Submitted by avimanyu pramanik on Sun, 07/25/2021 - 09:01

হিমবাহ পৃষ্ঠের প্রকৃতি : ভূবিজ্ঞানী মঙ্কহাউস -এর মতে পার্বত্য বা উপত্যকা হিমবাহের উপরে নানা ধরনের ফাটল দেখা যায় । এই ফাটলগুলি প্রধানত তিন প্রকারের হয় যথা—

(১) বার্গশ্রুন্ড (Bergschrund) : হিমবাহ উঁচু পার্বত্য উপত্যকা বেয়ে নীচের দিকে নেমে আসার সময় হিমবাহ পৃষ্ঠে যে প্রায় উলম্ব গভীর ফাটলের সৃষ্টি হয়, তাকে বার্গশ্রুন্ড বলে । এই ফাটলগুলি হিমবাহ-পৃষ্ঠ থেকে তলদেশ পর্যন্ত প্রসারিত থাকে । বার্গস্রুন্ড কেবলমাত্র গ্রীষ্মকালেই পরিলক্ষিত হয় । বছরের অন্য সময় এইসব ফাটলগুলো পাতলা তুষার দ্বারা ঢেকে যায়, তখন এদের উপস্থিতি ওপর থেকে বোঝা যায় না । এই জন্য কখনো কখনো বার্গস্রুন্ডগুলি পর্বতারোহীদের কাছে চরম বিপদসংকুল হয়ে ওঠে ।

(২) ক্রেভাস (Crevasses) : হিমবাহ যখন উঁচু পার্বত্য উপত্যকা বেয়ে নীচের দিকে নেমে আসতে থাকে, তখন হিমবাহের বিভিন্ন অংশের মধ্যে প্রবাহের গতির তারতম্য ঘটলে হিমবাহপৃষ্ঠে অনেক সময় অসংখ্য তির্যক ও সমান্তরাল ফাটলের সৃষ্টি হয়, তাদের ক্রেভাস বলে । হিমবাহ যদি আগাগোড়া সমান ঢাল বিশিষ্ট অঞ্চল এর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয় তবে ক্রেভাসেস -এর সৃষ্টি হয় না । কিন্তু যখন হিমবাহ উপত্যকার ঢাল বেড়ে যায়, তখন হিমবাহের বিভিন্ন অংশের মধ্যে গতির পার্থক্য ঘটে । ফলে হিমবাহের পৃষ্ঠে টান পড়ে, তখনই ক্রেভাসেসের [Crevasses] সৃষ্টি হয় । ক্রেভাসগুলি পাতলা তুষারে ঢাকা থাকে বলে সহজে এদের অবস্থান বোঝা যায় না । তাই পর্বতারোহীদের ক্ষেত্রে এগুলি বিপদের সম্ভাবনার সৃষ্টি করে ।

(৩) র‍্যাণ্ডক্লুফট (Randkluft) : দিনের বেলা পর্বতগাত্র থেকে বিকিরিত উত্তাপের প্রভাবে পর্বতের দেওয়াল ও হিমবাহের মধ্যে যে ফাঁকের সৃষ্টি হয় তাকে র‍্যাণ্ডক্লুফট বলে । এগুলিও পর্বতারোহীদের পক্ষে বিপজ্জনক ।

*****

Comments

Related Items

নর্মদা নদী (The Narmada)

নর্মদা নদী (The Narmada) : মহাকাল পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ অমরকন্টক থেকে উৎপন্ন হয়ে নর্মদা নদী উত্তর-পশ্চিমে বেঁকে মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্র হয়ে গুজরাটের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিন্ধ্য ও সাতপুরার সংকীর্ণ গিরিখাত অতিক্রম করে

ব্রহ্মপুত্র নদ (The Brahmaputra)

ব্রহ্মপুত্র নদ : তিব্বতের মানস সরোবরের নিকটবর্তী চেমায়ুং-দুং হিমবাহ থেকে সাংপো নামে উৎপন্ন হয়ে নামচাবারওয়া শৃঙ্গের কাছে চুলের কাটার মত বেঁকে অরুণাচল প্রদেশের মধ্য দিয়ে ডিহং নামে ভারতে প্রবেশ করেছে । এর মোট দৈর্ঘ্য ২,৯০০ কিমি, এর মধ্

সিন্ধু নদ (The Indus)

সিন্ধু নদ : সিন্ধু নদ তিব্বতের মানস সরোবরের উত্তরে অবস্থিত সিন-কা-বাব জলধারা থেকে উৎপন্ন হয়ে উত্তর-পশ্চিমে প্রথমে তিব্বতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পরে লাদাখ অঞ্চল দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে । সিন্ধু নদের মোট দৈর্ঘ্য ৩,১৮০ কিমি এবং এর মধ

গঙ্গা নদী (The Ganges)

গঙ্গা নদী : গঙ্গা ভারতের শ্রেষ্ঠ নদী এবং ভারতের দীর্ঘতম নদী । গঙ্গানদীর মোট দৈর্ঘ্য ২৫১০ কিমি এবং এর মধ্যে ২০১৭ কিমি ভারতে প্রবাহিত । কুমায়ুন হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহের গোমুখ তুষার গুহা থেকে ভাগীরথী নামে উৎপন্ন হয়ে সংকীর্ণ গিরিখাতের

ভারতের নদনদী (Rivers of India)

ভারতের নদনদী : ভারতে অসংখ্য নদনদী বিভিন্ন দিকে প্রবাহিত হয়েছে । উৎস, প্রবাহের অঞ্চল, এবং মোহানা অনুসারে ভারতের নদনদীকে প্রধানত দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় । যেমন— (১) উত্তর ভারতের নদী এবং (২) দক্ষিণ ভারতের নদী ।