবস্থা লোপ করেন ...

১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে লর্ড ক্লাইভ মোগল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের কাছ থেকে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানি লাভ করার পর কোম্পানির পক্ষে লর্ড ক্লাইভ বাংলার নবাব নজম-উদ্-দৌলাকে কাঙ্ক্ষিত ৫৩ লক্ষ টাকা দেবার বিনিময়ে রাজস্ব আদায় এবং দেওয়ানি মামলার ভার গ্রহণ করলেন ...

১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে পলাশির যুদ্ধে এবং ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দে বক্সারের যুদ্ধে জয়লাভ করে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নতুন রাজনৈতিক ও সামরিক বলে বলীয়ান হয়ে ওঠে । ১৭৬৫ সালে রবার্ট ক্লাইভ অযোধ্যার নবাব সুজা-উদ-দৌলার সঙ্গে এলাহাবাদের সন্ধি স্বাক্ষর করেন । ...

১৭৯৯ ও ১৮১৮ সালের মধ্যে মহীশূর ও মারাঠা শক্তির অবসান ঘটলে দক্ষিণ ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য সম্প্রসারিত হয় । সগৌলির সন্ধি, প্রথম ব্রহ্ম যুদ্ধ, প্রথম আফগান যুদ্ধ, ইঙ্গ-শিখ সম্পর্ক, অমৃতসরের সন্ধি, প্রথম ইঙ্গ-শিখ যুদ্ধ, দ্বিতীয় ইঙ্গ-শিখ যুদ্ধ, দ্বিতীয় ব্রহ্মযুদ্ধ ...