অ্যালকিন (Alkene)

Submitted by arpita pramanik on Sun, 04/21/2013 - 22:20

অ্যালকিন (Alkenes) :

যে সব হাইড্রোকার্বনে কম পক্ষে একটি কার্বন-কার্বন দ্বি-বন্ধন ( > C = C < ) থাকে, তাদের অ্যালকিন বলে । এই যৌগগুলি হাইড্রোজেনের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে অ্যালকেন উৎপন্ন করে । কার্বন ও হাইড্রোজেন দিয়ে গঠিত মুক্ত শৃঙ্খল যৌগে সর্বোচ্চ যতগুলি হাইড্রোজেন পরমাণু থাকতে পারে তার থেকে কম হাইড্রোজেন পরমাণু থাকার জন্য অ্যালকিন সমূহ অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন নাম পরিচিত । এই শ্রেণির যৌগগুলির সাধারণ সংকেত CnH2n, যেখানে n -একটি ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যা । এই শ্রেণির প্রথম সভ্য হিসাবে ইথিলিনকে (C2H4) ধরা হয় ।

ইথিলিন (Ethylene) :

সংকেত : C2H4

ইথিলিনের উৎস (Source of Ethylene)

[i] কোল গ্যাসে ইথিলিন (Ethylene) থাকে প্রায় 6% (আয়তন অনুসারে) ।

[ii] প্রাকৃতিক গ্যাসেও ইথিলিন থাকে ।

[iii] তেল শোধনাগারে অপরিশোধিত পেট্রোলিয়ামের তাপ বিয়োজন (পেট্রোলিয়াম ক্র্যাকিং) প্রক্রিয়ায় উচ্চমানের তেল উৎপাদনের সময় উপজাত হিসাবে প্রচুর পরিমাণে ইথিলিন পাওয়া যায় ।

[iv] কাঁচা ফলেও খুব অল্প পরিমাণে ইথিলিন থাকে ।

[v] পরীক্ষাগারে ইথাইল অ্যালকোহলের সঙ্গে গাঢ় সালফিউরিক অ্যাসিড মিশে 170°C উষ্ণতায় উত্তপ্ত করলে, ইথিলিন উৎপন্ন হয় ।  বিক্রিয়াটি হল :  C2H5OH + H2SO4 = C2H4↑+ H2O + [H2SO4]  

ইথিলিনের ব্যবহার (Uses of Ethylene) :

[i] কাঁচা ফল কৃত্রিম উপায়ে পাকাতে এবং ফল সংরক্ষণে ইথিলিনকে ব্যবহার করা হয় ।

[ii] শল্য চিকিৎসায় চেতনানাশক হিসাবে ইথিলিন ব্যবহার করা হয় ।

[iii] বিভিন্ন প্লাস্টিক যেমন- পলিথিন বা পলি ইথিলিন, পলিস্টাইরিন উৎপাদনে ইথিলিনকে ব্যবহার করা হয় ।  

[iv] বিভিন্ন দ্রাবক যেমন- গ্লাইকল, ডাইঅক্সান প্রভৃতি প্রস্তুতিতে ইথিলিনকে ব্যবহার করা হয় ।

[v] ইথাইল অ্যালকোহল প্রস্তুতিতে ইথিলিনকে ব্যবহার করা হয় ।

[vi] কৃত্রিম রবার এবং যুদ্ধের সময় বিষাক্ত মাস্টার্ড গ্যাস প্রস্তুতিতে ইথিলিন ব্যবহার করা হয় ।

