জৈব যৌগের বন্ধন প্রকৃতি

Submitted by arpita pramanik on Wed, 04/17/2013 - 20:54

জৈব যৌগের আণবিক গঠন এবং জৈব এবং অজৈব যৌগের মধ্যে পার্থক্য (Bonding in organic compounds and difference from inorganic compounds):

কর্বনের পারমাণবিক সংখ্যা 6, কার্বনের ইলেকট্রন বিন্যাস থেকে জানা যায় কার্বনের প্রথম কক্ষে 2টি এবং বাইরের কক্ষে 4টি ইলেকট্রন আছে । কার্বন পরমাণু বাইরের কক্ষের 4টি ইলেকট্রন, অন্য পরমাণুর বাইরের কক্ষের ইলেকট্রনের সঙ্গে চারটি ইলেকট্রন জোড় গঠন করে সমযোজ্যতা দ্বারা জৈব যৌগ উৎপন্ন করে ।

যেমন— মিথেন : জৈব যৌগের সরলতম যৌগ হল মিথেন (Methane) । যৌগটির সংকেত হল CH4 । এখানে কার্বন পরমাণুর সর্ববহিঃস্থ কক্ষে ইলেকট্রনগুলি চারটি হাইড্রোজেন পরমাণুর সহিত যুক্ত হয়েছে । এর গঠন হল - 

কার্বন পরমাণু আয়নীয় অর্থাৎ তড়িৎ-যোজী যৌগ উৎপন্ন করে না । কার্বন-কার্বন সমযোজ্যতা বন্ধন খুবই শক্তিশালী । অনেকগুলি কার্বন পরমাণু পরস্পরের সঙ্গে সমযোজ্যতা বন্ধন দিয়ে আবদ্ধ হয়ে দীর্ঘ কার্বন শৃঙ্খল উৎপন্ন করতে পারে । কার্বন পরমাণুগুলির নিজেদের মধ্যে যুক্ত হওয়ার এই ধর্মকে কার্বনের ক্যাটিনেশন (Catenation) বলে ।

  

ক্যাটিনেশন (Catenation) :- যে ধর্মের জন্য কার্বন পরমাণুগুলি পরস্পর সমযোজী বন্ধনের (এক-বন্ধন, দ্বি-বন্ধন, ত্রি-বন্ধন) সাহায্যে পরস্পর যুক্ত হয়ে সুস্থিত কার্বন শৃঙ্খল গঠন করে, কার্বন পরমাণুর সেই বিশেষ ধর্মকে ক্যাটিনেশন বলে ।  

একাধিক কার্বন পরমাণু এক-বন্ধন (-) (single bond), দ্বি-বন্ধন (=) (double bond) বা ত্রি-বন্ধন (≡) (triple bond) দ্বারা পরস্পর যুক্ত হয়ে বিভিন্ন জৈব যৌগ গঠন করতে পারে ।

[i] এক-বন্ধন (-) (singl bond):- যেমন, ইথেন অণুতে -

 

এবং একই রূপে ইথাইল অ্যালকোহলে কার্বন-কার্বন পরমাণুর মধ্যে এক-বন্ধন সৃষ্টি হয়ছে ।

[ii] দ্বি-বন্ধন (=) (double bond):- যেমন ইথিলিন অণুতে দ্বি-বন্ধন দেখা যায় অর্থাৎ কার্বন-কার্বন পরমাণুর মধ্যে দ্বি-বন্ধন সৃষ্টি হয়ছে ।

[iii] ত্রি-বন্ধন (≡) (triple bond):- যেমন অ্যাসিটিলিন অণুতে ত্রি-বন্ধন অর্থাৎ কার্বন-কার্বন পরমাণুর মধ্যে ত্রি-বন্ধন সৃষ্টি হয়ছে ।

H - C ≡ C - H

কিন্তু অজৈব যৌগের মধ্যে বন্ধন আয়নীয় ও সমযোজী দুটিই হতে পারে । অজৈব যৌগ সাধারণত আয়ানীয় বন্ধন দ্বারা যুক্ত : যেমন-NaCl, KCl, MgBr2, CaCl2 ইত্যাদি । কিন্তু কিছু কিছু অজৈব যৌগ আছে যারা সমযোজ্যতার দ্বারা যুক্ত হলেও আয়োনীয় যৌগের মতো ব্যবহার করে : যেমন- NH3, HCl, H2O, CO2 ইত্যাদি ।

*****

Related Items

বাড়িতে বিদ্যুৎ-লাইন ব্যবস্থা

কোনো কারণে বাড়িতে বিদ্যুৎ লাইনে নিরাপদ সীমার অতিরিক্ত তড়িৎপ্রবাহ চালু হলে আগুন লেগে বিপদ ঘটতে পারে । বাড়িতে তড়িৎ বর্তনীর লাইনে নিরাপত্তার জন্য কম গলনাঙ্ক বিশিষ্ট কোনোও সংকর ধাতুর তৈরি এবং বেশি রোধের যে সরু তার শ্রেণি সমবায়ে লাইন তারের সঙ্গে সংযুক্ত করা ...

তড়িৎ-ক্ষমতা এবং শক্তি

কার্য করবার হারকে ক্ষমতা বলে । তড়িৎ-ক্ষমতা বলতে তড়িৎপ্রবাহের কার্য করবার হার-কে বোঝায় । বৈদ্যুতিক যন্ত্রের ক্ষমতা ওয়াট [watt] নামক এককে প্রকাশ করা হয় । যে বৈদ্যুতিক যন্ত্র এক সেকেন্ডে [second] এক জুল [joule] কার্য করতে পারে, তার ক্ষমতাকে 1 ওয়াট [watt] বলা হয় । ...

তড়িৎপ্রবাহের তাপীয় ফল ও তার প্রয়োগ

1841 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী জেমস প্রেসকট জুল সর্বপ্রথম পরিবাহীতে তড়িৎপ্রবাহের ফলে তাপের সৃষ্টি সম্পর্কে তিনটি সূত্র প্রকাশ করেন, এই সূত্রগুলিকে জুলের সূত্র বলা হয় । কোনো পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ পাঠালে পরিবাহী উত্তপ্ত হয়ে ওঠে— একেই তড়িৎপ্রবাহের তাপীয় ফল বলে ...

রোধের সমবায় এবং তুল্যাঙ্ক রোধ

ব্যবহারিক ক্ষেত্রে একাধিক রোধকে একত্রে যুক্ত করে মোট রোধের মান বাড়ানো বা কমানোর প্রয়োজন হয় । একে রোধের সমবায় বলা হয় । কোনো তড়িৎ-বর্তনীর দুই প্রান্তে একাধিক রোধ যুক্ত থাকলে বর্তনীতে যে প্রবাহ হয়, রোধগুলির পরিবর্তে ওই দুই প্রান্তের সঙ্গে একটি মাত্র রোধ যোগ ...

রোধাঙ্ক (Resistivity)

একই প্রস্থচ্ছে এবং একই দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট বিভিন্ন তারের রোধ তারের উপাদানের ওপর নির্ভর করে । যেমন, একই প্রস্থচ্ছেদ এবং একই দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট তামার ও রুপোর তারের রোধ কম । কোনো পদার্থের একক দৈর্ঘ্য এবং একক প্রস্থচ্ছেদবিশিষ্ট তারের রোধকে রোধাঙ্ক বলে । আবার একক প্রস্থচ্ছেদ ...