অগ্নুৎপাতের বৈশিষ্ট্য অনুসারে আগ্নেয় পর্বতের শ্রেণিবিভাগ কর ও আগ্নেয় পর্বতের বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী ?

Submitted by avimanyu pramanik on Sat, 12/25/2021 - 22:38

প্রশ্ন:- অগ্নুৎপাতের বৈশিষ্ট্য অনুসারে আগ্নেয় পর্বতের শ্রেণিবিভাগ কর ও আগ্নেয় পর্বতের বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী ?

উত্তর: অগ্নুৎপাতের বৈশিষ্ট্য অনুসারে আগ্নেয় পর্বতগুলোকে [Volcano] সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা হয়, যথা—

১) সক্রিয় (Active Volcano)- এই ধরনের আগ্নেয়গিরিতে প্রায়ই অগ্নুৎপাত হয় (যেমন, ভিসুভিয়াস) । সক্রিয় আগ্নেয়গিরিকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায় যথা —

(ক) অবিরাম: - এই সব আগ্নেয়গিরিতে অবিরাম অগ্নুৎপাত হয়  (যেমন,  ভিসুভিয়াস) এবং

(খ) সবিরাম- এই সব আগ্নেয়গিরিতে কিছুদিন পর পর অগ্নুৎপাত হয় (যেমন, সিসিলি দ্বীপের স্টোম্বলি) ।

২) সুপ্ত (Dormant Volcano) - যেসব আগ্নেয়গিরিতে বহুকাল অগ্নুৎপাত হয়নি কিন্তু ভবিষ্যতে হওয়ার আশঙ্কা আছে (যেমন- জাপানের ফুজিয়ামা) ।

৩) মৃত [Extinct Volcano]- যেসব আগ্নেয় পর্বতে স্মরণাতিত কাল থেকে কোনো অগ্নুৎপাত হয়নি (যেমন,  মায়ানমার-এর পোপো) ।

আগ্নেয় পর্বতের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যগুলি হল:-

১) অগ্নুৎপাতের সময় ভূগর্ভ থেকে উঠে আসা গলিত লাভা জমাট বেঁধে আগ্নেয় পর্বতের সৃষ্টি করে;

২) সাধারণত আগ্নেয় পর্বতকে দেখতে অনেকটা ত্রিভুজ বা শঙ্কুর মতো হয়;

৩) আগ্নেয় পর্বতের শীর্ষদেশে এক বা একাধিক জ্বালামুখ (Crater) নামে গহ্বর থাকে যা একটি নলের মতো পথের মাধ্যমে ভূগর্ভের ম্যাগমা গহ্বরের সঙ্গে যুক্ত থাকে;

৪) প্রধানত প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলভাগ এবং সমুদ্রের শৈলশিরার ওপর ভূত্বকের দুর্বল স্থানগুলোতে আগ্নেয় পর্বতের আধিক্য দেখা যায়;

৫) অনেক সময় আগ্নেয় পর্বতগুলো গভীর সমুদ্রতল থেকে সঞ্চিত হতে হতে দ্বীপের মতো সমুদ্রের ওপরে উঠে আসে;

৬) কখনও কখনও আগ্নেয় পর্বতগুলোতে লাভাস্তরের মধ্যে ছাই এবং প্রস্তরখন্ড দেখা যায়;

৭) পরবর্তী অগ্নুৎপাতের প্রবল বিস্ফোরণে কোনো কোনো আগ্নেয় পর্বত অনেকাংশে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে যায় (যেমন, ক্রাকাতোয়া আগ্নেয় পর্বতটি ১৯৯৩ সালে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় );

৮) আগ্নেয় পর্বতের ঢাল ও উচ্চতা খুব বেশি হয় না ।

*****

Comments

Related Items

বহিঃধৌত সমভূমি (Outwash plains)

বহিঃধৌত সমভূমি (Outwash plains) : হিমবাহ ও হিমবাহগলিত জলধারার মিলিত সঞ্চয়কার্যের ফলে যে সমস্ত ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, বহিঃধৌত সমভূমি হল তাদের মধ্যে অন্যতম একটি ভূমিরূপ । উচ্চ পর্বতের পাদদেশে হিমবাহ এসে পৌঁছালে তা গলে গিয়ে জলে পরিণত হয়, তখন বরফগলা জলপ্রবাহ

হিমবাহ ও জলধারার মিলিত কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ

হিমবাহ ও জলধারার মিলিত কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ (Landforms of Fluvio-Glacial Deposition) : হিমবাহ অধ্যুষিত নিম্নভূমি এবং পর্বতের পাদদেশে হিমবাহের প্রান্তসীমায় অর্থাৎ হিমরেখার নীচে হিমবাহ ও হিমবাহগলিত জলধারা মিলিতভাবে কিছু ভূমিরূপ গঠন করে । যেমন— (i) বহ

গ্রাবরেখা (Moraine)

গ্রাবরেখা [Moraine] : হিমবাহের সঞ্চয়কাজের ফলে যে সমস্ত ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, গ্রাবরেখা [Moraine] হল তাদের মধ্যে অন্যতম একটি ভূমিরূপ । উচ্চ পার্বত্য অঞ্চল দিয়ে হিমবাহ প্রবাহিত হওয়ার সময় ক্ষয়প্রাপ্ত শিলাখণ্ড, নুড়ি, কাঁকর, বালি প্রভৃতি হিমব

হিমবাহের সঞ্চয়কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ

হিমবাহের সঞ্চয়কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ (Landform produced by Glacial Deposition) : উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে হিমবাহের সঞ্চয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গঠিত হয়, তাকে গ্রাবরেখা (Moraine) বলে । 

****

ফিয়র্ড (Fiord)

ফিয়র্ড (Fiord) : উচ্চ অক্ষাংশীয় অঞ্চলে সমুদ্র উপকূল সংলগ্ন পার্বত্যভূমিতে হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে যে সমস্ত ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, ফিয়র্ড হল এরকম একটি ভূমিরূপ । সমুদ্রোপকূলে হিমবাহ তার উপত্যকাকে এমন গভীরভাবে ক্ষয় করে যে সেই উপত্যকা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকেও নীচ