Submitted by avimanyu pramanik on Sat, 12/25/2021 - 20:38

প্রশ্ন:- ভঙ্গিল পর্বত (Fold Mountain) কীভাবে সৃষ্টি হয় ?

উত্তর:- পাললিক শিলাস্তরে ভাঁজ পড়ে ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি হয় ।

ভঙ্গিল পর্বত সৃষ্টির কারণ সম্পর্কে নানান মতবাদ প্রচলিত আছে, এদের মধ্যে প্রধান দুটি মতবাদ হল—

(১) মহীখাত তত্ত্ব (Geosyncline Theory) :- মহীখাত তত্ত্ব অনুসারে এখন যেখানে ভঙ্গিল পর্বতগুলো অবস্থান করছে প্রাচীন কালে সেখানে ছিল বিশালাকার গহ্বর, ভূতাত্ত্বিক ভাষায় যার নাম মহীখাত বা অগভীর সমুদ্র । কালক্রমে যুগ যুগ ধরে পলি পড়ে এই সমুদ্রকে প্রায় ভরাট করে ফেলেছিল । ক্রমাগত পলি জমার ফলে ভূ-স্তরে নিম্নমুখী ও পার্শ্বমুখী চাপের সৃষ্টি হয় তার ফলে অগভীর সমুদ্রের সঞ্চিত পলিতে ভাঁজ পড়তে থাকে। পরবর্তী কালে এইসব ভাঁজগুলো দৃঢ়ভাবে সংবদ্ধ ও উঁচু হয়ে ভঙ্গিল পর্বতের [Fold Mountain] সৃষ্টি করেছে।

(২) পাতসঞ্চালন তত্ত্ব [Plate Tectonic Theory]:- পাতসঞ্চালন তত্ত্ব অনুসারে– ভূ-ত্বকের গতিশীল পাতগুলির মধ্যে যেকোনো দুটি পাত যখন পরস্পরের কাছে চলে আসে, তখন ওই দুটিপাতের সংযোগরেখা বরাবর শিলাচ্যুতি ঘটে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয় । ভূমিকম্পের ফলে ভঙ্গিল পর্বত দুভাবে সৃষ্টি হতে পারে, যেমন-

(ক) প্রবল ভূ-আলোড়নের ফলে ভূপৃষ্ঠের কোনো স্থান বসে গেলে বা উঁচু হলে শিলাস্তরে ছোটো ছোটো ভাঁজের সৃষ্টি হয় । পরবর্তীকালে ভূ-আলোড়ন যতই বাড়ে, ভাঁজগুলো ততই বড়ো ও উঁচু হয়ে পরস্পরের কাছে চলে আসে এবং ভঙ্গিল পর্বতের [Fold Mountain] সৃষ্টি করে ।

(খ) প্রচন্ড পার্শ্বচাপের ফলেও শিলাস্তরে ভাঁজ সৃষ্টি হয় । পার্শ্ব চাপ বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিলাস্তরের এই ভাঁজগুলো ক্রমশ বড়ো ও উঁচু হয়ে ভঙ্গিল পর্বত সৃষ্টি করতে পারে ।

*****

Comments

Related Items

সমুদ্রস্রোত (Ocean Currents)

সমুদ্রস্রোত (Ocean Currents) : সমুদ্রের জলরাশি নিয়মিতভাবে, নির্দিষ্ট দিকে একস্থান থেকে অন্যস্থানে প্রবাহিত হয় । সমুদ্রজলের এই প্রবাহকে সমুদ্রস্রোত বলে । সমুদ্রস্রোত সাধারণত একমুখী হয় । বায়ুপ্রবাহ দ্বারা তাড়িত হয়ে সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি হয় বলে এর গতিব

বারিমন্ডল (Hydrosphere)

বারিমন্ডল (Hydrosphere) : সৃষ্টির প্রথম অবস্থায় পৃথিবী ছিল এক উত্তপ্ত জ্বলন্ত মণ্ডল । ধীরে ধীরে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে তরল অবস্থায় আসে এবং অবিরাম তাপ বিকিরণ করে পৃথিবী ক্রমশ শীতল ও সংকুচিত হয় । আর সংকোচনের ফলে ভূপৃষ্ঠের গায়ে উঁচুনীচু আবরণের সৃষ্টি হয় । এই সম

পৃথিবীর জলবায়ু অঞ্চল (Major climatic regions of the world)

পৃথিবীর জলবায়ু অঞ্চল (Major climatic regions of the world) : পৃথিবীর যে সকল অঞ্চলে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে মোটামুটি একই ধরনের বা সমধর্মী জলবায়ুগত বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়, সেই সকল অঞ্চলকে এক-একটি জলবায়ু অঞ্চল বলা হয় । পৃথিবীর মুখ্য জলবায়ু অঞ্চলগুলি হল —

বিভিন্ন প্রকারের বৃষ্টিপাত (Types of Rainfall)

বিভিন্ন প্রকারের বৃষ্টিপাত (Types of Rainfall) : উৎপত্তির কারণ ও বৈশিষ্ট্যের পার্থক্য অনুসারে বৃষ্টিপাতকে সাধারণত তিন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়, যথা:- (১) পরিচলন বৃষ্টিপাত, (২) শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত এবং (৩) ঘূর্ণবাত বৃষ্টিপাত ।

অধঃক্ষেপণ (Precipitation)

অধঃক্ষেপণ (Precipitation) : সূর্যের উত্তাপে ভূপৃষ্ঠের সমুদ্র, হ্রদ, নদী, পুকুর, খাল, বিল প্রভৃতি জলরাশি থেকে জল জলীয়বাষ্পে পরিণত হয় । জলীয়বাষ্পপূর্ণ বাতাস হাল্কা হওয়ার দরুন ঊর্ধগামী হয় । উপরের বায়ুমণ্ডলের প্রবল শৈত্যের সংস্পর্শে এলে ঘনিভবনের ফলে জলীয়বাষ