বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষিত ও স্বাধীনতা আন্দোলন-গান্ধীর অভ্যুত্থান
অধ্যায় ভিত্তিক মডেল প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন (১):প্রথম বিশ্বযুদ্ধের চারটি কারণ উল্লেখ করো। জাতি সংঘ বা ‘লিগ অফ নেশনস্’কেন প্রতিষ্ঠি হয়?
উত্তরঃ প্রথম অংশঃ
দ্বিতীয় অংশঃ জাতিসংঘ বা ‘লিগ অফ নেশনস্’প্রতিষ্ঠার কারণঃ
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর আন্তর্জাতিক শান্তি রক্ষার উদ্দেশ্যে ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে জাতিসংঘ বা লিগ অফ নেশনস্ প্রতিষ্ঠা করা হয়। লিগ অফ নেশনস্ প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল-
১) পারস্পারিক সহযোগিতার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা।
২) আন্তর্জাতিক আইন, বিধিনিষেধ, চুক্তি সমস্ত দেশই যথাযত ভাবে মেনে চলে কি না সেদিকে লক্ষ রাখা।
প্রশ্ন (২):প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির সম্রাট কে ছিলেন? এই যুদ্ধের প্রত্যক্ষ কারণ কী? এর ফলাফল কী হয়ে ছিল?
উত্তরঃ প্রথম অংশঃ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির সম্রাট ছিলেন কাইজার দ্বিতীয় উইলিয়াম।
দ্বিতীয় অংশঃ
তৃতিয় অংশঃ
প্রশ্ন (৩):প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে ইউরোপীয় দেশগুলির অর্থনৈতিক অবস্থা কীরূপ ছিল? ইতালিতে ও জার্মানিতে গণতন্ত্রের পতন হয় কেন? ইতালিতে কোন দল রাজনোইতিক ক্ষমতা লাভ করে।
উত্তর প্রথম অংশঃ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপীয় দেশগুলির অর্থনৈতিক অবস্থাঃ
বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ১)মুদ্রাস্ফীতি, ২)শিল্পে অচলাবস্থা, ৩)কৃষিজাত পণ্যের মূল্য হ্রাস, ৪)অর্থনৈতিক মন্দা, ৫)বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধি প্রভৃতি কারণে ইউরোপীয় দেশগুলির অর্থনৈতিক অবস্থা প্রায় ভেঙে পড়ে ছিল।
দ্বিতীয় অংশঃ ইতালি ও জার্মানিতে গণতন্ত্রে পতনের কারণঃ
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের তাৎক্ষণিক ফল ছিল গণতন্ত্রের প্রসার, কিন্তু এই ব্যবস্থাও চিরস্থায়ী হয়নি। কয়েক বছরের মধ্যেই ইউরোপের বহু দেশে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার পতন হয় এবং একনায়কতন্ত্রী রাষ্ট্র গড়ে উঠতে থাকে। ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে ইউরোপে ৩৫টির ও বেশি দেশে গণতান্ত্রিক সরকার ছিল, কিন্তু ১৯৩৮ সালে তা কমে ১৭টি দেশে পৌঁছায়। এই প্রসঙ্গে অধ্যাপক গ্যাথন হার্ডি লিখেছেন যে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের বহু দেশে ‘গণতন্ত্রের মড়ক, দেখা দেয়-জার্মানি ও ইতালিতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী কালে ১)নব প্রতিষ্ঠিত সরকারগুলির দুর্বলতা, ২)গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের অভাব, ৩)দূরদর্শী রাষ্ট্রনেতার অভাব, ৪)অর্থনৈতিক মহামন্দা, ৫)জাতিসংঘের ব্যররথতা, ৬)আর্থিক সংকট, ৭)খাদ্যাভাব, ৮)শিল্পে অবনতি, মুদ্রাস্ফীতি, বেকারি প্রভৃত আর্থ-সামাজিক সংকট, ৯)সাধারণ মানুষের হতাশা, ১০)রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে বিরোধ, প্রভৃতি কারণের ফলে জার্মানি ও ইতালিতে ফ্যাসিস্ট দল ও জার্মানিতে নাৎসিদল দেশের শাসনক্ষমতা দখল করে নিয়েছিল, যার ফলশ্রুতিতে এই দুটি দেশে গণতন্ত্রের পতন ঘটে এবং ফ্যাসিবাদী ও নাৎসিবাদী একনায়কতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা হয়।
তৃতীয় অংশঃ
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে মুসোলিনির নেতৃত্বাধীন ফ্যাসিস্ট দল ইটালিতে রাজনৈতিক ক্ষমতা লাভ করে।
প্রশ্ন (৪):প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপ ও ভারতে কী কী পরিবর্তন ঘটেছিল?
