রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিষ্ঠা (Growth of Political Association in India) :
ভারতে জাতীয়তাবোধের উন্মেষের পরবর্তী পদক্ষেপ হল রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান সমূহের প্রতিষ্ঠা । জাতীয়তাবোধের স্ফুরণকে যথাযত বাস্তবায়িত করার জন্য ও তাকে যথাযত পথে চালনা করার জন্য উপযুক্ত রাজনৈতিক মঞ্চ দরকার । তাই উনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ থেকেই ভারতবর্ষে একাধিক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠা হয় । ডঃ অনিল শীলের মতে এই শতাব্দী হল সভা-সমিতির যুগ । এই ব্যাপারে প্রথম উদ্যোগী হন রাজা রামমোহন রায় । তাঁর সময়ে জাতীয় চেতনা সঠিক রূপ পরিগ্রহ না করলেও তিনিই প্রথম এদেশে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের সূচনা করেন । রাজা রামমোহন রায়ই প্রথম ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে সংবাদপত্র আইনের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ সরকারের কাছে ভারতবাসীর অভাব অভিযোগ তুলে ধরে প্রতিকার চেয়েছিলেন । এ কারণেই তাঁকেই প্রথম রাজনৈতিক আন্দোলনের জনক বলা হয় । এরপর এদেশে একে একে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান জন্মলাভ করতে থাকে ।
জমিদার সভা (Landholders' Society) :
উনিশ শতকের প্রথমভাগে ভারতে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে ওঠে । এই সময়ে গড়ে উঠা রাজনৈতিক সংগঠনগুলির মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য ছিল 'জমিদার সভা' । ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে লর্ড কর্ণওয়ালিশ প্রবর্তিত চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত থেকে উদ্ভূত জমিদার শ্রেণি ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দের পর রাজনৈতিক নেতৃত্বদানে এগিয়ে আসে । ১৮৩৮ খ্রিষ্টাব্দের ১২ই নভেম্বর দ্বারকানাথ ঠাকুরের উদ্যোগে এবং রাধাকান্ত দেবের সভাপতিত্বে কলকাতায় 'জমিদার সভা' বা 'ল্যান্ডহোল্ডার্স সোসাইটি' প্রতিষ্ঠিত হয় । এই সভার যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন প্রসন্ন কুমার ঠাকুর ও ডাব্লিউ. সি. হ্যারি । সভার প্রাণপুরুষ ছিলেন দ্বারকানাথ ঠাকুর । সভার কার্যনির্বাহক সমিতির সকল সদস্যই ছিলেন প্রতিষ্ঠিত জমিদার । এই সভার এক ঘোষণাপত্রে বলা হয় জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশীয় স্বার্থযুক্ত প্রত্যেককেই এই প্রতিষ্ঠানের সদস্য হতে পারে ।
সভার ঘোষিত উদ্দেশ্যগুলির মধ্যে সংকীর্ণ জাতিভেদ বা আঞ্চলিকতাবাদের প্রশ্রয় ছিল না । প্রথমদিকে এই সভার রাজনৈতিক চিন্তাধারা ছিল যথেষ্ট উদারনৈতিক । জমিদার সভার প্রধান ঘোষিত উদ্দেশ্য ছিল জমিদার ও জমির মালিকদের সাধারণ স্বার্থরক্ষা করা । সভার অন্যতম নেতা রাজেন্দ্রলাল মিত্র ভূমিমালিকের সাধারণ স্বার্থের পাশাপাশি রায়তের অধিকার রক্ষার কথা বলেন । তিনি এই সভার মাধ্যমে ভারতবাসীর নিয়মতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন । জমিদারদের সঙ্গে প্রজাদের স্বার্থ জড়িয়ে থাকায় এই সভা উভয় শ্রেণির দাবি আদায়ের লক্ষ্য গ্রহণ করে ।
জমিদার সভা বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে —
(i) জমিদারদের স্বার্থরক্ষার জন্য তারা সরকারের কাছে দাবি জানায় ।
(ii) ব্রিটিশ আমলাতন্ত্রকে নিজেদের পক্ষে আনার চেষ্টা করে ।
(iii) ভারতের সর্বত্র চিরস্তায়ী বন্দোবস্তের প্রসার ঘটানোর দাবি জানায় ।
(iv) নিষ্কর জমি ভোগদখলের অধিকার পুনঃপ্রবর্তন বন্ধ করার চেষ্টা চালায় ।
