জগদীশবাবুর বাড়ি হরিদা বিরাগী সেজে যাওয়ার পর যে ঘটনা ঘটেছিল, তা বর্ণনা করো ।

Submitted by avimanyu pramanik on Thu, 08/26/2021 - 20:16

জগদীশবাবুর বাড়ি হরিদা বিরাগী সেজে যাওয়ার পর যে ঘটনা ঘটেছিল, তা বর্ণনা করো

উঃ- সুবোধ ঘোষ রচিত 'বহুরূপী' গল্পে জগদীশবাবু একটি পার্শ্বচরিত্র । তিনি শিক্ষিত, মার্জিত ও ভদ্র, সৌম্য-শান্ত চেহারার অধিকারী, ধনী হলেও কৃপণ । তাঁর জীবনের দুর্বলতা হল অন্ধ ভক্তি । সুখ-শান্তির আশায় সাধু সন্ন্যাসী দেখলেই তাঁদের তিনি তুষ্ট করার চেষ্টা করতেন । সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেই বহুরূপী হরিদা জগদীশবাবুর বাড়িতে প্রবেশ করেছিলেন ।

হরিদা শুধুমাত্র পেশাগত জীবনে বহুরুপী নয়, তার ব্যক্তিগত জীবনও নাটকীয় বৈচিত্রে ভরা । তাই জগদীশবাবুর বাড়িতে বিরাগীর ছদ্মবেশে হরিদারকে আমরা দেখতে পাই । এক স্নিগ্ধ-শান্ত জ্যোৎস্নালোকিত উজ্জ্বল সন্ধ্যায় জগদীশবাবু বারান্দায় চেয়ারে বসেছিলেন । হঠাৎ বারান্দার সিঁড়ির দিকে তাকিয়ে তিনি অবাক হয়ে গিয়েছিলেন । তাঁর চোখের পাতা পড়ছিল না । কারণ সিঁড়ির কাছে যিনি দাঁড়িয়েছিলেন, তিনি জটাধারী, হাতে কমণ্ডলু, চিমটে, মৃগচর্মের আসনসহ গৈরিক বসন পরিহিত কোন সন্ন্যাসী নন, তিনি একজন বিরাগী, যার আদুড় গা এবং তার উপর একটি ধবধবে সাদা উত্তরীয় । পরনে ছোট বহরের থান, মাথার সাদা চুল বাতাসে উড়ছে, ধুলোমাখা হাত-পা, কাঁধে ঝোলা, ঝোলার মধ্যে বই বলতে গীতা । তাঁকে দেখে জগদীশবাবুর মনে হয়েছিল তিনি যেন জগতের সীমার ওপার থেকে হেঁটে এসেছেন । তাঁর শীর্ণ শরীর দেখে মনে হচ্ছিল যেন অশরীরী এবং তার চোখ থেকে ঝরে পড়ছিল উদাত্ত শান্ত এক দৃষ্টি । বলাবাহুল্য তিনি আর কেউ নয়, সন্ন্যাসীবেশী হরিদা । হরিদা জগদীশবাবুর বাড়িতে বিরাগীর ছদ্মবেশে খেলা দেখাতে গিয়ে অভাবী হওয়া সত্ত্বেও তাঁর দেওয়া সমস্ত সুযোগ প্রত্যাখ্যান করেন । কথক ও তাঁর বন্ধুরা যখন অভাবী হরিদা প্রণামী না নেওয়ার জন্য হরিদাকে কাঠগোড়ায় তুলেছেন, হরিদা তখন শিল্প ও শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে নির্লিপ্তভাবে বলেছেন, 

          — "তাতে যে আমার ঢং নষ্ট হয় ।"

****

Comments

Related Items

বহু বিকল্পীয় প্রশ্নোত্তর (M.C.Q) - আফ্রিকা

১. আদিম যুগে স্রষ্টার কার প্রতি অসন্তোষ ছিল ? — (ক) দয়াময় দেবতার প্রতি (খ) কবির সংগীতের প্রতি (গ) নিজের প্রতি (ঘ) ধরিত্রীর প্রতি ২. "সেই হোক তোমার সভ্যতার শেষ পূর্ণবাণী"— 'সভ্যতার শেষ পূর্ণবাণী'— (ক) বিদ্বেষ ত্যাগ করো (খ) ক্ষমা করো (গ) ভালোবাস (ঘ) মঙ্গল করো

বহু বিকল্পীয় প্রশ্নোত্তর (M.C.Q) - হারিয়ে যাওয়া কালি কলম

১. পালকের কলমের ইংরেজি নাম হল — (ক) স্টাইলাস (খ) ফাউন্টেন পেন (গ) কুইল (ঘ) রিজার্ভার পেন ২. কানে কলম গুঁজে দুনিয়া খোঁজেন — (ক) প্রাবন্ধিক (খ) দার্শনিক (গ) গল্পকার (ঘ) নাট্যকার

সিরাজদ্দৌলা

[দরবার কক্ষ । সিরাজ সিংহাসনে উপবিষ্ট । কর্মচারীরা যথাস্থানে উপবিষ্ট । সভাসদদের মাঝে মীরজাফর, মোহনলাল, মীরমদন, রায়দুর্লভ একদিকে— অন্যদিকে রাজবল্লভ, জগৎশেঠ, ওয়াটস, মঁসিয়ে লা দণ্ডায়মান । গোলাম হোসেন যথারীতি নবাবের পায়ের কাছে বসিয়া আছে ।]

পথের দাবী

পুলিশ-স্টেশনে প্রবেশ করিয়া দেখা গেল, সুমুখের হলঘরে জন-ছয়েক বাঙালি মোট-ঘাট লইয়া বসিয়া আছে, জগদীশবাবু ইতিমধ্যেই তাহাদের টিনের তোরঙ্গ ও ছোটৈ-বড়ো পুঁটলি খুলিয়া তদারক শুরু করিয়া দিয়াছেন । শুধু যে লোকটির প্রতি তাঁহার অত্যন্ত সন্দেহ হইয়াছে তাহাকে আর একটা ঘরে আটকাইয়া রাখা হইয়াছে ।

অদল বদল

হোলির দিনের পড়ন্ত বিকেল । নিম গাছের নীচে গাঁয়ের একদল ছেলে জড়ো হয়ে ধুলো ছোড়াছুড়ি করে খেলছিল । হাত ধরাধরি করে অমৃত ও ইসাব ওদের কাছে এল । দুজনের গায়েই সেদিনকার তৈরি নতুন জামা ।