সাধারণ তুলা যন্ত্র

Submitted by arpita pramanik on Tue, 03/20/2018 - 13:09

সাধারণ তুলা যন্ত্র (Common Balance)

সাধারণ তুলাযন্ত্রের সাহায্যে কোনো বস্তুর ভর পরিমাপ করা হয় । মুদির দোকানে পণ্য-সামগ্রী মাপার জন্য যে দাঁড়িপাল্লা ব্যবহার করা হয়ে থাকে সেগুলিই সাধারণ তুলাযন্ত্রের উদাহরণ । বর্তমানে অবশ্য ইলেক্ট্রনিক মাপ যন্ত্রের ব্যবহার ক্রমশঃ বৃদ্ধি হচ্ছে । 

সাধারণ তুলা যন্ত্রের ভর পরিমাপের নীতি : তুলাযন্ত্রকে নির্ভুল করে বাম দিকের তুলাপাত্রে পরিমেয় বস্তু এবং ডানদিকের তুলাপাত্রে প্রয়োজনীয় balance বাটখারা রাখা হয় । AB তুলাদণ্ডের A ও B বিন্দুতে বস্তু ও বাটখারার ওজন ক্রিয়াশীল, আর O হল তুলাদণ্ডের আলম্ব । তুলাদণ্ড অনুভূমিক হলে বলবিদ্যার সূত্রানুসারে বস্তুর ওজন x AO = বাটখারার ওজন x BO । যেহেতু AO = BO, এতএব বস্তুর ওজন = বাটখারার ওজন । অর্থাৎ, বস্তুর ভর = বাটখারার ভর । বাটখারার ওপর লেখা ওজন সংখ্যা পাঠ করে বস্তুর ওজন প্রকাশ করা হয় ।

ভালো তুলাযন্ত্রের বৈশিষ্ট্য সমূহ :

(1) তুলাযন্ত্রটি সুবেদী হবে অর্থাৎ, তুলাযন্ত্রটি দুই তুলা পাত্রে রাখা ভরের সূক্ষ্ম পার্থক্য নির্দেশ করতে সমর্থ হবে । তুলাযন্ত্রকে সুবেদী করা যায় –

(a) তুলাদন্ডকে লম্বা ও হালকা করে ।

(b) তুলা পাত্র গুলিকে হালকা করে ।

(c) তুলাদন্ডের আলম্ব ও ভারকেন্দ্রের মধ্যে দূরত্ব কম করে এবং

(d) সূচক লম্বা করে ।

(2) তুলাযন্ত্রটি নির্ভুল হবে অর্থাৎ, তুলাপাত্র দুটি খালি থাকা অবস্থায় তুলাদন্ডটি অনুভূমিক হবে ।

(3) তুলাযন্ত্রটি সুস্থিত হবে অর্থাৎ, ভর পরিমাপের সময়, তুলাদন্ড দুলতে শুরু করলে দ্রুত স্থির হবে ।

(4) তুলাযন্ত্রটি দৃঢ় হবে অর্থাৎ, যন্ত্রের বিভিন্ন অংশ মজবুত হবে ।

সাধারণ তুলাযন্ত্রে ভর পরিমাপের জন্য একটি আলাদা বাক্সে বাটখারা রাখা থাকে । বাটখারা গুলির ভর 1 : 2 : 2 : 5 এই অনুপাতে রাখা হয় । ফলে নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে যে-কোনো ভর সবচেয়ে কম সংখ্যক বাটখারা ব্যবহার করে পরিমাপ করা সম্ভব হয় ।

একটি সাধারণ তুলাযন্ত্রের তুলাদণ্ডের দুই বাহুর দৈর্ঘ্য সমান, কিন্তু তুলাপাত্র দুটির ভর আলাদা । এরকম সাধারণ তুলাযন্ত্রের সাহায্যে কোনো বস্তুর সঠিক ভর কীভাবে নির্ণয় করা হয় ?

ধরা যাক তুলাযন্ত্রটির বাম ও ডানদিকের ভর যথাক্রমে M1 ও M2 এবং বস্তুর প্রকৃত ভর m । বস্তুটিকে বাম পাত্রে রেখে, ডান পাত্রে m1 ভরের বাটখারা চাপালে তুলাদণ্ড অনুভূমিক হয় ।

[tex] \therefore {M_1} + m = {M_2} + {m_1}[/tex]      ......(1)

আবার বস্তুটিকে ডান পাত্রে রাখলে, এবং বাম পাত্রে m2 ভরের বাটখারা চাপালে তুলাদণ্ড অনুভূমিক হয় । 

[tex]\therefore {M_1} + {m_2} = {M_2} + m[/tex]      ......(2)

(1) নং -  (2) নং করে পাওয়া যায়, [tex]m - {m_2} = {m_1} - m[/tex]

বা [tex]2m = {m_1} + {m_2}[/tex]

বা [tex]m = \frac{{{m_1} + {m_2}}}{2}[/tex]

একটি সাধারণ তুলাযন্ত্রের তুলাদণ্ডের দুই বাহুর দৈর্ঘ্য অসমান, কিন্তু তুলাপাত্র দুটির ভর সমান । এরকম সাধারণ তুলাযন্ত্রের সাহায্যে কোনো বস্তুর সঠিক ভর কীভাবে নির্ণয় করা হয় ?

