ভারতে বনভূমি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা

Submitted by avimanyu pramanik on Fri, 11/21/2014 - 23:15

ভারতে বনভূমি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা (Requirements of Preservation of Indian Forest) : জনজীবনে বনভূমির প্রভাব অপরিসীম । প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নানারকম উপকার বনভূমি থেকে পাওয়া যায়, যেমন—

(১) আবহাওয়া ও জলবায়ুর ভারসাম্য (Balance between Weather and climate) : বনভূমি আবহাওয়া ও জলবায়ুর ভারসাম্য রক্ষা করে । দিনের বেলা গাছেরা নিজেদের সালোকসংশ্লেষের প্রয়োজনে প্রাণীজগতের পক্ষে দূষিত বাতাসের কার্বন ডাই অক্সাইড শোষন করে এবং প্রাণীজগতের অশেষ কল্যান সাধন করে । বনভূমি পরিবেশকে দুষণ মুক্ত রাখতে সাহায্য করে । শহরাঞ্চলে প্রধানত এই কারণেই বৃক্ষ রোপন করা হয় ।

(২) ভূমিক্ষয় রোধ (Prevention of Land Erosion) : বনভূমি ভূমিক্ষয় প্রতিরোধ করে । গাছেরা নিজেদের শিকড়ের সাহায্যে মাটিকে শক্তভাবে আঁকড়ে ধরে বৃদ্ধি পায় । এতে ভূমিক্ষয় নিরারণ হয় ।

(৩) মরুভূমির প্রসার রোধ (Prevention of the spread of the Desert) : বনভূমি মরুভূমির প্রসার রোধে সাহায্য করে । বনভূমির উপস্থিতির ফলে ভূমিক্ষয় বন্ধ হয়ে মরুভূমির প্রসার রোধ করে ।

(৪) মৃত্তিকার উর্বরতা বৃদ্ধি (Enrichment of Soil fertility) : বনভূমি মৃত্তিকার উর্বরতা বৃদ্ধি করে । বনভূমির গাছেদের পাতা, ফুল, মূল, কান্ড প্রভৃতি পচে মৃত্তিকার উর্বরতা বাড়ায় ।

(৫) বৃষ্টিপাত (Rainfall) : বনভূমি বৃষ্টিপাতে সাহায্য করে । গাছের প্রস্বেদন প্রক্রিয়ার ফলে বাষ্পীভবনের পরিমাণ বেশি হওয়ায় বনভূমি অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা বেশি থাকে ।

(৬) অর্থকরী দিক (Economic aspects) : বনভূমি মানুষের অর্থকরী দিক থেকেও লাভজনক । বনভূমি থেকে আহরণ করা ফলমূল, মধু, কাঠ এবং বিভিন্ন ধরনের বনজ সম্পদ মানুষকে জীবিকা নির্বাহ করতে সাহায্য করে ।

(৭) জীবজগতের ভারসাম্য রক্ষা (Maintain the balance of Species) : বনভূমি জীবজগতের ভারসাম্য রক্ষা করে । বিভিন্ন জীবজন্তুর আশ্রয় স্থল ও বাসভূমি হওয়ায় বনভূমি জীবজগতের ভারসাম্য রক্ষা করে ।

এই সব কারণের জন্য ভারতবাসীদের নিজেদের স্বার্থেই ভারতে বনভূমি সংরক্ষণ করা একান্ত প্রয়োজন ।

*****

Related Items

নর্মদা নদী (The Narmada)

নর্মদা নদী (The Narmada) : মহাকাল পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ অমরকন্টক থেকে উৎপন্ন হয়ে নর্মদা নদী উত্তর-পশ্চিমে বেঁকে মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্র হয়ে গুজরাটের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিন্ধ্য ও সাতপুরার সংকীর্ণ গিরিখাত অতিক্রম করে

ব্রহ্মপুত্র নদ (The Brahmaputra)

ব্রহ্মপুত্র নদ : তিব্বতের মানস সরোবরের নিকটবর্তী চেমায়ুং-দুং হিমবাহ থেকে সাংপো নামে উৎপন্ন হয়ে নামচাবারওয়া শৃঙ্গের কাছে চুলের কাটার মত বেঁকে অরুণাচল প্রদেশের মধ্য দিয়ে ডিহং নামে ভারতে প্রবেশ করেছে । এর মোট দৈর্ঘ্য ২,৯০০ কিমি, এর মধ্

সিন্ধু নদ (The Indus)

সিন্ধু নদ : সিন্ধু নদ তিব্বতের মানস সরোবরের উত্তরে অবস্থিত সিন-কা-বাব জলধারা থেকে উৎপন্ন হয়ে উত্তর-পশ্চিমে প্রথমে তিব্বতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পরে লাদাখ অঞ্চল দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে । সিন্ধু নদের মোট দৈর্ঘ্য ৩,১৮০ কিমি এবং এর মধ

গঙ্গা নদী (The Ganges)

গঙ্গা নদী : গঙ্গা ভারতের শ্রেষ্ঠ নদী এবং ভারতের দীর্ঘতম নদী । গঙ্গানদীর মোট দৈর্ঘ্য ২৫১০ কিমি এবং এর মধ্যে ২০১৭ কিমি ভারতে প্রবাহিত । কুমায়ুন হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহের গোমুখ তুষার গুহা থেকে ভাগীরথী নামে উৎপন্ন হয়ে সংকীর্ণ গিরিখাতের

ভারতের নদনদী (Rivers of India)

ভারতের নদনদী : ভারতে অসংখ্য নদনদী বিভিন্ন দিকে প্রবাহিত হয়েছে । উৎস, প্রবাহের অঞ্চল, এবং মোহানা অনুসারে ভারতের নদনদীকে প্রধানত দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় । যেমন— (১) উত্তর ভারতের নদী এবং (২) দক্ষিণ ভারতের নদী ।