শক্তি ও যান্ত্রিক শক্তি

Submitted by arpita pramanik on Thu, 10/08/2020 - 21:21

শক্তি ও যান্ত্রিক শক্তি (Energy and Mechanical Energy) :

শক্তি (Energy)

কোন বস্তুর কার্য করার সামর্থ্যকে শক্তি বলে। বিশেষ অবস্থায় কোন বস্তু কতখানি কার্য করতে পারে তাই দিয়ে বস্তুটির শক্তি পরিমাপ করা হয় । 

শক্তির পরিমাণ = কৃতকার্য  =  প্রযুক্ত বল × বলের প্রয়োগ-বিন্দু সরণ

কোন বস্তুর উপর শক্তি প্রয়োগ করলে বস্তটি কাজ করার সামর্থ্য লাভ করে এবং কার্য করে । সেইজন্য বস্তুর শক্তি এবং কার্য একই ধরনের রাশি । তাই উভয়কে একই এককে প্রকাশ করা হয় । কার্যের মত শক্তিও একটি স্কেলার রাশি । CGS পদ্ধতিতে শক্তির পরম একক হল আর্গ (Erg) এবং SI  পদ্ধতিতে শক্তির পরম একক হল হল নিউটন-মিটার বা জুল (Joule) ।

যান্ত্রিক শক্তি (Mechanical Energy)

কোন বস্তু তার গতি, স্থিতি বা আকৃতির পরিবর্তনের জন্য অথবা একত্রিত ভাবে তিনটির জন্য যে শক্তি লাভ করে তাকে বস্তুটির যান্ত্রিক শক্তি বলে । অন্যভাবে বলা যায় কোন বস্তুর যান্ত্রিক কার্য করার সামর্থ্যকে তার যান্ত্রিক শক্তি বলে ।  যান্ত্রিক শক্তিকে দু'ভাগে ভাগ করা যায় -

  1. গতিশক্তি (Kinetic Energy)
  2. স্থিতি শক্তি (Potential Energy)

 

1. গতিশক্তি (Kinetic Energy)

 কোন গতিশীল বস্তু তার গতির জন্য কাজ করার যে সামর্থ্য বা শক্তি লাভ করে সেই শক্তিকে বস্তুটির গতিশক্তি বলে । বাইরে থেকে বলপ্রয়োগ করে কোন গতিশীল বস্তুকে থামালে বস্তুটি স্থির অবস্থায় আসার আগে পর্যন্ত ঐ বলের বিরুদ্ধে মোট যে পরিমান কার্য করে তাই দিয়ে বস্তুটির গতিশক্তি নির্ণয় করা হয় ।

যদি কোন বস্তুর ভর m এবং বেগ v হয় তাহলে --

বস্তুর গতিশক্তি  =  ½ × ভর × (বেগ)2

= ½ mv2

 

2. স্থিতি শক্তি (Potential Energy)

কোন বস্তু তার স্বাভাবিক অবস্থান বা আকৃতির পরিবর্তনের জন্য কাজ করার যে সামর্থ্য বা শক্তি লাভ করে তাকে ঐ বস্তুর স্থিতি শক্তি বলে । পরিবর্তিত অবস্থান বা আকৃতি থেকে তার স্বাভাবিক অবস্থান বা আকৃতিতে ফিরে আসার সময় বস্তু যে পরিমাণ কার্যকরে তাই দিয়ে বস্তুটির স্থিতি শক্তি পরিমাপ করা হয় ।

মনে করি m বিশিষ্ট কোন বস্তুকে ভূপৃষ্ঠ থেকে h উচ্চতায় তোলা হলো বস্তুটিকে পৃথিবীর অভিকর্ষ বলের বিরুদ্ধে তুলতে যে পরিমান কার্য করতে হয় তার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি বস্তুটির মধ্যে স্থিতি শক্তি রূপে সঞ্চিত হয়

এখন বস্তুর উপর ক্রিয়াশীল বল  = বস্তুর ভর  = mg এবং সরণ = h

∴ mg বলের বিরুদ্ধে বস্তুটিকে h উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য কৃতকার্য =বল × সরণ = mg × h

সুতরাং বস্তুটির স্থিতিশক্তি = m.g.h 

অর্থাৎ স্থিতিশক্তি=  বস্তুর ভর × অভিকর্ষজ ত্বরণ × উচ্চতা

 

