লেন্স সংক্রান্ত কয়েকটি সংজ্ঞা

Submitted by arpita pramanik on Tue, 01/15/2013 - 10:40

লেন্স সংক্রান্ত কয়েকটি সংজ্ঞা (Some Definitions) :

[i] বক্রতা কেন্দ্র (Centre of curvature) : লেন্সের উভয় তলই যদি গোলীয় হয় তবে এরা প্রত্যেকে একটি নির্দিষ্ট গোলকের অংশ হবে । ওই গোলকের কেন্দ্রকে ওই তলের বক্রতা কেন্দ্র বলে ।

[ii] বক্রতা ব্যাসার্ধ (Radius of of curvature) : লেন্সের কোনো তল যে গোলকের অংশ হবে ওই গোলকের ব্যাসার্ধকে ওই তলের বক্রতা ব্যাসার্ধ বলে ।

[iii] প্রধান অক্ষ (Principal axis) : যদি লেন্সের দুই তল গোলীয় হয় তবে ওই তলদুটির বক্রতা কেন্দ্র দুটিকে যোগ করলে যে সরলরেখা পাওয়া যায় তাকে ওই লেন্সের প্রধান অক্ষ বলে ।

[iv] পাতলা লেন্স (Thin lens) : লেন্সের বেধ যদি ওর পৃষ্ঠতল দুটির বক্রতা ব্যাসার্ধের তুলনায় খুব ছোটো হয়, তাহলে ওই লেন্সকে পাতলা লেন্স বলে ।

[v] উন্মেষ (Aperture) : লেন্সের ব্যাসকে লেন্সটির উন্মেষ বলে ।

[vi] আলোক কেন্দ্র (Optical Centre) : যদি কোনো আলোক-রশ্মি লেন্সের কোনো তলে এরূপভাবে আপতিত হয় যে, লেন্সের ভিতর দিয়ে প্রতিসৃত হয়ে দ্বিতীয় তল থেকে নির্গত হওয়ায় সময় এটি আপতিত রশ্মির সমান্তরালভাবে নির্গত হয়, তবে লেন্সের ভিতরে প্রতিসৃত রশ্মির গতিপথ প্রধান অক্ষকে যে বিন্দুতে ছেদ করে সেই বিন্দুকে লেন্সের আলোক কেন্দ্র বলে । পাতলা লেন্সের ক্ষেত্রে আলোক কেন্দ্র দিয়ে কোনো আলোক-রশ্মি গেলে, রশ্মির কোনো চ্যুতি বা পার্শ্ব-সরণ হয় না— আপতিত রশ্মি সোজাপাথে লেন্স থেকে নির্গত হয়ে যায় ।

 

প্রমাণ করা যায় যে— অবতলোত্তল এবং উত্তলাবতল লেন্সে আলোককেন্দ্র অপেক্ষাকৃত কম বক্রতা ব্যাসার্ধের তলের দিকে লেন্সের বাইরে প্রধান অক্ষের উপর অবস্থান করে ।

[vii] মুখ্য ফোকাস ও ফোকাস দুরত্ব (Principal focus and focal length) : যদি কোনো সমান্তরাল রশ্মিগুচ্ছ লেন্সের প্রধান অক্ষের সঙ্গে সমান্তরালভাবে এসে লেন্সের ওপর পড়ে, তাহলে প্রতিসরণের পর রশ্মিগুচ্ছ উত্তল লেন্সের ক্ষেত্রে প্রধান অক্ষের ওপর অবস্থিত একটি বিন্দুতে মিলিত হয়; কিংবা অবতল লেন্সের ক্ষেত্রে প্রধান অক্ষের ওপর অবস্থিত কোনো বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে বলে মনে হয় । সেই বিন্দুটিকে লেন্সের মুখ্য ফোকাস বলে । লেন্সের আলোককেন্দ্র থেকে মুখ্য ফোকাসের দূরত্বকে ফোকাস (ƒ) দূরত্ব বলা হয় । 

