সুলতানা রাজিয়া (Razia)

Submitted by avimanyu pramanik on Mon, 05/07/2012 - 11:36

 সুলতানা রাজিয়া (Razia) :

ইলতুৎমিসের মৃত্যুর পর তাঁর কন্যা রাজিয়া দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করেন । রাজিয়া ১২৩৬  খ্রিস্টাব্দ থেকে ১২৪০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন । ইলতুৎমিসের পুত্ররা অযোগ্য বিবেচিত হওয়ায় ইলতুৎমিস নিজেই কন্যা রাজিয়াকে দিল্লির সুলতান পদে মনোনীত করেন । তাঁর সিংহাসন লাভ সুলতানি আমলের ইতিহাসে একটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা । তিনিই একমাত্র নারী যিনি দিল্লির সিংহাসনে বসেন । নারী হয়েও তিনি সমস্ত প্রকার পুরুষোচিত গুণের অধিকারী ছিলেন এবং এই কারণেই ইলতুৎমিস তাঁকে উত্তরাধিকারী মনোনীত করে যান । কিন্তু তখনকার রক্ষণশীল ও ঈর্ষাকাতর মুসলিম আমির-ওমরাহগণ তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেও অসাধারণ বুদ্ধিমত্তা এবং বিভেদনীতির মাধ্যমে তিনি নিজের অধিকারকে সুপ্রতিষ্ঠিত করে তোলেন । কিন্তু শেষ পর্যন্ত অভিজাত সম্প্রদায়ের ষড়যন্ত্রে তিনি সিংহাসনচ্যুত হন । বিচক্ষণ ও যোগ্য শাসিকা হিসাবে রাজিয়া বহু গুণের অধিকারিনী ছিলেন । সেই সময়ের পর্দা প্রথা তিনি মানতেন না এবং তাঁর সরকারি মুদ্রাতে 'সুলতান' খেতাব ব্যবহার করতেন । ঐতিহাসিক মিনহাজের মতে, "দিল্লির সুলতান পদ অধিকার করার মতো সমস্ত যোগ্যতা তাঁর ছিল ।" সভাসদরা একজন নারীর অধীনে কাজ করবেন এটা মেনে নিতে পারেন নি । ফলে তারা এক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় ও ১২৪০ খ্রিস্টাব্দে সুলতানা রাজিয়া -র মৃত্যু হয় । তাঁর মৃত্যুর পর ইলতুৎমিসের দুই অযোগ্য পুত্র পরপর সিংহাসনে বসেন ।

*****

Related Items

মুঘল যুগে ওলন্দাজ বণিকদের কার্যকলাপ

সপ্তদশ শতকের গোড়া থেকেই ওলন্দাজ ও ইংরেজ বণিকেরা এশীয় বাণিজ্যে অংশগ্রহণ করতে থাকে । গোড়ার দিকে এরা পর্তুগিজদের সঙ্গে সংঘর্ষ এড়াতে ইন্দোনেশিয়া ও পূর্ব ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী ছিল । কিন্তু এরা অচিরেই বুঝতে পারে যে, মশলা ...

মুঘল যুগে পর্তুগিজ বণিকদের কার্যকলাপ

১৪৯৭-৯৮ খ্রীষ্টাব্দে যখন পর্তুগিজ নাবিক ভাস্কো-দা-গামা মালাবার উপকূলে কালিকট বন্দরে অবতরণ করেন, তখন সেই ঘটনার গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনুধাবন করার ক্ষমতা ভারতবাসীর ছিল না । ভাস্কো-দা-গামা মালাবার উপকূলে কালিকট বন্দরে অবতরণ করার পর থেকেই ইউরোপের সঙ্গে ...

মুঘল যুগে ভারতের বহির্বাণিজ্য

বহির্বিশ্বে ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের বাণিজ্যিক লেনদেন ছিল । বিদেশী বণিকরা যেমন ব্যবসার জন্য ভারতে আসত, তেমনই ভারতীয় বণিকেরা, বিশেষত গুজরাটিরা বহির্বাণিজ্যে অংশগ্রহণ করত । ভারত থেকে বস্ত্র, গোল মরিচ, নীল ও অন্যান্য দ্রব্যসামগ্রী রপ্তানি হত । ভারতে আমদানি হত ...

মুঘল যুগে ভারতের আভ্যন্তরীণ বাণিজ্য

মুঘল আমলে দেশে শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হওয়ায়, রাস্তাঘাট ও সরাইখানা নির্মাণ এবং পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নতির ফলে আভ্যন্তরীণ ব্যবসাবাণিজ্যের প্রসার ঘটেছিল । তা ছাড়া উন্নত মুদ্রানীতি এবং নগদে বেতন প্রদানের ফলে একদিকে যেমন এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় টাকা ...

মুঘল যুগে ভারতের অকৃষি নির্ভর শিল্প

অকৃষি শিল্প উৎপাদনের একটা বড় অংশ ছিল বিলাসদ্রব্য । সাধারণ মানুষের চাহিদা কম ছিল । বিলাসদ্রব্য নির্মাণের জন্য সরকারি কারখানা বা কর্মশালা ছিল । তবু তার বেশির ভাগ তৈরি হত স্বাধীন কারিগর ও শিল্পীর বাড়িতে । রান্নাবান্না ও ঘর গেরস্থালীর কাজে লোহা ও তামার তৈরি জিনিসপত্র ...