স্থিতিশক্তি এবং গতিশক্তির পার্থক্য

Difference between Potential and Kinetic energy

স্থিতিশক্তি গতিশক্তি
কোন বস্তুকে তার স্বাভাবিক অবস্থান থেকে পারিপার্শ্বিকের তুলনায় একটি বিশেষ অবস্থানে আনলে বস্তুটি কার্য করার যে সামর্থ্য বা শক্তি লাভ করে তাকে বস্তুটি স্থিতিশক্তি বলে । গতিশীল অবস্থায় থাকার জন্য কোন বস্তু কার্য করার যে সামর্থ্য বা শক্তি লাভ করে তাকে বস্তুটির গতিশক্তি বলে ।
একটি বিশেষ অবস্থান বা আকৃতিগত পরিবর্তনের জন্য বস্তুর মধ্যে স্থিতি শক্তি সঞ্চিত থাকে । গতির জন্য বস্তুর মধ্যে গতি শক্তি সঞ্চারিত হয় ।
ভূপৃষ্ঠ থেকে যত উপরে তোলা হয় বস্তুটির স্থিতিশক্তি তত বেড়ে যায় । গতিশীল বস্তুর বেগ যত বাড়ে তার গতিশক্তি তত বেড়ে যায় ।
কোন বস্তুর স্থির অবস্থায় থাকলে তার স্মৃতিশক্তি থাকে কিন্তু গতিশক্তি থাকে না । গতিশীল অবস্থায় বস্তুটির গতিশক্তি থাকবেই কিন্তু স্থিতিশক্তি থাকতেও পারে আবার নাও থাকতে পারে ।
বস্তুর স্থিতিশক্তি = mgh, m=  বস্তুর ভর, g= অভিকর্ষজ ত্বরণ, h= ভূপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা । বস্তুর গতিশক্তি = ½ mv2 , m= বস্তুর ভর, v= বস্তুর বেগ ।
স্থিতিশক্তি একটি স্কেলার রাশি এবং স্থিতি শক্তির একক হলো কার্যের একক । বস্তুর গতিশক্তিও স্কেলার রাশি এবং এর একক হলো কার্যের একক ।

*****

Comments

Related Items

পরিমাপ সংক্রান্ত গাণিতিক উদাহরণ

1. D1 ও D2 ঘনত্বের দুটি পদার্থকে সমভরে মেশানো হলে মিশ্রণের ঘনত্ব কত হবে ? 2. দুটি তরলের ঘনত্ব যথাক্রমে 1.2 g/cm3 ও 0.8 g/cm3 । তরল দুটিকে সমভরে মেশানো হলে মিশ্রণের ঘনত্ব কত হবে ?

ঘড়ির সাহায্যে সময় এবং সময়ের ব্যবধান পরিমাপ

ঘড়ির সাহায্যে সময় এবং সময়ের ব্যবধান পরিমাপ করা হয় । প্রাচীনকালে সূর্য ঘড়ি, বালি ঘড়ি, জল ঘড়ি ইত্যাদি ব্যবহার করা হত । বর্তমানে সময় পরিমাপের জন্য দেয়াল ঘড়ি (wall clock), পকেট ঘড়ি, হাত ঘড়ি, ডিজিটাল ঘড়ি, টেবিল ঘড়ি ইত্যাদি ব্যবহার করা ...

সাধারণ তুলা যন্ত্র

সাধারণ তুলাযন্ত্রের সাহায্যে কোনো বস্তুর ভর পরিমাপ করা হয় । মুদির দোকানে পণ্য-সামগ্রী মাপার জন্য যে দাঁড়িপাল্লা ব্যবহার করা হয়ে থাকে সেগুলিই সাধারণ তুলাযন্ত্রের উদাহরণ ।

আয়তন মাপক চোঙ

এটি একটি সমপ্রস্থচ্ছেদ বিশিষ্ট একদিক বদ্ধ লম্বা কাঁচের চোঙ । এই চোঙের বাইরের গায়ে cm3 বা ml (মিলিলিটার) এককে আয়তন নির্দেশক দাগ কাটা থাকে । প্রতি cm3 কে 5 বা 10 টি সমান ভাগে ভাগ করা থাকে ।

গ্রাফ পেপারের সাহায্যে অসম আকৃতির পাত বা ফলকের ক্ষেত্রফল নির্ণয়

অসম আকৃতির পাত বা ফলকের ক্ষেত্রফল কোনো গাণিতিক সূত্র ব্যবহার করে পরিমাপ করা যায় না । এই সমস্ত ক্ষেত্রে গ্রাফ পেপারের সাহায্য নেওয়া হয় । এই সমস্ত ক্ষেত্রে গ্রাফ পেপারের সাহায্য নেওয়া হয় । মিলিমিটার গ্রাফ পেপারের প্রতিটি ঘরের (বর্গক্ষেত্রের ) ক্ষেত্রফল 1 বর্গমিলিমিটার ...