উত্তরঃ দীর্ঘ চার বছর ধরে ধ্বংসলীলা চলার পর ১৯১৮ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটে। এই যুদ্ধ ইউরোপ তথা বিশ্বের আর্থ-সামাজিক তথা রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এক সুদূরপ্রসারী পরিবর্তনের সূচনা করে। এই পরিবর্তনগুলি হল-
প্রথম অংশঃ প্রথমবিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে নানা পরিবর্তনঃ
১) বৃহৎ ইউরোপীয় সাম্রাজ্যেগুলির পতন এবং নতুন নতুন রাষ্ট্রের উদ্ভবঃ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ফলশ্রুতিতে ইউরোপের চারটি বড়ো সাম্রাজ্যের পতন ঘটে, যেমনঃ ১)অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি সাম্রাজ্য, ২)তুরষ্ক সাম্রাজ্য, ৩)রুশ সাম্রাজ্য ও ৪)জার্মান সাম্রাজ্য। ইউরোপ মহাদেশের এই সমস্ত রাষ্ট্রিয়-পুনর্গঠনের ফলে ফিনল্যান্ড, এস্তোনিয়া, লাটাভিয়া, লিথুয়ানিয়া, চেকোশ্লোভিয়া, পোল্যান্ড প্রভৃতি অনেক নতুন রাষ্ট্রের উদ্ভব হয় যার ফলে ইউরোপের মানচিত্রে বিরাট পরিবর্তন ঘটে।
২) জাতীয়তাবাদের সাফল্যঃ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে জাতীয়তাবাদের সাফল্য ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম সুফল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তীকালে ইউরোপের যুগোশ্লাভিয়া, পোল্যান্ড, চেকোশ্লাভিয়া, তুরষ্ক, আয়ারল্যান্ড প্রভৃতি দেশে জাতীয়তাবাদ সাফল্য লাভ করে। বল্কান অঞ্চলে নির্যাতিত জাতীয়তাবাদের আংশিক সাফল্য ঘটে।
৩) গণতন্ত্রের জয়ঃ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ইউরোপ মহাদেশের জার্মানি, অস্ট্রিয়া, রাশিয়া, তুরষ্ক প্রভৃতি দেশে রাজতন্ত্রের অবসান ও গণতন্ত্রের উত্থান হয়। জার্মান সম্রাট কাইজার দ্বিতীয় উইলিয়াম হল্যান্ডে পালিয়ে যান এবং জার্মানিতে ‘ভাইমার প্রজাতন্ত্র’প্রতিষ্ঠিত হয়। তুরষ্কের সুলতানকে পদচ্যুত করা হয় এবং কামাল পাশার নেতৃত্বে তুরস্কে গণপ্রজাতান্ত্রিক শাসন-ব্যবস্থা চালু হয়।
৪) ব্রিটেন ও ফ্রান্সের প্রতিপত্তি হ্রাসঃ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে যুদ্ধ-বিদ্ধস্ত ব্রিটেন ও ফ্রান্স বিশ্বরাজনীতিতে তাদের পূর্ব প্রতিপত্তি হারিয়ে ফেললে সোভিয়েত রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেই স্থান দখল করে নেয়।
৫) গণতন্ত্রের পতন ও একনায়কতন্ত্রের উত্থানঃ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা চালু হলেও (১)গণতন্ত্রের মড়ক, (২)নব প্রতিষ্ঠিত গণতান্ত্রিক সরকারগুলির দুর্বলতা, (৩)গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের অভাব, (৪)দূরদর্শী জনপ্রিয় রাষ্ট্রনেতার অভাব, (৫)অর্থনৈতিক মহানন্দার আঘাত, (৬)জাতিসংঘের ব্যর্থতা প্রভৃতি কারণে ইউরোপের অনেক দেশে গণতন্ত্রের বিপর্যয় এবং একনায়কতন্ত্রের উত্থান হয় (যেমন জার্মানি, ইতালি প্রভৃতি দেশ)।