ধরা যাক তুলাযন্ত্রটির বামদিক ও ডানদিকের বাহুর দৈর্ঘ্য যথাক্রমে x ও y এবং বস্তুর প্রকৃত ভর m  ।

বস্তুটিকে বাম পাত্রে রাখলে এবং ডানপাত্রে m1 ভরের বাটখারা চাপালে তুলাদণ্ড অনুভূমিক হয় । ওই স্থানের অভিকর্ষজ ত্বরণ g হলে,

[tex]mxg = {m_1}yg[/tex]                      .....(1)

আবার বস্তুটিকে ডানপাত্রে রাখলে এবং বামপাত্রে m2 ভরের বাটখারা চাপালে তুলাদণ্ড অনুভূমিক হয় ।

[tex]\therefore {m_2}xg = myg[/tex]        .......(2)

(1) নং ÷ (2) নং করে পাওয়া যায়,

[tex]\frac{{mxg}}{{{m_2}xg}} = \frac{{{m_1}yg}}{{myg}}[/tex] 

বা, [tex]\frac{m}{{{m_2}}} = \frac{{{m_1}}}{m}[/tex]

বা, [tex]{m^2} = {m_1}{m_2}[/tex]      বা, [tex]m = \sqrt {{m_1}{m_2}} [/tex]  

*****

Comments

Related Items

প্রেসার কুকার (Pressure Cooker)

প্রেসার কুকার যন্ত্রে জলীয় বাষ্পের চাপ বাড়িয়ে 100°C এর বেশি উষ্ণতায় জলকে ফোটানো হয় । ফলে বেশি উষ্ণতায় খাদ্যদ্রব্য অল্পসময়ের মধ্যে সুসিদ্ধ হয় । অ্যালুমিনিয়াম বা স্টিলের সংকর ধাতু দিয়ে তৈরি শক্ত একটি পাত্র প্রেসার কুকার তৈরীর জন্য ব্যবহার করা হয় যাতে 2 বায়ুমন্ডল চাপের

অ্যাসিড, ক্ষারক ও লবণ

সালফিউরিক অ্যাসিড (H2SO4), নাইট্রিক অ্যাসিড (HNO3), হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড (HCL), সোডিয়াম হাইড্রক্সাইড (NaOH), পটাশিয়াম হাইড্রক্সাইড (KOH), ম্যাগনেসিয়াম সালফেট (MgSO4), সোডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl)

দ্রবণ (Solution)

যে পদার্থ দ্রবীভূত হয় তাকে দ্রাব বলে এবং যার মধ্যে দ্রাব দ্রবীভূত হয় তাকে বলা হয় দ্রাবক । দ্রাব এবং দ্রাবক এর সমসত্ব মিশ্রণ হল দ্রবণ । দ্রবণের দুটি অংশে থাকে --- দ্রাব (Solute) এবং দ্রাবক (Solvent) । অর্থাৎ দ্রবণ = দ্রাব + দ্রাবক

শব্দ বিস্তারের জন্য মাধ্যমের প্রয়োজন হয়

শব্দের উৎস থেকে উৎপন্ন শব্দ বায়ু মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আমাদের কানে এসে পৌঁছলে মস্তিষ্কে এক রকম অনুভূতি সৃষ্টি করে । তখন আমরা শব্দ শুনতে পাই । বায়ু মাধ্যম না থাকলে শব্দ আমাদের কানে পৌঁছতে পারত না । ফলে আমরা শব্দ শুনতে পেতাম না । কঠিন মাধ্যমের মধ্য দিয়ে শব্দের বিস্তার ...

পদার্থের অবস্থার পরিবর্তন

পদার্থ কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় এই তিন অবস্থায় থাকতে পারে । তাপ প্রয়োগ করলে পদার্থের অবস্থার পরিবর্তন হয় । তাপ প্রয়োগে কঠিন পদার্থ প্রথমে তরল এবং পরে গ্যাসীয় অবস্থায় পরিবর্তিত হয় আবার তাপ নিষ্কাশনে গ্যাসীয় পদার্থ প্রথমে তরল এবং পরে কঠিন অবস্থায় রূপান্তরিত হয় ।