কপার সালফেটের জলীয় দ্রবণের তড়িৎ বিশ্লেষণ

Submitted by arpita pramanik on Wed, 02/20/2013 - 10:12

কপার সালফেটের জলীয় দ্রবণের তড়িৎ বিশ্লেষণ :

CuSO4 জলে আয়নিত হয়ে Cu2+ এবং SO42- আয়ন উৎপন্ন করে । সুতরাং, জলীয় দ্রবণে চার প্রকার আয়ন থাকে, দুধরনের ক্যাটায়ান H+ ও Cu2+ এবং দু ধরনের অ্যানায়ন OH- ও SO42-  ।

[tex]{H_2}O \rightleftharpoons {H^ + } + O{H^ - }[/tex] ;    [tex]CuS{O_4} \rightleftharpoons C{u^{2 + }} + SO_4^{2 - }[/tex]

এইরূপ দ্রবণের তড়িৎ বিশ্লেষণে উৎপন্ন পদার্থ, ব্যবহৃত তড়িদ্দ্বারের ওপর নির্ভর করে, যথা—

[ক] প্ল্যাটিনাম তড়িদ্দ্বার ব্যবহার করলে, ক্যাথোডে H+ আয়ন মুক্ত না হয়ে Cu2+ আয়ন মুক্ত হবে, কারণ H+ আয়ন অপেক্ষা Cu2+ আয়নের ইলেকট্রন গ্রহণের প্রবণতা বেশি (বিজারণ বিভব বেশি) এবং অ্যানোডে SO42= আয়ন  মুক্ত না হয়ে OH- আয়ন মুক্ত হবে । অর্থাৎ ক্যাথোডে ধাতব Cu এবং অ্যানোডে O2 গ্যাস উৎপন্ন হয় ।  

বিক্রিয়া :

ক্যাথোডে: Cu2+ + 2e → 2Cu↓ 

অ্যানোডে: OH-  -  e  → [OH] ;   4[OH] = 2H2O + O2

[খ] কপার তড়িদ্দ্বার ব্যবহার করলে,  Cu2+  আয়ন ক্যাথোডে গিয়ে ক্যাথোড থেকে ইলেকট্রন গ্রহণ করে এবং ধাতব Cu ক্যাথোডে সঞ্চিত হয়ে  ক্যাথোডের ওজন বৃদ্ধি করে । SO42- আয়ন অ্যানোডে যায় কিন্তু সেখানে মুক্ত হয় না । অ্যানোডের কপার পরমাণু ইলেকট্রন ত্যাগ করে Cu2+ আয়ন গঠন করে । SO42-  উৎপন্ন Cu2+ এর সঙ্গে মিলিত হয়ে CuSO4 উৎপন্ন করে এবং দ্রবণে দ্রবীভূত হয়, কারণ ইলেকট্রন (ঋণাত্মক আধান) SO42- আয়নের চেয়ে কপার পরমাণু থেকে অধিকতর সহজে মুক্ত হয় । এই পদ্ধতিতে কপার ক্যাথোডে ধাতব কপার সঞ্চিত হয় এবং কপার অ্যানোড CuSO4 হিসাবে দ্রবণে দ্রবীভূত হয়ে কোশের দ্রবণের ঘনত্ব স্থির রাখে ।

বিক্রিয়া :

[tex] CuS{O_4} \rightleftharpoons C{u^{2 + }} + SO_4^{2 - } [/tex]

ক্যাথোডে : [tex] C{u^{2 + }} + 2e \rightleftharpoons Cu \downarrow [/tex]

অ্যানোডে : [tex] Cu - 2e \rightleftharpoons C{u^{2 + }};C{u^{2 + }} + SO_4^{2 - } \rightleftharpoons CuS{O_4} [/tex]

এই প্রক্রিয়া চলতে থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত না অ্যানোডের ও দ্রবণের কপার নিঃশেষিত হয় । অবশেষরূপে কোশে H+ আয়ন ও SO42- আয়ন অর্থাৎ, সালফিউরিক অ্যাসিড থাকে ।

*****

Related Items

পরমাণুর ইলেক্ট্রনের বন্টন

ইলেকট্রনগুলি নিউক্লিয়াসের চারিদিকে শূন্যস্থানে সমকেন্দ্রিক কিন্তু বিভিন্ন তলে অবস্থিত ক্রমবর্ধমান ব্যাসার্ধের বৃত্তাকার এবং উপবৃত্তাকার কক্ষপথে তীব্রবেগে আবর্তন করে । উপবৃত্তের যে-কোনো একটি ফোকাসে পরমাণুর কেন্দ্রক বা নিউক্লিয়াস অবস্থান করে ...

সৌর জগৎ ও পরমাণুর গঠন

লর্ড রাদারফোর্ডের কল্পনা অনুযায়ী পরমাণুর গঠন অনেকটা সৌরজগতের মতো। সৌরজগতের সঙ্গে পরমাণুর গঠনের সাদৃশ্য- সৌরজগতে সূর্যকে কেন্দ্র করে বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি ইত্যাদি গ্রহ বিভিন্ন কক্ষ পথে আবর্তন করে । পরমাণুতে নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ...

মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাস

হাইড্রোজেন, হিলিয়াম (নিষ্ক্রিয়), লিথিয়াম, বেরিলিন, বোরন, কার্বন, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, ফ্লুওরিন, নিয়ন (নিষ্ক্রিয়), সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম, সিলিকন, ফসফরাস, সালফার, ক্লোরিন, আর্গন (নিষ্ক্রিয়), পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম ...

নিউক্লিয়াসের গঠন ও নিউক্লীয় বল

নিউক্লিয়াসের প্রোটন ও নিউট্রনের সংখ্যা বিভিন্ন মৌলের ক্ষেত্রে বিভিন্ন । তবে হাইড্রোজেন নিউক্লিয়াসে কেবলমাত্র একটি প্রোটন আছে, কোনো নিউট্রন নেই । নিউক্লিয়াসের মূল কণাগুলিকে (প্রোটন ও নিউট্রন) সাধারণভাবে নিউক্লিয়ন [nucleon] বলা হয় । ...

পরমাণুর ধারণা ও পরমাণুর গঠন

1808 খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ বিজ্ঞানী স্যার জন ডালটন পদার্থের গঠন সম্পর্কে একটি সুনির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব প্রকাশ করেন । এই তত্ত্বটি ডালটনের পরমাণুবাদ (Dalton's Atomic Theory) নামে খ্যাত । পরমাণুবাদের মূল কথাগুলি হল : ...