(v) শাসনসংস্কারের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানায় ।
(vi) পুলিশবিভাগ, বিচারবিভাগ ও রাজস্ববিভাগের সংস্কারের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানায় ।
এই সভা তার আদর্শ ও লক্ষ্য প্রচারের জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গায় শাখা গড়ে তোলে । ফলে দেশ জুড়ে এক সংগঠিত আন্দোলন গড়ে ওঠে । ভারতীয়দের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্রিটিশ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে । এই সভার আবেদনে সরকার প্রতিটি গ্রামে কিছু পরিমাণ নিষ্কর জমি রাখার বন্দোবস্ত করে । জমিদারদের স্বার্থরক্ষার লক্ষ্যে গড়ে উঠলেও এই সভা রাজনৈতিক অধিকারের দাবি জানায় । এই সমিতি ভারতীয়দের আশা আকাঙ্খার প্রতি সহানুভূতি সম্পন্ন ও উদারনৈতিক ইংরেজদের সমর্থন লাভ করেছিল । টাউন হলে আয়োজিত জমিদার সভার এক সমাবেশে দ্বারকানাথ ঠাকুর বলেছিলেন যে, এক সময় আসবে যখন হিন্দু কলেজের ছাত্ররা নিজেদের রাজনৈতিক অধিকার রক্ষা করার ও নিজেদের অভিযোগ নিরসন করার জন্য এক বলিষ্ঠ দেশপ্রেমিক সঙ্ঘ গড়ে তুলবে । ১৮৪২ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ জমিদার সভা ক্রমে গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে । ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এর অস্তিত্ব কোনরকমে টিকে ছিল । পরবর্তীকালে বেঙ্গল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি এই সভার স্থান দখল করে নেয় ।
বেঙ্গল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি (Bengal British India Society) :
১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দে জর্জ টম্পসন নামে উদারপন্থী ইংরজ 'বেঙ্গল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি' গড়ে তোলেন । বাংলার যুব সম্প্রদায়কে দেশাত্মবোধে উদ্বুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে জর্জ টম্পসন বেঙ্গল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি গঠন করেন ।
ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন (British Indian Association) :
১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠিত হয় । সে সময় কুড়ি বছর অন্তর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে ভারত শাসনের জন্য ব্রিটিশ পার্লামেন্টের কাছ থেকে রাজকীয় অনুমতি (সনদ) নিতে হত । সনদ নেবার প্রাক্কালে ভারতের নানা সংস্থা নানা রাজনৈতিক দাবি ও প্রশাসনিক সুযোগ সুবিধা লাভের জন্য পার্লামেন্টের কাছে দরবার করেন । ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনও নানা রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দাবি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সামনে পেশ করেন । প্যারীচাঁদ মিত্র ও রামগোপাল ঘোষ প্রমুখ নেতারা সিভিল সার্ভিস সমেত সব ধরনের সরকারি চাকরির দরজা ভারতীয়দের জন্য খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানান । দ্বারকানাথ ঠাকুর সুপ্রীম কোর্ট ও মফঃস্বল আদালতে জুরি প্রথা প্রবর্তনের দাবি করেন । মিতাক্ষরা আইনের উল্লেখ করে প্রসন্নকুমার ঠাকুর প্রমাণ করে দেখিয়ে দেন যে, ভারতে জুরিপ্রথা নতুন কোনো ব্যবস্থা নয় ।
ইন্ডিয়া লিগ (Indian League) :