৬) আন্তর্জাতিকতাবাদের প্রসার-জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠাঃ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ইউরোপ তথা সারা বিশ্বে আন্ত্ররজাতিকতাবাদের প্রসার ঘটে। এই সময় কালে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তাবিধানের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসনের উদ্ভাবিত ‘চোদ্দোদফা নীতি’-র ওপর ভিত্তি করে ‘লিগ ওফ নেশনস’বা জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠা হয়। বিশ্বের প্রতিটি দেশ যাতে আন্তর্জাতিক আইন, বিধি নিষেধ ও চুক্তি মেনে চলে সে ব্যাপারে লক্ষ রাখাই ছিল এই সংস্থা প্রতিষ্ঠার মুখ্য উদ্দেশ্য।
দ্বিতীয় অংশঃ প্রথগম বিশ্বযুদ্ধের পর ভারতে নানা পরিবর্তনঃ
১) ভারতীয় অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব-অর্থনৈতিক সংকটঃ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ফলে ভারতে গভীর অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রয়জনিয় সব জিনিসপত্রের দাম খুব বেড়ে যায়। যুদ্ধের পর দেখা দেয় অর্থনৈতিক মন্দা। বিদেশি জিনিসপত্রের আমদানি আবার শুরু হয় ও ভারতীয় শিল্পজাত জিনিসপত্রের ওপর চড়া হারে শুল্ক ধার্য করা হয়, ফলে ভারতের শিল্পসংস্থাগুলির বেশিরভাগই লোকসান সামলাতে না পেরে বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে-১)ভারতে অসংখ্য শিল্প-শ্রমিক ও মজুর বেকার হয়ে পড়ে। ২)কৃষিজমির ওপর খাজনার হার বেড়ে যাওয়ায় কৃষকদের দারিদ্র চরমে ওঠে। ৩)যুদ্ধ শেষ হলে ভারতীয় সেনা ও সামরিক কর্মচারীদের বেশির ভাগই ছাঁটাই হয়ে বেকারে পরিণত হয়।
২) ভারতবাসীর হতাশা ও অসন্তোষঃ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারত ছিল ব্রিটেনের প্রধান উৎস। যুদ্ধের পর রাজনৈতিক সুযোগসুবিধা আদায় করা সহজ হবে- এই আশায় ভারতের জাতীয়তাবাদী নেতারা ব্রিটেনকে সবরকমভাবে সাহায্য করেছিলেন। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জয়ী হয়ে ব্রিটেন সেই প্রতিশ্রুতি পালনে মোটেই উৎসাহী হয়নি, ফলে এশিয়া ও আফ্রিকার অন্যান্য পরাধিন জাতিগুলির মতো ভারতবাসীদের মনেও হতাশা ও ক্ষোভ দেখা দেয়।
৩) ১৯১৯ খ্রস্টাব্দের ভারত শাসন আইন (মন্টেগু-চেমস্ফোর্ড শাসন সংস্কার)ঃ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ভারতবাসীদের খুশি করার উদ্দেশ্যে ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইন পাস করা হয়। কিন্তু এই আইনে ভ্রতকে স্বায়ত্বশাসন প্রদান করার কোনো উল্লেখ না থাকায় এই আইন ভারতীয়দের সন্তুষ্ট করতে পারেনি।
