রেচনের ওপর উদ্ভিদ ও প্রাণীর নির্ভরশীলতা

Submitted by arpita pramanik on Mon, 11/26/2012 - 09:57

রেচনের ওপর উদ্ভিদ ও প্রাণীর নির্ভরশীলতা

রেচন প্রসঙ্গে একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এই যে, উদ্ভিদের পক্ষে যেসব রেচন পদার্থ ক্ষতিকারক, প্রাণীদের পক্ষে তা গ্রহনযোগ্য; আবার প্রাণীদের পক্ষে যা ক্ষতিকারক, উদ্ভিদের পক্ষে তা গ্রহণযোগ্য । প্রাণী কর্তৃক নিষ্কাশিত রেচন পদার্থগুলিকে উদ্ভিদ সার হিসাবে গ্রহণ করে । আবার উদ্ভিদের বিভিন্ন রেচন পদার্থ (যেমন; রজন, গঁদ, রবার, কুইনাইন, রেসারপিন, ধুনো কর্পূর মরফিন ইত্যাদি) মানুষের নানা প্রয়োজনে ব্যবহৃত হয় ।

রেচন ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য :-  রেচন প্রসঙ্গে অপর একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এই যে, রেচন পদার্থগুলো দুষিত, ক্ষতিকারক এবং অপ্রয়োজনীয় হওয়ায় এরা সমস্ত জীবদেহ থেকে নিষ্কাশিত হয় । কিন্তু  প্রকৃতির কাছে ওই পদার্থগুলো আদৌ অপ্রয়োজনীয় বা দুষিত নয় । কারণ ওই সব রেচন পদার্থ আবার বিশ্লিষ্ট হয়ে সার পদার্থ হিসাবে প্রকৃতির বুকে ফিরে আসে এবং উদ্ভিদ ও প্রাণীদের দ্বারা আবার ব্যবহৃত হয় । জীব দেহ থেকে নিষ্কাশিত রেচন পদার্থের জৈব উপাদানগুলি মাটির মধ্যে অবস্থিত বিভিন্ন রকম জীবাণুর দ্বারা বিয়োজিত হয়ে জল, কার্বন ডাই-অক্সাইড, নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশিয়াম এবং অন্যান্য অজৈব পদার্থের লবন গঠন করে । ওই সব অজৈব উপাদান উদ্ভিদ মাটি থেকে শোষণ করে থাকে এবং উদ্ভিদ দেহে ওইগুলি আবার যৌগ পদার্থে পরিণত হয় । প্রাণীরা উদ্ভিদ-খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে ওই সব যৌগ-পদার্থ গ্রহণ করে । 

প্রকৃতির কোনো সম্পদই জীবেরা স্থায়ীভাবে অপসারিত করে না । জীব প্রকৃতির যা কিছু গ্রহণ করে, আবার তা রেচনক্রিয়ার মাধ্যমে এবং মৃত্যুর পর দেহ-পচনের মাধ্যমে, প্রকৃতির বুকেই ফিরিয়ে দেয় । সেই জন্য কোটি কোটি বছর ধরে উদ্ভিদ এবং প্রাণীরা প্রকৃতির প্রভূত সম্পদ আহরণ করলেও, প্রকৃতি আজও রিক্ত এবং নিঃস্ব হয়ে যায় নি ।

*****

Related Items

থাইরক্সিন (Thyroxin)

থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে থাইরক্সিন নিঃসৃত হয়। থাইরয়েড গ্রন্থিটি গ্রীবাদেশে ট্রাকিয়ার দু'পাশে দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ ট্রাকিয়াল-রিং -এর সামনে অবস্থিত । প্রাপ্ত বয়স্ক লোকের থাইরয়েড গ্রন্থির ওজন প্রায় 20-35 gm হয় । থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত আর দুটি হরমোন হল ট্রাই-আয়োডোথাইরেনিন ...

ইনসুলিন (Insulin)

অগ্ন্যাশয়ে অবস্থিত আইলেটস অব ল্যাঙ্গারহ্যানস নামক অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির বিটা কোষ থেকে ইনসুলিন নিঃসৃত হয় । অগ্ন্যাশয় অন্তঃক্ষরা ও বহিঃক্ষরা উভয় গ্রন্থির সংমিশ্রণে গঠিত হওয়ায় অগ্ন্যাশয়কে মিশ্রগ্রন্থি বলে । অগ্ন্যাশয়ের আলফা কোষ থেকে গ্লুকাগন হরমোন নিঃসৃত হয় । ...

মানবদেহে বিভিন্ন অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি : পিটুইটারি গ্রন্থি

পিটুইটারি মানবদেহের সবচেয়ে ছোটো কিন্তু সবচেয়ে শক্তিশালী অনাল গ্রন্থি । ওজন মাত্র 500 mg. । এই গ্রন্থি নিঃসৃত হরমোনগুলি, অন্যান্য অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির নিঃসরণকে নিয়ন্ত্রণ করে বলে একে মুখ্য গ্রন্থি বা প্রভু গ্রন্থি বলে । পিটুইটারি গ্রন্থি মস্তিষ্কের মূলদেশে স্ফেনয়েড অস্থির সেলা-টারসিকা প্রকোষ্ঠে ...

প্রাণী-হরমোন ও উৎস

প্রাণীদেহে অবস্থিত অন্তঃক্ষরা বা অনালগ্রন্থি থেকে হরমোন ক্ষরিত হয় । অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের স্নায়ুগ্রন্থিতে অবস্থিত নিউরোসিক্রেটরি কোষগুলো থেকে হরমোন নিঃসৃত হয় । প্রাণীদের নিউরোসিক্রেটরি কোষ থেকে নিঃসৃত হরমোনকে নিউরো হরমোন বলে । যেসব গ্রন্থির ক্ষরিত রস নালির মাধ্যমে ...

কৃষিকার্যে কৃত্রিম উদ্ভিদ-হরমোনের ব্যবহারিক প্রয়োগ

উদ্ভিদদেহে স্বাভাবিক হরমোন উত্পন্ন হলেও বর্তমানে কৃত্রিম হরমোন ও তৈরি হচ্ছে । এই সব কৃত্রিম হরমোনের মধ্যে ইন্ডোল বিউটারিক অ্যাসিড, ন্যাপথালিন অ্যাসিটিক অ্যাসিড, ডাই-ক্লোরোফেনক্সি অ্যাসিটিক অ্যাসিড প্রভৃতি প্রধান । কৃত্রিম হরমোনগুলি কম পরিমাণে বেশি কার্যকরী ...