ভারতীয়দের মধ্যে জাতীয়তাবোধ ও রাজনৈতিক চেতনা জাগিয়ে তোলার উদ্দেশ্যে হিন্দু মেলার অবদানও কম নয় । এই মেলায় নানা দ্রব্যের প্রদর্শনীর সঙ্গে দেশাত্মবোধক গান, জাতীয় ভাবোদ্দীপক নাটক, বক্তৃতা, আলোচনা সভার আয়োজন করা হত । প্রতিবছর এই মেলার আয়োজন হত এবং এটি মোটামুটি উনবিংশ শতাব্দীর আশির দশক পর্যন্ত চলেছিল । একই উদ্দেশ্য নিয়ে শিশিরকুমার ঘোষ ও কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ বাংলার কয়েক জন ব্রিটিশ রাজনীতি সচেতন নেতা ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে ইন্ডিয়া লিগ নামে এক সংস্থা গড়ে তোলেন । ইংল্যান্ডে প্রকাশিত সংবাদপত্র একে ভারতীয়দের রাজনৈতিক জাগরণের প্রথম ইঙ্গিত বলে অভিহিত করেছিল । ইন্ডিয়া লিগের দাবি ছিল পুরবাসীর দ্বারা পৌর প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের নির্বাচন, কারিগরি শিক্ষায়তনের প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি । এছাড়া জনগণের মধ্যে রাজনৈতিক চেতনার সঞ্চার এবং ভারতীয়দের রাজনৈতিক দাবি দাওয়ার প্রতি তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ ছিল এই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ।
ভারতসভা (Indian Association) :
ঊনিশ শতকে ভারতে যেসব রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে ওঠে সেগুলির মধ্যে 'ভারতসভা' বা 'Indian Association' বিশেষ উল্লেখযোগ্য । ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দের ২৬শে জুলাই কলকাতার অ্যালবার্ট হলে (বর্তমানে কলেজ স্ট্রিটের কফি হাউসে) সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, আনন্দমোহন বসু, শিবনাথ শাস্ত্রী, দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখের উদ্যোগে 'ভারতসভা' বা 'Indian Association' প্রতিষ্ঠিত হয় । এই সংগঠনের নামকরণের যুক্তি প্রসঙ্গে সুরেন্দ্রনাথ বলেন, ইতালির মহানেতা ম্যাৎসিনির ইয়ং ইটালির আদর্শে সমগ্র ভারতবাসীকে সংঘবদ্ধ করার লক্ষ্যে এই প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয় 'ভারতসভা' । এই সভায় বেশিরভাগ সদস্যই ছিল শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণি ।
জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার পূর্বে ভারতসভাই ছিল ভারতের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সংগঠন । এই সভার লক্ষ্য ছিল — (i) দেশজুড়ে ব্রিটিশ বিরোধী জনমত গড়ে তোলা, (ii) সর্বভারতীয় রাজনৈতিক স্বার্থকে কেন্দ্র করে ভারতীয়দের ঐক্যবদ্ধ করে তোলা, (iii) হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক ঐক্য অক্ষুন্ন রাখা, (iv) রাজনৈতিক আন্দোলনগুলিতে জনগণকে অংশ গ্রহণ করানো ও এর মাধ্যমে জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটানোর প্রচেষ্টা করা । এই সমস্ত উদ্দেশ্যগুলি পূরণ করার জন্য বাংলার মফসসল জুড়ে ভারতসভার প্রায় ১২৪টি শাখা গড়ে ওঠে । সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে বাংলার বাইরে লখনউ, মিরাট, লাহোর, আমেদাবাদ, মাদ্রাজ প্রভৃতি স্থানে ভারতসভার শাখা গড়ে ওঠে ।
ভারতসভা মধ্যবিত্ত শ্রেণির গণচেতনা প্রতিফলিত করে এবং বাংলার শিক্ষিত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্বের কেন্দ্র হয়ে ওঠে ভারতবাসীর যথার্থ প্রয়োজন মেটায় । অল্পদিনের মধ্যেই ভারত সভা উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব দেখায় । ভারতসভা সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা, মাতৃভাষা সংবাদপত্র আইন, অস্ত্র আইন, ইলবার্ট বিলসহ একাধিক বিষয়ে আন্দোলন গড়ে তোলে ।