৪) ভারতীয় মুসলমান সমাজের ক্ষোভ- খিলাফৎ আন্দোলনঃ তুরষ্ক সাম্রাজ্যের প্রধান ছিলেন খালিফা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানিদের পক্ষ অবলম্বন করার অপরাধে ব্রিটেন তথা মিত্রশক্তি খালিফাকে তাঁর পদ থেকে অপসারণ করে এবং তুরষ্ক সাম্রাজ্যের বিচ্ছেদ ঘটায়। তুরষ্কের সুলতানের অবমাননার প্রতিবাদে বিংশ শতাব্দীর প্রথম পর্বে ভারতীয় মুসলমানরা যে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন শুরু করে তা খিলাফৎ আন্দোলন নামে পরিচিত। তুরষ্কের খলিফাকে তাঁর পদে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিকে কেন্দ্র করে ভারতবর্ষে খিলাফৎ আন্দোলন প্রবল আকার ধারণ করে। ইতিমধ্যে ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে মুস্তাফা কামাল তুরষ্কের খালিফাতন্ত্রের অবসান ঘটালে ভারতে খিলাফৎ আন্দোলন অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ায় এই আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়।
প্রশ্ন (৫):খিলাফৎ আন্দোলন কী? এই আন্দোলনের দুজন নেতার নাম কর। এই আন্দোলনের লক্ষ্য কী ছিল?
উত্তরঃ প্রথম অংশঃ তুরষ্কের সুলতানের অবমাননার প্রতিবাদে বিংশ শতাব্দীর প্রথম পর্বে ভারতিয় মুসলিম যে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন শুরু করে, তা খিলাফৎ আন্দোলন নামে পরিচিত।
দ্বিতীয় অংশঃ খিলাফৎ আন্দোলনের দুই জন নেতার নাম মহহ্মদ আলি জিন্না ও সওকত আলি।
তৃতীয় অংশঃ খিলাফৎ আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল-
১) তুরষ্কের সুলতানকে মুসলিম দুনিয়ার ‘খলিফা’পদে পুনর্বহাল করা।
২) মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখা।
৩) হিন্দু-মুসলিম ঐক্য স্থাপন।
৪) ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলা।
৫) সরকার প্রদত্ত উপাধি ও খেতাব প্রত্যাখ্যান করা।
৬) সরকারি খাজনা ও কর প্রদান করতে অস্বীকার করা।
প্রশ্ন (৬):গান্ধিজির নেতৃত্বে ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ধারার কি রূপান্তর ঘটে? চম্পারণ সত্যাগ্রহের গুরুত্ব কী?
উত্তরঃ প্রথম অংশঃ
প্রশ্ন (৭):রাওলাট আইনকে কালা কানুন বলা হয় কেন? জালিয়ানওয়ালাবাগে কী ঘটেছিল এবং এই ঘটনার ফলাফল কী হয়েছিল?
উত্তর প্রথম অংশঃ রাওলাট আইনে সরকার বিরোধী যে-কোনো প্রচারকার্যকে দন্ডনীয় অপরাধ বলে চিহ্নিত করা হয় এবং এই আইনে কোনো রকম সাক্ষপ্রমাণ ছড়াই যে-কোনো সন্দেহভাজন ব্যাক্তিকে বিনা পরোয়ানায় ও বিনাবিচারে গ্রেফতার, আটক ও ঘরবাড়ি তল্লাসির অধিকার সরকারকে দেওয়া হয়। এক কথায় বলা যায়- এই আইনের মাধ্যমে ভারতীয়দের ন্যায়বিচার লাভের অধিকার সম্পূর্ণভাবে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। তি রাওলাট আইনকে কালা কানুন বলা হয়।
দ্বিতীয় ও তৃতীয় অংশঃ
প্রশ্ন (৮):কোন সময়কে গান্ধী যুগ বলা হয়? অসহযোগ আন্দোলনের মুল লক্ষ্য কী ছিল? কেন এই আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়?
