আবহবিকার ও ক্ষয়ীভবনের মধ্যে পার্থক্য কী কী ?

Submitted by avimanyu pramanik on Mon, 12/27/2021 - 10:37

প্রশ্ন:- আবহবিকার ও ক্ষয়ীভবনের মধ্যে পার্থক্য কী কী ?

আবহবিকার

ক্ষয়ীভবন

(১) আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদান যথা- রোদ, বৃষ্টিপাত, উষ্ণতা, আর্দ্রতা প্রভৃতির প্রভাবে শিলার ওপরের অংশের যে পরিবর্তন হয় তাকে আবহবিকার বলে । এই পরিবর্তন ভৌত বা রাসায়নিক যে কোনও রকমের হতে পারে ।

(১) প্রবাহমান নানা প্রাকৃতিক শক্তি, যথা- নদীপ্রবাহ, জলস্রোত, বায়ুপ্রবাহ, হিমবাহ প্রভৃতির মাধ্যমে ভেঙে যাওয়া শিলার টূকরো, বালি, মাটি ইত্যাদির অপসারণকে ক্ষয়ীভবন বলে ।

(২) বায়ুর উপাদানগুলি অর্থাৎ উষ্ণতা, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত, তুষারপাত, বিভিন্ন গ্যাসীয় পদার্থ ইত্যাদির সন্মিলিত প্রভাবে আবহবিকার প্রক্রিয়া ঘটে থাকে ।

(২) প্রবাহমান নানা প্রাকৃতিক শক্তি, যথা- নদীপ্রবাহ, জলস্রোত, বায়ুপ্রবাহ, হিমবাহ প্রভৃতির মাধ্যমে ক্ষয়ীভবন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় ।

(৩) আবহবিকারের ফলে চূর্ণীকৃত শিলার টুকরো মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাব ছাড়া অপসারিত বা স্থানান্তরিত হয় না, নিজের স্থানেই অবস্থান করে । আবহবিকারের সঙ্গে অপসারণ যুক্ত নয় ।

(৩) ক্ষয়ীভবনের ফলে চূর্ণীকৃত শিলা অন্যত্র স্থানান্তরিত হয়, একস্থানে থাকে না । অর্থাৎ ক্ষয়ীভবনের সঙ্গে অপসারণ যুক্ত ।

(৪) আবহবিকারের ফলে মূল শিলার ভিতরের স্তর উন্মুক্ত হয়ে পড়ে না ।

(৪) ক্ষয়ীভবনের ফলে মূল শিলার ভিতরের স্তর উন্মুক্ত হয়ে পড়ে ।

(৫) আবহবিকার একটি সৃজনমুলক প্রক্রিয়া যা খুব ধীরে ধীরে ঘটে ।

(৫) ক্ষয়ীভবন একটি ধ্বংসাত্মক প্রক্রিয়া যা খুব তাড়া তাড়ি সম্পন্ন হয় ।

(৬) আবহবিকারের ফলে শিলার মূল বৈশিষ্ট্য, যেমন- শিলার গঠন, খনিজের বিন্যাস-প্রকৃতি ইত্যাদির ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে ।

(৬) ক্ষয়ীভবনের ফলে ভূমিরূপের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটলেও শিলার রাসায়নিক পরিবর্তন যেমন- গঠন, খনিজের বিন্যাস-প্রকৃতি ইত্যাদির পরিবর্তন ঘটে না ।

(৭) আবহবিকার এক স্থির পদ্ধতি (static process), বিয়োজিত শিলাচূর্ণ কাছেই পড়ে থাকে; স্থানচ্যুত হতে পারে মাত্র । (৭) ক্ষয়ীভবন হল এক গতিশীল পদ্ধতি (Dynamic process) । ক্ষয়কার্য ও বহনের মাধ্যমে ক্ষয়ীভুত পদার্থ দুরান্তরে অপসারিত হয় ।

*****

Comments

Related Items

নর্মদা নদী (The Narmada)

নর্মদা নদী (The Narmada) : মহাকাল পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ অমরকন্টক থেকে উৎপন্ন হয়ে নর্মদা নদী উত্তর-পশ্চিমে বেঁকে মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্র হয়ে গুজরাটের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিন্ধ্য ও সাতপুরার সংকীর্ণ গিরিখাত অতিক্রম করে

ব্রহ্মপুত্র নদ (The Brahmaputra)

ব্রহ্মপুত্র নদ : তিব্বতের মানস সরোবরের নিকটবর্তী চেমায়ুং-দুং হিমবাহ থেকে সাংপো নামে উৎপন্ন হয়ে নামচাবারওয়া শৃঙ্গের কাছে চুলের কাটার মত বেঁকে অরুণাচল প্রদেশের মধ্য দিয়ে ডিহং নামে ভারতে প্রবেশ করেছে । এর মোট দৈর্ঘ্য ২,৯০০ কিমি, এর মধ্

সিন্ধু নদ (The Indus)

সিন্ধু নদ : সিন্ধু নদ তিব্বতের মানস সরোবরের উত্তরে অবস্থিত সিন-কা-বাব জলধারা থেকে উৎপন্ন হয়ে উত্তর-পশ্চিমে প্রথমে তিব্বতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পরে লাদাখ অঞ্চল দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে । সিন্ধু নদের মোট দৈর্ঘ্য ৩,১৮০ কিমি এবং এর মধ

গঙ্গা নদী (The Ganges)

গঙ্গা নদী : গঙ্গা ভারতের শ্রেষ্ঠ নদী এবং ভারতের দীর্ঘতম নদী । গঙ্গানদীর মোট দৈর্ঘ্য ২৫১০ কিমি এবং এর মধ্যে ২০১৭ কিমি ভারতে প্রবাহিত । কুমায়ুন হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহের গোমুখ তুষার গুহা থেকে ভাগীরথী নামে উৎপন্ন হয়ে সংকীর্ণ গিরিখাতের

ভারতের নদনদী (Rivers of India)

ভারতের নদনদী : ভারতে অসংখ্য নদনদী বিভিন্ন দিকে প্রবাহিত হয়েছে । উৎস, প্রবাহের অঞ্চল, এবং মোহানা অনুসারে ভারতের নদনদীকে প্রধানত দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় । যেমন— (১) উত্তর ভারতের নদী এবং (২) দক্ষিণ ভারতের নদী ।