ট্রপোস্ফিয়ার বা ক্ষুব্ধমন্ডল (Troposphere)

Submitted by avimanyu pramanik on Wed, 08/04/2021 - 12:45

ট্রপোস্ফিয়ার বা ক্ষুব্ধমন্ডল (Troposphere) : গ্রিক শব্দ ট্রপো (Tropo) কথার অর্থ হল পরিবর্তন (Change) এবং দৈনন্দিন আবহাওয়ায় আমরা যেরকম বিভিন্ন পরিবর্তন অনুভব করি, এই বায়ুস্তরেও সে ধরনের পরিবর্তন দেখা যায় । বায়ুমণ্ডলের একেবারে নীচের স্তরে অবাধে তাপীয় মিশ্রণ ঘটে বলে, একে ট্রপোস্ফিয়ার বলে । বায়ুমণ্ডলের এই সর্বনিম্ন স্তরটি ভূপৃষ্ঠ থেকে নিরক্ষীয় অঞ্চলে ১৮ কিমি. এবং মেরু অঞ্চলে ৮ কিমি. উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত । বায়ুমণ্ডলের এই স্তরে বায়ুতে প্রায় ৯০% ধূলিকণা, জলীয় বাষ্প, কুয়াশা, মেঘ প্রভৃতি থাকায় এই স্তরে ঝড়, বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি, বজ্রপাত, তুষারপাত প্রভৃতি ঘটনাগুলি ঘটতে দেখা যায়, এজন্য ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুমণ্ডলের এই স্তরকে 'ক্ষুব্ধ মন্ডল' বলে । বায়ুমণ্ডলের এই স্তরে আমরা বাস করি ।

ট্রপোপজ (Tropopause) : ট্রপোস্ফিয়ারের উর্ধ্বসীমাকে বলে ট্রপোপজ । এই স্তরে বায়ুর উষ্ণতা একই রকম থাকে বলে একে সমতাপ অঞ্চল বলে ।

বৈশিষ্ট্য :

(i) বায়ুমণ্ডলের এই স্তরে ভূপৃষ্ঠ থেকে যতই উপরে ওঠা যায় ততই তাপ মাত্রা কমতে থাকে । প্রতি কিলোমিটারে ৬.৪° বা প্রায় প্রতি ১৬৫ মিটার উচ্চতার জন্য ১° সেন্টিগ্রেড করে তাপ হ্রাস পায়, একে উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার বা 'Normal Laps rate' বলে । ভূ-পৃষ্ঠের ওপরে ১০ — ১৩ কিলোমিটার উচ্চতায় বায়ুর তাপ এই হারে কমতে থাকে । মধ্য অক্ষাংশে (Middle Latitude) ট্রপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্ব সীমায় বায়ুমণ্ডলের উত্তাপ -৭৫° সেন্টিগ্রেড থেকে -৬০° সেন্টিগ্রেড হয় ।

(ii) বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরের মধ্যে ট্রপোস্ফিয়ারই হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তর । বায়ুমণ্ডলের মোট গ্যাসীয় ভরের প্রায় ৮০% ধারণ করে ট্রপোস্ফিয়ার । এজন্য এখানে বায়ুরচাপ সবচেয়ে বেশি ।

(iii) ট্রপোস্ফিয়ারের ওপরের স্তরে জলীয়বাষ্প বা মেঘ থাকে না বললেই চলে ।

(iv) এই অংশে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বায়ুর চাপ কমতে থাকে । এই স্তরে বায়ুর ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি প্রায় শতকরা ৯০ ভাগ ।

****

Comments

Related Items

মরু অঞ্চলের উদ্ভিদ

মরু অঞ্চলের উদ্ভিদ (Desert plant) : ভারতের যেখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৫০ সেন্টিমিটারের কম এবং উত্তাপ খুব বেশি, সেখানে জলের অভাবে ক্যাকটাস বা কাঁটাজাতীয় গাছ জন্মায় । বাবলা, ফনিমনসা, তেশিরা প্রভৃতি হল ভা

গুল্ম ও তৃণ অঞ্চল

গুল্ম ও তৃণ অঞ্চল (Shrub and Grass Areas) : ভারতের যেখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৫০ সেন্টিমিটার থেকে ১০০ সেন্টিমিটার, সেখানে বড় গাছ না জন্মে তৃণ বা গুল্মের

পর্ণমোচী বৃক্ষের বনভূমি

পর্ণমোচী বৃক্ষের বনভূমি (Deciduous woodland) : ভারতের যেখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাত ১০০ সেন্টিমিটার থেকে ২০০ সেন্টিমিটার, সেখানে পর্ণমোচী বৃক্ষের অরণ্য দেখা যায় । এই সব বৃক্ষ তার পাতাগুলি নির্দিষ্ট সময়ে মোচন করে অর্থাৎ পাতাগুলি ঝরে যায় আবার নতুন পাতা জন্মায়

চিরহরিৎ বৃক্ষের বনভূমি

চিরহরিৎ বৃক্ষের বনভূমি (Evergreen Forest) : ভারতের যে সমস্ত অঞ্চলে বার্ষিক বৃষ্টিপাত ২০০ সেন্টিমিটারের বেশি, সেখানে চিরহরিৎ বৃক্ষের বনভুমি দেখা যায় । অত্যাধিক

হিমালয়ের বনভূমি

হিমালয়ের বনভূমি (Himalayan Forest) : হিমালয়ের বিভিন্ন উচ্চতায় বৃষ্টিপাত ও তাপমাত্রার পার্থক্যের জন্য বিভিন্ন ধরনের বনভূমি দেখতে পাওয়া যায় ।