লেন্সের দুটি মুখ্য ফোকাস আছে । ওই দুটি ফোকাস আলোক কেন্দ্রের বিপরীত দিকে এবং লেন্সের উভয় দিকের মাধ্যম একই রকম হলে, আলোক কেন্দ্র থেকে প্রথম এবং দ্বিতীয় ফোকাস সমান দূরত্বে থাকে ।

[viii] ফোকাস তল (Focal plane) : মুখ্য ফোকাসের মধ্য দিয়ে লেন্সের প্রধান অক্ষের সঙ্গে লম্বভাবে অবস্থিত তলকে লেন্সের ফোকাস তল বলে ।

[ix] গৌণ ফোকাস (Secondary focus) : যদি একগুচ্ছ সমান্তরাল রশ্মি লেন্সের প্রধান অক্ষের সঙ্গে সামান্য কোণ করে লেন্সে আপতিত হয়, তাহলে প্রতিসরণের পর রশ্মিগুচ্ছ উত্তল লেন্সের ফোকাস তলে মিলিত হয়, কিংবা অবতল লেন্সের ফোকাস তলের কোনো বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে বলে মনে হয় । এই বিন্দুকে লেন্সের গৌণ ফোকাস বলে ।

*****

Related Items

রোধাঙ্ক (Resistivity)

একই প্রস্থচ্ছে এবং একই দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট বিভিন্ন তারের রোধ তারের উপাদানের ওপর নির্ভর করে । যেমন, একই প্রস্থচ্ছেদ এবং একই দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট তামার ও রুপোর তারের রোধ কম । কোনো পদার্থের একক দৈর্ঘ্য এবং একক প্রস্থচ্ছেদবিশিষ্ট তারের রোধকে রোধাঙ্ক বলে । আবার একক প্রস্থচ্ছেদ ...

বিভিন্ন রাশির ব্যবহারিক এবং SI একক

তড়িৎ পরিমাণের ব্যবহারিক এবং SI একক ‘কুলম্ব’ [coulomb] । যে পরিমাণ তড়িৎ সিলভার নাইট্রেট দ্রবণে পাঠালে রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলে ক্যাথোডে 0.001118 গ্রাম সিলভার জমা হয়, সেই পরিমাণ তড়িৎকে 1 কুলম্ব [coulomb] ধরা হয় । এর প্রতীক C ।

ওহমের সূত্র (Ohm’s Law)

ওহমের সূত্র থেকে রোধের সংজ্ঞা পাই, কোনো পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব-প্রভেদ এবং ওই পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহমাত্রার অনুপাতকে ওই পরিবাহীর রোধ বলে । যেসব পরিবাহী ওহম-সূত্র মেনে চলে তাদের ওহমীয় পরিবাহী বলে । যেমন— তামা, অ্যালুমিনিয়াম, লোহা প্রভৃতি বেশির ...

তড়িচ্চালক বল ও বিভব-প্রভেদ

যে বাহ্যিক কারণ স্থির বস্তুকে গতিশীল করতে পারে বলবিজ্ঞানে তাকে বল বলা হয় । এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তড়িৎ-কোশের তড়িতাধান চালনা করার ক্ষমতাকে বলা হয় তার 'তড়িচ্চালক বল' । যার প্রভাবে বা যে কারণে তড়িৎ-বর্তনীর কোনো অংশে রাসায়নিক কিংবা অন্য কোনো রকম ...

তড়িৎ-বিভব এবং বিভব-প্রভেদ

কোনো তড়িৎগ্রস্থ বস্তুর তড়িৎ-বিভব বলতে ওই বস্তুর এমন এক তড়িৎ-অবস্থা বোঝায়, যার দ্বারা বোঝা যায় ওই বস্তু অন্য কোনো বস্তুকে তড়িৎ দেবে কিংবা অন্য কোনো বস্তু থেকে তড়িৎ নেবে । অসীম দুরত্ব থেকে একক ধনাত্মক আধানকে তড়িৎ ক্ষেত্রের কোনো বিন্দুতে আনতে যে ...