মানুষের কাজকর্মের ওপর ভূমিরূপের প্রভাব

Submitted by avimanyu pramanik on Fri, 05/11/2012 - 21:45

মানুষের কাজকর্মের ওপর ভূমিরূপের প্রভাব (Influence of Landforms on Human Activities)

মানুষের জীবন ও তার কাজকর্মের ওপর ভূমিরূপের প্রভাব অসামান্য । তাই দেখা যায়,পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের জীবনধারার সঙ্গে সমভূমি ও মালভূমি অঞ্চলের মানুষের জীবনধারার মধ্যে কত পার্থক্য ।

মানুষের জীবনে পর্বতের প্রভাব (Influence of Mountain on Human Lives)

মানবজীবনে পর্বতের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবগুলি হল: -

১) পার্বত্য অঞ্চলের ভূমি বন্ধুর, জলবায়ু শীতল আর মাটি অনুর্বর । তাই সেখানকার মানুষের চাষবাস করার সুযোগ কম । সামান্য পরিমাণে কৃষিকাজ, পশুপালন, আর কাঠ সংগ্রহ করা সেখানকার মানুষের প্রধান উপজীবিকা ।

২) বন্ধুর স্থলপথে যাতায়াত করা বা খরস্রোতা নদীর জলপথে পরিবহন করা অসুবিধাজনক বলে মালপত্র আদানপ্রদান করা ব্যবসা-বাণিজ্য করা বা শিল্প গড়ে তোলা সহজ নয় ।

৩) জীবিকার অভাবের জন্য পার্বত্য অঞ্চলের লোকবসতি খুবই কম ।

৪) পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ কষ্টসহিষ্ণু, পরিশ্রমী ও সাহসী হয় ।

৫) পর্বতের মনোরম পরিবেশে স্বাস্থ্যনিবাস গড়ে ওঠে ।  

৬) উঁচু পর্বতশ্রেণি কোনো দেশের জলবায়ুকে নিয়ন্ত্রন করে,

৭) পার্বত্য হিমবাহের বরফগলা জল কৃষিকাজ ও পানীয় জলের যোগান দেয়,

৮) পার্বত্য অঞ্চলের খরস্রোতা নদীগুলির জল থেকে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়,

৯) উঁচু পর্বতের ঢালে সরলবর্গীয় অরণ্য এবং নিম্ন পার্বত্য অঞ্চলে সাধারনত চিরহরিৎ বৃক্ষের বনভূমির সৃষ্টি হয়,

১০) পর্বতের ঢালে চা, কফি প্রভৃতি বাগিচা ফসল এবং নানান রকমের ফলের চাষ করা হয়,

১১) মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্যের জন্য পার্বত্য অঞ্চলে পর্যটন ও হোটেল ব্যবসা গড়ে ওঠে।

মানুষের জীবনে মালভূমির প্রভাব (Influence of Plateau on Human Lives)

১) মালভুমির জায়গায় জায়গায় জলবায়ুর পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় ।

২) যে সব মালভূমিতে বৃষ্টিপাত হয় সেখানে চাষবাস উন্নত । শুষ্ক মালভূমিতে পশুপালন করা মানুষের প্রধান উপজীবিকা । জীবিকা আর কাজের সুযোগ সুবিধার অভাব থাকায় সেখানকার মানুষের বসতি সাধারণত ঘন হয় না ।

৩) যেসব মালভূমিতে প্রচুর খনিজসম্পদ পাওয়া যায় সেখানে শিল্প-কারখানা গড়ে উঠে ও জনবসতি ঘন হয় ।

মানুষের জীবনে সমভূমির প্রভাব (Influence of Plains on Human Lives)

১) সমভূমি সমতল, সহজে যাতায়াত করা যায় ও পথঘাট তৈরি হয় ।

২) সমতলে নদী ধীর গতিতে চলে । তাই জলপথে সহজে যাতায়াত করা যায় ।

৩) সমভুমিতে সহজে যাতায়াত করা যায় বলে ব্যবসা-বাণিজ্য গড়ে উঠে ও শিল্প-কারখানা গড়ে উঠে ।

৪) নদীর পলি মাটিতে গড়া সমভূমি খুব উর্বর । তাই সেখানে কৃষিকাজ মানুষের প্রধান উপজীবিকা ।

৫) সমভূমিতে সহজে খাদ্য ও কাজকর্ম পাওয়া যায় । তাই জনবসতি খুব বেশি । পৃথিবীর সমভূমি অঞ্চলগুলি শিক্ষা, সংস্কৃতি, সভ্যতা ও সম্পদে সমৃদ্ধ ।      

****

Related Items

কাবেরী নদী (The Kaveri)

কাবেরী নদী (The Kaveri) : কর্ণাটক রাজ্যের তালাকাভেরি উচ্চভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে কাবেরী নদী কর্ণাটক ও তামিলনাড়ুর মধ্য দিয়ে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে । কাবেরী নদীর দৈর্ঘ্য ৭৬৫ কিমি.

কৃষ্ণা নদী (The Krishna)

কৃষ্ণা নদী (The Krishna) : পশ্চিমঘাট পর্বতমালার মহাবালেশ্বরের শৃঙ্গের কিছুটা উত্তরে প্রায় ১৪০০ মিটার উচ্চতা থেকে উৎপন্ন হওয়ার পর কৃষ্ণা নদী দক্ষিণ-পূর্বে তেলেঙ্গানা ও অন্ধপ্রদেশ রাজ্যের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিশাল বদ্বীপ সৃষ্টি করে

গোদাবরী নদী (The Godavari)

গোদাবরী নদী (The Godavari) : গোদাবরী নদী 'দক্ষিণ ভারতের গঙ্গা' নামে পরিচিত । মহারাষ্ট্রের ব্রম্ভগিরি পাহাড়ের ত্র্যম্বক শৃঙ্গ থেকে উৎপন্ন হয়ে এবং পরে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে গোদাবরী নদী মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশ

মহানদী (The Mahanadi)

মহানদী (The Mahanadi) : ছত্তিসগড় রাজ্যের রায়পুর জেলার দক্ষিণাংশের সিয়াওয়া মালভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে মধ্যপ্রদেশ ও ওড়িশা রাজ্য অতিক্রম করার পর বদ্বীপ সৃষ্টি করে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে । মহানদী

তাপী নদী (The Tapti)

তাপী বা তাপ্তি নদী (The Tapti) : মধ্যপ্রদেশের মহাদেব পর্বতের মুলতাই উচ্চভূমির প্রায় ৭৭০ মিটার উচ্চতা থেকে উৎপন্ন হয়ে তাপী নদী মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের ওপর দিয়ে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে সাতপুরা ও অজন্তার মধ্যবর্তী সংকীর্ণ উপত