প্রশ্ন : কীভাবে কাশ্মীর সমস্যার সৃষ্টি হয় ?
উত্তর : ভারতীয় উপমহাদেশে ভৌগোলিক অবস্থান হিসেবে কাশ্মীরের দক্ষিণে ভারত, পশ্চিমে পাকিস্তান, উত্তর ও উত্তরপূর্বে তিব্বত ও চীনা তুর্কিস্তান । আন্তর্জাতিক ভাবে কাশ্মীরের ভৌগলিক অবস্থান ছিল গুরুত্বপূর্ণ । স্বাধীনতা লগ্ন থেকেই ভারত ও পাকিস্তান এই দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের তিক্ত সম্পর্কের মূলেও কাশ্মীর । ভারতের স্বাধীনতা প্রাপ্তির সময় কাশ্মীরের রাজা ছিলেন হরি সিং, অন্যদিকে কাশ্মীরের রাজতন্ত্র বিরোধী ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ছিলেন শেখ আবদুল্লা । ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতা লাভের সময়কালে হরি সিং ভারত ও পাকিস্তান কোনো দিকে যোগ না দিয়ে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাসে কাশ্মীরকে স্বাধীন ও স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করেন । কাশ্মীরকে আন্তর্জাতিক ও ভৌগলিক গুরুত্বের কথা ভেবে স্বাধীনতা লাভের পরপরই পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী ২২শে অক্টোবর গুলমার্গ প্ল্যান অনুযায়ী কাশ্মীর আক্রমণ করে শ্রীনগরের অনতিদূরে পৌঁছে যায় । এমতাবস্থায় রাজা হরি সিং ভীত হয়ে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ২৬শে অক্টোবর ভারতভুক্তির দলিলে স্বাক্ষর করতে বাধ্য হন ।
ভারতভুক্তির দলিলে স্বাক্ষরের পরদিনই, ২৭শে অক্টোবর ভারতীয় সেনাবাহিনী কাশ্মীরে অবতরণ করে এবং পাকিস্তানী হানাদারদের হটিয়ে কাশ্মীরের ২/৩ অংশ দখল করে, মুক্ত অঞ্চলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছত্রছায়ায় শেখ আবদুল্লার নেতৃত্বে একটি আপাৎকালীন সরকার গঠিত হয় । বাকি ১/৩ অংশ আজাদ কাশ্মীর নামে পাকিস্তানের পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণে থেকে যায় । এরপর ও পাকিস্তান আজাদ কাশ্মীরকে ঘাঁটি করে প্রতিনিয়ত ভারতকে বিব্রত করতে থাকে । পাকিস্তানি হানাদারদের হাত থেকে মুক্তি পেতে ভারত ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে নিরাপত্তা পরিষদে আবেদন করে । নিরাপত্তা পরিষদের তত্ত্বাবধানে কাশ্মীরে যুদ্ধবিরতি ঘটে ও যুদ্ধবিরতির সীমারেখাও ঠিক হয় । এতকিছু সত্ত্বেও পাকিস্তান আজও কাশ্মীরকে নিয়ে ভারতকে বিব্রত করে চলেছে ।
*****