ক্ষয়জাত পর্বত কাকে বলে ? ক্ষয়জাত পর্বতের সঙ্গে আগ্নেয় পর্বতের কী কী পার্থক্য ?

Submitted by avimanyu pramanik on Sat, 12/25/2021 - 22:47

প্রশ্ন: - ক্ষয়জাত পর্বত কাকে বলে ? ক্ষয়জাত পর্বতের সঙ্গে আগ্নেয় পর্বতের কী কী পার্থক্য ?

ক্ষয়জাত পর্বত: ভঙ্গিল পর্বত, স্তূপ পর্বত ও আগ্নেয় পর্বত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে যে পর্বতের সৃষ্টি হয় তাকে ক্ষয়জাত পর্বত (Relict Mountain) বলে । ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগ বৃষ্টি, নদী, বায়ু, হিমবাহ প্রভৃতি কাজের ফলে প্রতিনিয়ত ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে । এইভাবে, অনেক সময় শক্ত শিলায় গড়া জায়গা কম ক্ষয় পেয়ে আশেপাশে বেশি ক্ষয়ে যাওয়া নরম শিলায় গঠিত জায়গা থেকে আলাদা হয়ে উঁচুতে থেকে যায়, এইভাবে ক্ষয়জাত পর্বত সৃষ্টি হয় । ভূপৃষ্ঠের কোনো স্থানের কম ক্ষয় প্রাপ্ত হওয়া অবশিষ্ট অংশ পর্বতে পরিণত হয় বলে ক্ষয়জাত পর্বতকে অবশিষ্ট পর্বতও (Residual Mountain) বলা হয় ।

উদাহরণ:- স্কটল্যান্ড ও নরওয়ের পর্বতশ্রেণি, ভারতের আরাবল্লী, নীলগিরি, রাজমহল প্রভৃতি পর্বতগুলি ক্ষয়জাত পর্বতের উদাহরণ ।

ক্ষয়জাত পর্বত [Erosional Mountain] ও আগ্নেয় পর্বতের [Volcano] পার্থক্য:-

ক্ষয়জাত পর্বত [Erosional Mountain]

আগ্নেয় পর্বত [Volcano]

(১) ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগের শক্ত শিলায় গঠিত অংশের কম ক্ষয়প্রাপ্ত কোনো স্থান পার্শ্ববর্তী বেশি ক্ষয়ে যাওয়া নরম শিলায় গঠিত স্থান থেকে আলাদা হয়ে উঁচুতে উঠে গেলে ক্ষয়জাত পর্বতের সৃষ্টি হয়।

(১) ভূগর্ভের ম্যাগমা ভূস্তরের ফাটল দিয়ে লাভা রূপে বারংবার বাইরে বেরিয়ে এসে জমাট বেঁধে উঁচু হয়ে শঙ্কুর মতো আকৃতি প্রাপ্ত হলে আগ্নেয় পর্বতের সৃষ্টি হয় ।

(২) ক্রমাগত ক্ষয়ের ফলে ভঙ্গিল পর্বত, স্তূপ পর্বত এবং আগ্নেয় পর্বতগুলি  ক্ষয়জাত পর্বতে রূপান্তরিত হয়।

(২) অগ্নুৎপাতের সময় ভূগর্ভ থেকে উঠে আসা গলিত লাভা জমাট বেঁধে আগ্নেয় পর্বত সৃষ্টি করে।

(৩) ক্ষয়ের ফলে এই পর্বতের মাথা চ্যাপ্টা হয় এবং এই সব পর্বতের শীর্ষদেশে আগ্নেয় পর্বতের মতো গহ্বর থাকে না ।

(৩) আগ্নেয় পর্বতের শিখরে এক বা একাধিক জ্বালামুখ নামে গহ্বর থাকে, যার নলের মতো পথের মাধ্যমে ভূগর্ভের ম্যাগমা স্তরের সঙ্গে যুক্ত থাকে ।

(৪) বহু প্রাচীন পর্বতশ্রেণিই বহু হাজার বছর ধরে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে বর্তমানে ক্ষয়জাত পর্বতে রূপান্তরিত হয়েছে ।

(৪) প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলভাগ এবং সমুদ্রের শৈলশিরার ওপর ভূত্বকের দূর্বল স্থান গুলিতে আগ্নেয় পর্বতের [Volcano] আধিক্য দেখা যায়।

(৫) ক্ষয়জাত পর্বতগুলো হঠাৎ ধ্বংশ হয়ে যায় না ।

(৫) পরবর্তী অগ্নুৎপাতের প্রবল বিস্ফোরণে কোনো কোনো আগ্নেয় পর্বত অনেকাংশে ধ্বংস হয়ে যায়।

*****

Comments

Related Items

ভারতের বর্তমান রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল সমূহ

ভারতের বর্তমান রাজ্য সমূহ (২০২১ সাল পর্যন্ত ) :

১. অন্ধ্রপ্রদেশ : এই রাজ্যের আয়তন হল ১,৬০,২০৫ বর্গ কিমি. ও রাজধানী হল অমরাবতী ।

২. অরুণাচল প্রদেশ : এই রাজ্যের আয়তন হল ৮৩,৭৪৩ বর্গ কিমি. ও রাজধানী হল ইটানগর ।

স্বাধীনতা-উত্তর ভারতের রাজ্যগুলির বিন্যাস

স্বাধীনতা-উত্তর ভারতের রাজ্যগুলির বিন্যাস : প্রায় ১০০ বছর প্রত্যক্ষভাবে ইংরেজ শাসনাধীন থাকার পর ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাস হওয়া ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের 'ভারতের স্বাধীনতা আইন' অনুসারে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই আগস্ট অবিভক্ত ভারত দ্বিখণ্ডিত হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে এব

ভারতের ভৌগলিক অবস্থান

অবস্থান (Location) : ভারত পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণে অবস্থিত একটি দেশ । নিরক্ষরেখার উত্তরে অর্থাৎ উত্তর গোলার্ধে এবং মূলমধ্যরেখার পূর্বে অর্থাৎ পূর্ব গোলার্ধে অবস্থিত অর্থাৎ ভারত উত্তর-পূর্ব গোলার্ধে অবস্থিত । ভারতের মূল ভূখণ্ড দক্ষি

ভারত (India)

ভারত :- প্রাচীন পারসিক লিপিতে 'সপ্ত সিন্ধু' কে বলা হয়েছে হপ্ত হিন্দু । সিন্ধু তীরবর্তী বসবাসকারী মানুষকে বিদেশীরা হিন্দু বলত এবং তার থেকেই হিন্দুস্থান কথাটি এসেছে । প্রাচীন পারসি শব্দ হিন্দুস (Hindus) থেকে উৎপন্ন ইণ্ডাস (Indus) থেকে ইণ্ডিয়া (INDIA) নামট

ভাগীরথী-হুগলী নদীর ওপর বর্জ্যের প্রভাব (Effects of waste disposal on Bhagirathi-Hooghly river)

ভাগীরথী-হুগলী নদীর ওপর বর্জ্যের প্রভাব (Effects of waste disposal on Bhagirathi-Hooghly river) : প্রায় 2500 কিমি দীর্ঘ গঙ্গা নদী ভারতের জীবন রেখা । গঙ্গা নদীর পার্শ্ববর্তী কলকারখানার বর্জ্য, পৌরসভার বর্জ্য, কৃষি ক্ষেত্রের কীটনাশক বাহিত জল ইত্যাদি এই নদ