বহুব্রীহি সমাসের শ্রেণিবিভাগ:-
(ক) সমানাধিকরণ বহুব্রীহি :- যে বহুব্রীহি সমাসে পূর্ব ও পরপদের বিভক্তি একই হয়, তাকে সমানাধিকরণ বহুব্রীহি বলে । যেমন— পক্ব কেশ যার = পক্ককেশ । গৌর অঙ্গ যার = গৌরাঙ্গ । ছিন্ন মুল যার = ছিন্নমূল । নীল কন্ঠ যার = নীলকণ্ঠ । কু আকার যার = কদাকার ।
(খ) ব্যাধিকরণ বহুব্রীহি সমাস :- যে বহুব্রীহি সমাসে পূর্ব ও পরপদে ভিন্ন ভিন্ন বিভক্তি থাকে তাকে ব্যাধিকরণ বহুব্রীহি বলে । যেমন— শূল পাণিতে যার = শূলপাণি । চন্দ্র চূড়ায় যাঁর = চন্দ্রচুড় । রত্ন গর্ভে যার = রত্নগর্ভা ইত্যাদি ।
(গ) মধ্যপদলোপী বহুব্রীহি সমাস :- যে বহুব্রীহি সমাসের ব্যাসবাক্যের মধ্য পদগুলো লোপ পায় তাকে মধ্যপদলোপী বহুব্রীহি সমাস বলে । যেমন— কুম্ভের ন্যায় কর্ণ যার = কুম্ভকর্ণ । বৌ ভাত পরিবেশন করে যে অনুষ্ঠানে = বৌভাত । কমলের ন্যায় অক্ষি যার = কমলাক্ষ । চন্দ্রের মতো আনন যার = চন্দ্রানন ইত্যাদি ।
(ঘ) ব্যতিহার বহুব্রীহি সমাস :- যে বহুব্রীহি সমাসে পরস্পরের মধ্যে একই প্রকার কাজ বোঝায়, তাকে ব্যতিহার বহুব্রীহি সমাস বলে । যেমন— চোখে চোখে যে দেখা = চোখাচোখি । গলায় গলায় যে মিল = গলাগলি । কানে কানে যে কথা = কানাকানি ইত্যাদি ।
(ঙ) সহার্থক বহুব্রীহি সমাস :- যে বহুব্রীহি সমাসে পূর্বপদের সহার্থক বাচক পরপদের সমাস হয় তাকেই সহার্থক বহুব্রীহি সমাস বলে । যেমন— শব্দের সঙ্গে বর্তমান = সশব্দ । স্ত্রীর সঙ্গে বর্তমান = সস্ত্রীক । লজ্জার সঙ্গে বর্তমান = সলজ্জ । শিষ্যের সঙ্গে বর্তমান = সশিষ্য প্রভৃতি ।
(চ) নঞ বহুব্রীহি সমাস :- যে বহুব্রীহি সমাসের পূর্বপদ নঞর্থক অব্যয় হয় তাকে নঞ বহুব্রীহি সমাস বলে । যেমন— নাই অন্ত যার = অনন্ত । নাই খাদ যার = নিখাদ । নাই সঙ্গী যার = নিঃসঙ্গ । বে (নাই) পরোয়া যার = বেপরোয়া ইত্যাদি ।
(ছ) সংখ্যাবাচক বহুব্রীহি সমাস :- যে বহুব্রীহি সমাসের পূর্বপদটি সংখ্যাবাচক বিশেষণ হয় সেটিকে সংখ্যাবাচক বহুব্রীহি সমাস বলে । যেমন— দশ আনন যার = দশানন (রাবণ) । ত্রি নয়ন যার = ত্রিনয়ন (শিব) । পঞ্চ আনন যার = পঞ্চানন ইত্যাদি ।
*****