'এল ওরা মানুষ ধরার দল'— তাদের আগমনের আগে আফ্রিকার স্বরূপ কেমন ছিল ?

Submitted by avimanyu pramanik on Fri, 08/27/2021 - 08:02

প্রশ্ন:- 'এল ওরা মানুষ ধরার দল'— তাদের আগমনের আগে আফ্রিকার স্বরূপ কেমন ছিল ?

উত্তর:-  উদ্ধৃত লাইনটি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা 'আফ্রিকা' কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে । এখানে ওরা বলতে সাম্রাজ্যবাদী শাসক  ইউরোপীয়দের কথা বলা হয়েছে । ইউরোপীয় শক্তির আগমনের পূর্বে আফ্রিকা আপন ঐতিহ্যে, সংস্কৃতিতে এবং মানবিকতায় ছিল সুমহান । নিবিড় বনস্পতির পাহারায় ছিল বলে, রবীন্দ্রনাথ আফ্রিকাকে 'ছায়াবৃতা' বলে সম্বোধন করেছেন । আফ্রিকার শিল্প, সঙ্গীত, নৃত্য, লোককাব্যের গুরুত্ব অপরিসীম । অতীতের বিস্তীর্ণ আফ্রিকার সৌন্দর্য ও স্বকীয় ঐতিহ্যকে কবি 'প্রকৃতির দৃষ্টি অতীত জাদু' বলতে চেয়েছেন । আফ্রিকা তার নিজস্বতা দিয়েই অর্থাৎ বনস্পতির নিবিড় পাহারাতে নিজেকে সুরক্ষিত রেখেছিল । গভীর অরণ্যে পরিবৃত আফ্রিকার অধিবাসীরা ছিল কৃষ্ণাঙ্গ । বাইরের পৃথিবীর কাছে এরা ছিল উপেক্ষিত ও বঞ্চিত । তবে তাদের ছিল প্রকৃতির অফুরন্ত ঐশ্বর্য্য ও স্বকীয় সংস্কৃতির ঐতিহ্য । তারা রুদ্র প্রকৃতির ভয়ঙ্কর রূপকে আস্তে আস্তে নিজেদের আয়ত্তে আনতে শেখে এবং সমস্ত শঙ্কাকেও হার মানাতে শেখে । এখানে কবি বলেছেন —

    "শঙ্কাকে চাচ্ছিলে হার মানাতে  / আপনাকে উগ্র করে বিভীষিকার প্রচণ্ড মহিমায়  / তাণ্ডবের দুন্দভিনিনাদে ।"

কিন্তু এই ঐতিহ্য মন্ডিত আফ্রিকার বুকে দুর্বার থাবা বসিয়েছে ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ।

   "নখ যাদের তীক্ষ্ণ তোমার নেকড়ের চেয়ে / এল ওরা মানুষ ধরার দল, / গর্বে যারা অন্ধ তোমার সূর্যহারা অরণ্যের চেয়ে ।"  আর ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদী শক্তি যারা নেকড়ের চেয়ে ভয়ংকর, তীক্ষ্ণ নখ সম পৈশাচিক আচরণ করে, গর্বে অন্ধ হয়ে নির্মল মনের অধিকারী সরল মানুষকে ও তাদের সংস্কৃতিকে আঘাত করে, তারা কখনোই ক্ষমার যোগ্য নয় । মানবতাহীন মানুষ পশুর থেকেও অধম, হীন । সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে এই ছিল প্রতিবাদ ।

*****

Comments

Related Items

বহু বিকল্পীয় প্রশ্নোত্তর (M.C.Q) - আফ্রিকা

১. আদিম যুগে স্রষ্টার কার প্রতি অসন্তোষ ছিল ? — (ক) দয়াময় দেবতার প্রতি (খ) কবির সংগীতের প্রতি (গ) নিজের প্রতি (ঘ) ধরিত্রীর প্রতি ২. "সেই হোক তোমার সভ্যতার শেষ পূর্ণবাণী"— 'সভ্যতার শেষ পূর্ণবাণী'— (ক) বিদ্বেষ ত্যাগ করো (খ) ক্ষমা করো (গ) ভালোবাস (ঘ) মঙ্গল করো

বহু বিকল্পীয় প্রশ্নোত্তর (M.C.Q) - হারিয়ে যাওয়া কালি কলম

১. পালকের কলমের ইংরেজি নাম হল — (ক) স্টাইলাস (খ) ফাউন্টেন পেন (গ) কুইল (ঘ) রিজার্ভার পেন ২. কানে কলম গুঁজে দুনিয়া খোঁজেন — (ক) প্রাবন্ধিক (খ) দার্শনিক (গ) গল্পকার (ঘ) নাট্যকার

সিরাজদ্দৌলা

[দরবার কক্ষ । সিরাজ সিংহাসনে উপবিষ্ট । কর্মচারীরা যথাস্থানে উপবিষ্ট । সভাসদদের মাঝে মীরজাফর, মোহনলাল, মীরমদন, রায়দুর্লভ একদিকে— অন্যদিকে রাজবল্লভ, জগৎশেঠ, ওয়াটস, মঁসিয়ে লা দণ্ডায়মান । গোলাম হোসেন যথারীতি নবাবের পায়ের কাছে বসিয়া আছে ।]

পথের দাবী

পুলিশ-স্টেশনে প্রবেশ করিয়া দেখা গেল, সুমুখের হলঘরে জন-ছয়েক বাঙালি মোট-ঘাট লইয়া বসিয়া আছে, জগদীশবাবু ইতিমধ্যেই তাহাদের টিনের তোরঙ্গ ও ছোটৈ-বড়ো পুঁটলি খুলিয়া তদারক শুরু করিয়া দিয়াছেন । শুধু যে লোকটির প্রতি তাঁহার অত্যন্ত সন্দেহ হইয়াছে তাহাকে আর একটা ঘরে আটকাইয়া রাখা হইয়াছে ।

অদল বদল

হোলির দিনের পড়ন্ত বিকেল । নিম গাছের নীচে গাঁয়ের একদল ছেলে জড়ো হয়ে ধুলো ছোড়াছুড়ি করে খেলছিল । হাত ধরাধরি করে অমৃত ও ইসাব ওদের কাছে এল । দুজনের গায়েই সেদিনকার তৈরি নতুন জামা ।