যুত বিক্রিয়া (Addition reaction):- যে বিক্রিয়ায় কোনো যৌগের অণু অপর কোনো পদার্থের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হয় এবং অণু দুটির কোনো অংশই ভেঙ্গে যায় না, এইরূপ বিক্রিয়াকে যুত বিক্রিয়া বলে । বিক্রিয়ার ফলে উৎপন্ন যৌগটিকে যুত যৌগ বলে । যেমন: অনুঘটকের উপস্থিতিতে এবং চাপের দ্বারা ইথিলিন হাইড্রোজেন গ্রহণ করে এবং বিক্রিয়াটিতে তাপ উৎপন্ন হয় । Pt বা Pd ধাতুর সুক্ষ্ম কণা অনুঘটকের জন্য সাধারণ উষ্ণতায় বিক্রিয়াটি হয়, কিন্তু নিকেল অনুঘটকের ক্ষেত্রে -300°C উষ্ণতায় বিক্রিয়াটি ঘটে ।

ব্রোমিনের সঙ্গে যুত বিক্রিয়া (Addition reaction with bromine) :- ইথিলিন, কার্বন টেট্রাক্লোরাইড কিংবা ক্লোরোফর্মে দ্রবীভূত লাল বর্ণের ব্রোমিনের সঙ্গে যুত বিক্রিয়া করে বর্ণহীন ইথিলিন ডাই-ব্রোমাইড উৎপন্ন করে ।

*****

Related Items

বিভিন্ন রাশির ব্যবহারিক এবং SI একক

তড়িৎ পরিমাণের ব্যবহারিক এবং SI একক ‘কুলম্ব’ [coulomb] । যে পরিমাণ তড়িৎ সিলভার নাইট্রেট দ্রবণে পাঠালে রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলে ক্যাথোডে 0.001118 গ্রাম সিলভার জমা হয়, সেই পরিমাণ তড়িৎকে 1 কুলম্ব [coulomb] ধরা হয় । এর প্রতীক C ।

ওহমের সূত্র (Ohm’s Law)

ওহমের সূত্র থেকে রোধের সংজ্ঞা পাই, কোনো পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব-প্রভেদ এবং ওই পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহমাত্রার অনুপাতকে ওই পরিবাহীর রোধ বলে । যেসব পরিবাহী ওহম-সূত্র মেনে চলে তাদের ওহমীয় পরিবাহী বলে । যেমন— তামা, অ্যালুমিনিয়াম, লোহা প্রভৃতি বেশির ...

তড়িচ্চালক বল ও বিভব-প্রভেদ

যে বাহ্যিক কারণ স্থির বস্তুকে গতিশীল করতে পারে বলবিজ্ঞানে তাকে বল বলা হয় । এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তড়িৎ-কোশের তড়িতাধান চালনা করার ক্ষমতাকে বলা হয় তার 'তড়িচ্চালক বল' । যার প্রভাবে বা যে কারণে তড়িৎ-বর্তনীর কোনো অংশে রাসায়নিক কিংবা অন্য কোনো রকম ...

তড়িৎ-বিভব এবং বিভব-প্রভেদ

কোনো তড়িৎগ্রস্থ বস্তুর তড়িৎ-বিভব বলতে ওই বস্তুর এমন এক তড়িৎ-অবস্থা বোঝায়, যার দ্বারা বোঝা যায় ওই বস্তু অন্য কোনো বস্তুকে তড়িৎ দেবে কিংবা অন্য কোনো বস্তু থেকে তড়িৎ নেবে । অসীম দুরত্ব থেকে একক ধনাত্মক আধানকে তড়িৎ ক্ষেত্রের কোনো বিন্দুতে আনতে যে ...

তড়িতাধানের প্রবাহ - তড়িৎপ্রবাহ

কোনো পরিবাহী দিয়ে তড়িতাধানের প্রবাহ হলে তাকে তড়িৎপ্রবাহ বলা হয় । কিন্তু আধান ধনাত্মক ও ঋণাত্মক উভয় প্রকার হতে পারে । সুতরাং, কোন প্রকার আধানের প্রবাহ হলে তড়িৎপ্রবাহের সৃষ্টি হয় তা বোঝা দরকার । প্রচলিত নিয়ম হল, পরিবাহী দিয়ে ধনাত্মক আধানের প্রবাহ হলে ...