নদী অববাহিকার সমভূমি অঞ্চল

Submitted by avimanyu pramanik on Tue, 12/16/2014 - 11:52

নদী অববাহিকার সমভূমি অঞ্চল : এশিয়ার মধ্যভাগের বিভিন্ন উঁচু ভঙ্গিল পর্বতশ্রেণি থেকে যেসব নদনদী উৎপন্ন হয়েছে তাদের পলি দিয়ে দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ায় নিম্ন সমভূমির সৃষ্টি হয়েছে । পলি গঠিত বলে এই সমভূমি অত্যন্ত উর্বর । এইসব সমভূমিগুলোর মধ্যে দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার সমভূমিতে পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক লোক বাস করে । এই সমভূমিগুলিতেই সুপ্রাচীন নদী কেন্দ্রিক সভ্যতা গড়ে উঠেছিল । এই সমস্ত নদী অববাহিকার বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য নিম্ন সমভূমি অঞ্চলগুলিকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়, যেমন—  (১) গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার সমভূমি, (২) সিন্ধু উপত্যকার সমভূমি, (৩) টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস নদী উপত্যকার সমভূমি এবং (৪) চিন সমভূমি ।

(১) গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার সমভূমি : গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের বদ্বীপ সমভূমিটি হল পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ সমভূমি এবং এটি পশ্চিমে প্রায় সিন্ধু উপত্যকা থেকে পূর্বে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা পর্যন্ত বিস্তৃত ।

(২) সিন্ধু উপত্যকার সমভূমি : সিন্ধু ও তার পাঁচটি উপনদী, যথা— শতদ্রু (শতলজ), বিপাশা (বিয়াস), ইরাবতী (রাভি), চন্দ্রভাগা (চেনাব), এবং বিতস্তা (ঝিলাম) নদীর উপত্যকায় পাকিস্তানের বিস্তীর্ণ অঞ্চল ও ভারতের পাঞ্জাবে গড়ে ওঠা এই সমভূমি অঞ্চলটি খুবই উর্বর ।

(৩) টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস নদীর উপত্যকার সমভূমি : এশিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিম আরব এবং ইরাণের মধ্য মেসোপটেমিয়া বা ইরাকের সমভূমি অঞ্চল অবস্থিত । ইউফ্রেটিস এবং টাইগ্রিস নদী দুটি এই অঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে । এই সমভূমি অঞ্চলটি খুবই উর্বর ও জনবহুল ।

(৪) চিন সমভূমি (আমুর, হোয়াংহো, ইয়াংসি কিয়াং-সিকিয়াং সমভূমি ) : এশিয়া মহাদেশের উত্তর-পূর্ব দিকে অবস্থিত চিনের আমুর, হোয়াংহো, ইয়াংসি-কিয়াং এবং সিকিয়াং নদীর অববাহিকার বিস্তীর্ণ সমভূমি এই অঞ্চলের অন্তর্গত । ইয়াংসি-কিয়াং ও সিকিয়াং নদী মধ্য চিনে বিশাল সমভূমির সৃষ্টি করেছে । এই সমভূমিটি খুবই উর্বর । হোয়াংহো সমভূমিতে বায়ুর সঞ্চয় কাজের ফলে সঞ্চিত হওয়া প্রচুর লোয়েস মৃত্তিকা দেখা যায় ।

*****

Related Items

জিউগেন (Zeugen)

জিউগেন (Zeugen) : বায়ুপ্রবাহের ক্ষয়কাজের ফলে যে সমস্ত ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, জুগেন [Zeugen] হল তার মধ্যে অন্যতম একটি ভূমিরূপ । মরু অঞ্চলে বায়ু অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় ভূমির সমান্তরালে যে শৈলশিরা ও খাতের মতো ভূমিরূপের সৃষ্টি করে তাকে জিউগেন ব

গৌর (Gour)

গৌর (Gour) : বায়ুপ্রবাহের ক্ষয়কাজের ফলে নানা রকমের ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, গৌর হল তার মধ্যে অন্যতম একটি ভূমিরূপ । মরু অঞ্চলে বায়ুর গতিপথে কোনও কঠিন ও নরম শিলায় গড়া শিলাস্তূপ অবস্থান করলে এবং ওই শিলাস্তুপের নিচে নরম শিলা ও উপরে কঠিন শিলা থাকলে, নিচের কোমল অ

অপসারণ সৃষ্ট গর্ত (Blow-Outs)

অপসারণ সৃষ্ট গর্ত (Blow-Outs) : বায়ুপ্রবাহের ক্ষয়কাজের ফলে যে সমস্ত ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, অপসারণ সৃষ্ট গর্ত হল তার মধ্যে অন্যতম একটি ভূমিরূপ । প্রবল বায়ুপ্রবাহের ফলে মরু অঞ্চলের কোনো স্থানের বিশাল পরিমাণ বালুকারাশি এক জায়গা থেকে আরেক জা

বায়ুপ্রবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ

বায়ুপ্রবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ (Landforms produced by Wind Abrasion) : বায়ুপ্রবাহ (i) অবনমন (Deflation), (ii) অবঘর্ষ (Abrasion) ও (iii) ঘর্ষণ (Attrition) পদ্ধতির দ্বারা ক্ষয়কার্য (Erosion) সাধন করে থাকে । বায়ুপ্রবাহ আলগা বালুরাশিকে উড়িয়

বায়ুর বিভিন্ন প্রকারের কাজ (Work of Wind)

বায়ুর বিভিন্ন প্রকারের কাজ (Work of Wind) : বায়ু প্রধানত (ক) ক্ষয়সাধন (Erosion), (খ) অপসারণ বা বহন (Transportation) ও (গ) সঞ্চয় বা অবক্ষেপণ (Deposition) — এই তিন প্রকারে কাজ করে থাকে ।