বর্জ্য পদার্থের প্রকারভেদ (Types of waste)

Submitted by avimanyu pramanik on Wed, 10/27/2021 - 08:39

বর্জ্য পদার্থের প্রকারভেদ (Types of waste) : বিভিন্ন কারণে পরিবেশে নানা প্রকারের বর্জ্য উৎপন্ন হয়ে থাকে । বর্জ্য পদার্থ তিন প্রকার, যেমন— (ক) কঠিন বর্জ্য, (খ) তরল বর্জ্য ও (গ) গ্যাসীয় বর্জ্য ।

(ক) কঠিন বর্জ্য (Solid waste) : অব্যবহার্য ও অপ্রয়োজনীয় কঠিন পদার্থগুলিকে কঠিন বর্জ্য বলে । গৃহস্থালির আবর্জনা, পৌর আবর্জনা, ভাঙ্গা প্লাস্টিক, ভাঙ্গা কাচ, ধাতব টুকরো, ওষুধের প্যাকেট, ইঞ্জেকশন সিরিঞ্জ প্রভৃতি হল কঠিন বর্জ্য । এই প্রকার বর্জ্যে ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান বেশি থাকলে তা মাটি ও বাস্তুতন্ত্রের সাংঘাতিক ক্ষতি করে ।

(খ) তরল বর্জ্য (Liquid waste) : ব্যবহৃত তরল পদার্থের অপ্রয়োজনীয় ও ক্ষতিকর অবশিষ্টাংশকে তরল বর্জ্য বলে । বর্জ্যজল, গ্রিজ, স্নেহপদার্থ, রান্নার পোড়া তেল, স্নান ও শৌচাগারের জল, প্রাণীর মলমূত্র, সাবান ও ডিটারজেন্ট মিশ্রিত জল ইত্যাদি হল উল্লেখযোগ্য তরল বর্জ্য । এছাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্র ও পারমাণবিককেন্দ্র থেকে তেজস্ক্রিয় তরল বর্জ্য পদার্থ নির্গত হয় ।

(গ) গ্যাসীয় বর্জ্য (Gaseous waste) : গ্যাস রূপে নির্গত দূষিত বর্জ্যকে গ্যাসীয় বর্জ্য বলে । কলকারখানা, বিদ্যুৎ শক্তিকেন্দ্র, গাড়ির ইঞ্জিন প্রভৃতির ধোঁয়ায় নিঃসৃত কার্বন ডাইঅক্সাইড, সালফার ডাইঅক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড ও অন্যান্য গ্যাসের মিশ্রিত দূষিত কণা গ্যাসীয় বর্জ্য হিসাবে অতি সহজেই বায়ুদূষণ ঘটায় ।

বিষক্রিয়ার ওপর ভিত্তি করে বর্জ্য পদার্থকে দুভাগে ভাগ করা যায় । যেমন — (ক) বিষাক্ত বর্জ্য ও বিষহীন বর্জ্য ।

(ক) বিষাক্ত বর্জ্য (Toxic waste) : যে সকল বর্জ্য মানুষ ও প্রাণীর স্বাস্থ্যের চরম ক্ষতি করে, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে, তাদের বিষাক্ত বর্জ্য বলে । এই প্রকার বর্জ্যগুলি পরিবেশে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির ইঙ্গিত দেয়, তাই এই বর্জ্যগুলিকে বিপজ্জনক বর্জ্যও বলা হয় । বিষাক্ত বর্জ্যগুলি কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় প্রকৃতির হয়ে থাকে । যন্ত্রশিল্প, নির্মাণশিল্প, মোটরগাড়ি নির্মাণ, পরীক্ষাগার, হাসপাতাল প্রভৃতি ক্ষেত্র থেকে বিষাক্ত বর্জ্য নির্গত হয় ।

(খ) বিষহীন বর্জ্য (Non-toxic waste) : যে বর্জ্যগুলিকে সঠিকভাবে বিয়োজিত করলে পরিবেশের ওপর অনেক কম ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে, তাদের বিষহীন বর্জ্য বলে । অফিস, রেস্টুরেন্ট এবং স্কুল-কলেজের বর্জ্য, পরিতক্ত খাবার, ফলের খোসা, শাকসবজি, ছেঁড়া কাগজ, ছেঁড়া কাপড়  প্রভৃতি বিষহীন বর্জ্য ।

*****

Comments

Related Items

নর্মদা নদী (The Narmada)

নর্মদা নদী (The Narmada) : মহাকাল পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ অমরকন্টক থেকে উৎপন্ন হয়ে নর্মদা নদী উত্তর-পশ্চিমে বেঁকে মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্র হয়ে গুজরাটের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিন্ধ্য ও সাতপুরার সংকীর্ণ গিরিখাত অতিক্রম করে

ব্রহ্মপুত্র নদ (The Brahmaputra)

ব্রহ্মপুত্র নদ : তিব্বতের মানস সরোবরের নিকটবর্তী চেমায়ুং-দুং হিমবাহ থেকে সাংপো নামে উৎপন্ন হয়ে নামচাবারওয়া শৃঙ্গের কাছে চুলের কাটার মত বেঁকে অরুণাচল প্রদেশের মধ্য দিয়ে ডিহং নামে ভারতে প্রবেশ করেছে । এর মোট দৈর্ঘ্য ২,৯০০ কিমি, এর মধ্

সিন্ধু নদ (The Indus)

সিন্ধু নদ : সিন্ধু নদ তিব্বতের মানস সরোবরের উত্তরে অবস্থিত সিন-কা-বাব জলধারা থেকে উৎপন্ন হয়ে উত্তর-পশ্চিমে প্রথমে তিব্বতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পরে লাদাখ অঞ্চল দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে । সিন্ধু নদের মোট দৈর্ঘ্য ৩,১৮০ কিমি এবং এর মধ

গঙ্গা নদী (The Ganges)

গঙ্গা নদী : গঙ্গা ভারতের শ্রেষ্ঠ নদী এবং ভারতের দীর্ঘতম নদী । গঙ্গানদীর মোট দৈর্ঘ্য ২৫১০ কিমি এবং এর মধ্যে ২০১৭ কিমি ভারতে প্রবাহিত । কুমায়ুন হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহের গোমুখ তুষার গুহা থেকে ভাগীরথী নামে উৎপন্ন হয়ে সংকীর্ণ গিরিখাতের

ভারতের নদনদী (Rivers of India)

ভারতের নদনদী : ভারতে অসংখ্য নদনদী বিভিন্ন দিকে প্রবাহিত হয়েছে । উৎস, প্রবাহের অঞ্চল, এবং মোহানা অনুসারে ভারতের নদনদীকে প্রধানত দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় । যেমন— (১) উত্তর ভারতের নদী এবং (২) দক্ষিণ ভারতের নদী ।