লর্ড লিটন -এর আমলে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসার বয়সসীমা ২১ বছর থেকে কমিয়ে ১৯ বছর করা হলে, এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ভারতসভা আন্দোলন গড়ে তোলে । সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় সারা ভারতে বক্তৃতা করে জনমত সংগঠিত করেন । এই সভার তরফে ইংল্যান্ড ও ভারতে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা গ্রহণ ও পরীক্ষার্থীর বয়স ২২ করার দাবি তোলা হয় । ইংরেজ সরকার ভারতীয়দের এই দাবির অনেকটাই মেনে নেয় ও সরকারি সিধান্ত পরিবর্তিত হয় ও বয়সসীমা ২১ বছর বহাল থাকে ।
লর্ড ক্যানিং -এর আমলে প্রবর্তিত অস্ত্র আইনকে লর্ড লিটন কঠোরভাবে বলবৎ করেন । ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে লর্ড লিটন 'মাতৃভাষা সংবাদপত্র আইন' বা 'ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্ট' পাস করে এবং এই আইনের মাধ্যমে দেশীয় ভাষায় প্রকাশিত পত্রপত্রিকাগুলির ওপর নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করে । অস্ত্র আইন দ্বারা ব্রিটিশ সরকারের অনুমতি ছাড়া ভারতীয়দের আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অধিকার নিষিদ্ধ হয় । ভারতসভা এই দুটি কালা আইনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে আন্দোলন গড়ে তোলে । কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় -এর সভাপতিত্বে কলকাতার টাউন হলে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয় । শেষ পর্যন্ত লর্ড রিপন -এর আমলে ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে মাতৃভাষা সংবাদপত্র আইন ও অস্ত্র আইন দুটি প্রত্যাহৃত হয় ।
১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে লর্ড রিপন -এর আমলে তার আইনসচিব কোর্টনি ইলবার্ট একটি বিল তৈরি করেন । এই বিলের মাধ্যমে ইউরোপীয় ও ভারতীয় বিচারকদের সমমর্যাদা ও সমক্ষমতার অধিকার দান করা হয় । ইতিপূর্বে কোনো ভারতীয় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা দায়রা জজের ইংরেজদের বিচার করার অধিকার ছিল না । ইলবার্ট বিলে সেই অধিকার দেওয়া হলে ইউরোপীয়রা এর তীব্র বিরোধিতা করে । কলকাতা হাইকোর্টের ব্যারিস্টার ব্রানসন -এর নেতৃত্বে ইংরেজরা 'ডিফেন্স অ্যাসোসিয়েশন' প্রতিষ্ঠা করে এই বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে । ইউরোপীয়দের এই আন্দোলনের প্রত্যুত্তরে ১৮৮৩-৮৪ খ্রিস্টাব্দে ভারতসভার পরিচালনায় ইলবার্ট বিল আন্দোলন শুরু হয় । যদিও শেষপর্যন্ত ব্রিটিশ সরকার ইউরোপীয়দের দাবি মেনে নিয়ে এই বিলের বেশকিছু ধারা সংশোধন করে । ভারতসভার আন্দোলন ব্যর্থ হলেও তাদের আন্দোলনের জেরে জনমানসে ইংরেজ ও ভারতীয়দের মধ্যে জাতিবৈষম্য প্রকট হয়ে ওঠে ।
ভারতসভার নেতৃবৃন্দের সহায়তায় এবং সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সক্রিয় উদ্যোগে ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলন বা অল ইন্ডিয়া ন্যাশনাল কনফারেন্স নামে মহাসভা অনুষ্ঠিত হয় । ড. অমলেশ ত্রিপাঠি সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলনকে 'জাতীয় কংগ্রেসের মহড়া' বলে অভিহিত করেছেন । কেন না এই সম্মেলনের প্রেরণায় অ্যালান অক্টোভিয়ান হিউমের উদ্যোগে ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হয় । ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় জাতীয় কংগ্রেসের দ্বিতীয় অধিবেশন বসলে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর অনুগামীদের নিয়ে অধিবেশনে যোগদান করেন । ফলে জাতীয় কংগ্রেস অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে ওঠে ।
****
- 8468 views