মালভূমির বৈশিষ্ট্যগুলি কী ? মালভূমি সৃষ্টির কারণগুলি সংক্ষেপে বর্ণনা কর ।

Submitted by avimanyu pramanik on Sun, 12/26/2021 - 09:27

প্রশ্ন:-  মালভূমির বৈশিষ্ট্যগুলি কী ? মালভূমি সৃষ্টির কারণগুলি সংক্ষেপে বর্ণনা কর ।

উত্তর:  সমুদ্র সমতল থেকে ৩০০ মিটার উঁচু, চারপাশে খাড়া ঢাল যুক্ত বিস্তীর্ণ ভূ-ভাগকে মালভূমি বলে ।

মালভূমির বৈশিষ্ট্য :  উচ্চতা ছাড়াও মালভূমির অন্য যেসব উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে সেগুলি হল—

১) বিস্তীর্ণ উচ্চভূমি,

২) যার উপরিভাগ প্রায় সমতল বা কিছুটা তরঙ্গায়িত,

৩) চারদিকে ঢাল বেশ বেশি,

৪) দেখতে অনেকটা টেবিলের মতো বলে, এর আর এক নাম টেবিল ল্যান্ড [Table Land] এবং

৫) উচ্চতা ৩০০ মিটারের বেশি ।

 

ভূপৃষ্ঠে মালভূমি সৃষ্টি হওয়ার তিনটি প্রধান কারণ রয়েছে, যেমন—

১) ভূপৃষ্ঠের ক্ষয়ীভন,

২) ভূ-আন্দোলন ও পাত সঞ্চালন এবং

৩) ভূপৃষ্ঠে লাভা সঞ্চয় ।

১) ভূ-পৃষ্ঠের ক্ষয়ীভবন : দীর্ঘ দিন ধরে নদী, হিমবাহ, সূর্যতাপ কিংবা বায়ুপ্রবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে পার্বত্য অঞ্চল ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে মালভূমিতে পরিণত হয় । যেমন— অ্যাপালেশিয়ান পর্বতমালার অ্যালিঘেনি মালভূমি, মধ্যভারতের বুন্দেলখন্ড ও বাঘেলখন্ড প্রভৃতি মালভূমিগুলি ভূপৃষ্ঠের ক্ষয়ীভবনের ফলে সৃষ্টি হয়েছে ।

২) ভূ-আন্দোলন ও পাত সঞ্চালন : ভূত্বক কয়েকটি গতিশীল পাত বা টেকটনিক প্লেট-এ বিভক্ত । গুরুমন্ডল বা ম্যান্টলের ওপর দিয়ে এইসব গতিশীল পাতগুলির সঞ্চারণশীলতা হল মালভূমি সৃষ্টির অন্যতম কারণ । পাত সঞ্চালনের ফলে ভূমিকম্প আর ভূমিকম্পের ফলে ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি হলে দুটি ভঙ্গিল পর্বতের মধ্যবর্তী অঞ্চল পর্বতবেষ্টিত মালভূমিতে পরিণত হয় । যেমন— তিব্বত মালভূমি । অনেক বিজ্ঞানির মতে, ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্টি হওয়া মালভূমিগুলিকে দু ভাগে বিভক্ত করা যায়, যেমন—

ক) দুটি ভঙ্গিল পর্বতশ্রেণির মধ্যবর্তী মালভূমি, যেমন— তিব্বত মালভূমি। এবং

খ) পর্বত গঠনকালে ভূপৃষ্ঠের চ্যুতির ফলে উৎপন্ন মালভূমি, যেমন— পূর্ব আফ্রিকার বিভিন্ন মালভূমি । তবে এই জাতীয় মালভূমির উচ্চতা স্তূপ পর্বতের তুলনায় কম হয় ।

উদাহরণ: প্রবল ভূমিকম্পের ফলে প্রাচীন গন্ডোয়ানাল্যান্ড ও আঙ্গারাল্যান্ডের মহাদেশীয় পাতগুলি পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে দাক্ষিণাত্য মালভূমি, আরব মালভূমি, ব্রাজিল মালভূমি, আফ্রিকার মালভূমি এবং পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার মালভূমির সৃষ্টি করেছে ।

৩) ভূপৃষ্ঠে লাভা সঞ্চয় : কোনো রকম বিস্ফোরণ ছাড়াই ভূপৃষ্ঠের একাধিক ফাটল বা সুড়ঙ্গপথে ভূগর্ভ থেকে নির্গত লাভা ভূপৃষ্ঠে যুগ যুগ ধরে সঞ্চিত হয়ে লাভা গঠিত মালভূমি সৃষ্টি করে ।

যেমন — দাক্ষিণাত্যের ডেকানট্র্যাপ ।
*****

Comments

Related Items

মরুভূমি অঞ্চলে যান্ত্রিক আবহবিকার সর্বাধিক হয় কেন ?

প্রশ্ন:- মরুভূমি অঞ্চলে যান্ত্রিক আবহবিকার সর্বাধিক হয় কেন ? 

জৈবিক আবহবিকার কাকে বলে ? কীভাবে জৈবিক আবহবিকার সংঘটিত হয় ?

প্রশ্ন:- জৈবিক আবহবিকার কাকে বলে ? কীভাবে জৈবিক আবহবিকার সংঘটিত হয় ?

কীরূপ জলবায়ু অঞ্চলে রাসায়নিক আবহবিকার বেশি ঘটে কারণসহ উল্লেখ কর ।

প্রশ্ন:- কীরূপ জলবায়ু অঞ্চলে রাসায়নিক আবহবিকার বেশি ঘটে কারণসহ উল্লেখ কর

উত্তর:-  বৃষ্টি বহুল উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু অঞ্চলে রাসায়নিক রাসায়নিক আবহবিকার বেশি ঘটে, কারণ:-

আবহবিকার ও ক্ষয়ীভবনের মধ্যে পার্থক্য কী কী ?

প্রশ্ন:- আবহবিকার ও ক্ষয়ীভবনের মধ্যে পার্থক্য কী কী ?

আবহবিকার

ক্ষয়ীভবন

যান্ত্রিক আবহবিকার কোন ধরনের জলবায়ুতে বেশি ঘটে, কারণসহ উল্লেখ কর ।

প্রশ্ন:- যান্ত্রিক আবহবিকার কোন ধরনের জলবায়ুতে বেশি ঘটে, কারণসহ উল্লেখ কর ।

উত্তর :- উষ্ণ মরু অঞ্চল ও শীতল পার্বত্য অঞ্চলে যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রাধান্য দেখা যায়, কারণ:-