উত্তর প্রথম অংশঃ ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালকে গান্ধী যুগ বলা হয়।
দ্বিতীয় অংশঃ অসহযোগ আন্দোলনের মূল লক্ষ্যঃ
১) পাঞ্জাবের জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যা কান্ডের প্রতিকার।
২) খিলাফৎ সমস্যার সুষ্ঠ সমাধান।
৩) স্বরাজ অর্জন। সেই সময়ে স্বরাজ অর্জনের অর্থ পরিষ্কার নাথাকায় তৃতীয় লক্ষ্যটি পরে যুক্ত হয়ে ছিল। তবে এই প্রসঙ্গে গান্ধিজি বলে ছিলেন যে, যদি তাঁর নির্দেশিত অহিংস অসহযোগ অনুসরণ করা হয় তাহলে এক বছরের মধ্যে স্বরাজ অর্জন করা সম্ভব হবে।
তৃতীয় অংশঃ
প্রশ্ন (৯):গান্ধিজি অসহযোগ আন্দোলনের সঙ্গে খিলাফত আন্দোলনকে যুক্ত করেছিলেন কেন? অসহযোগ আন্দোলনকে কী ব্যর্থ বলা যায়?
উত্তর প্রথম অংশঃ
দ্বিতীয় অংশঃ
প্রশ্ন (১০):১৯২০ খ্রিস্টাব্দের অসহযোগ আন্দোলনের মুল লক্ষ্য কী ছিল? এই আন্দোলনের গুরুত্ব উল্লেখ করো।
উত্তর প্রথম অংশঃ
১৯২০ খ্রিস্টাব্দের আগষ্ট মাসে কলকাতায় অনুষ্ঠিত কংগ্রেসের বিশেষ অধিবেশনে অসহযোগ আন্দোলনের প্রস্তাব গৃহীত হয়। গান্ধিজিকে এই আন্দোলন পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। নিম্ন লিখিত উদ্দেশ্য গুলি পরিপূরণের জন্য গান্ধিজি সহযোগ আন্দোলন শুরু করেনঃ
১) ব্রিটিশ সরকারের দমনমূলক আইনগুলি, বিশেষভাবে কুখ্যাত রাওলাট আইনের বিরোধিতা করা।
২) খিলাফৎ সমস্যার যথাযত সমাধানের দাবি জানানো।
৩) এক বছরের মধ্যে স্বরাজ অর্জন করা এবং
৪) জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যা কান্ডের প্রতিবাদ জানানো।
সংক্ষেপে বলা যায় যে, সম্পূর্ণ অহিংস পদ্ধতিতে সরকারের সঙ্গে অসহযোগিতা করে ভারতের ব্রিটিশ শাসনকে ব্যর্থ করে দেওয়াই ছিল গান্ধিজির খ্রিস্টাব্দের অসহযোগ আন্দোলনের মূল লক্ষ্য।
দ্বিতীয় অংশঃ
প্রশ্ন (১১):গান্ধিজি কেন অসহযোগ আন্দোলনের সঙ্গে খিলাফৎ আন্দোলনকে যুক্ত করেন? অসহযোগ আন্দোলনের উদ্দেশ্য গুলি কী ছিল? অসহযোগ আন্দোলন কী ভাবে শেষ হয়?
উত্তর প্রথম অংশঃ
দ্বিতীয় অংশঃ
তৃতীয় অংশঃ
প্রশ্ন (১২):অসহযোগ আন্দোলন ও খিলাফৎ আন্দোলন প্রত্যাহারের কারণ উল্লেখ করো। অসহযোগ আন্দোলনের গুরুত্ব আলোচনা করো।
উত্তর প্রথম অংশঃ অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহারের কারণঃ
খিলাফৎ আন্দোলন প্রত্যাহারের কারণঃ
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর তুরষ্কের খালিফাকে তাঁর পদে ফিরিয়ে দেওয়াকে কেন্নদ্র করে ভারতবর্ষে খিলাফৎ আন্দোলন চরম আকার ধারণ করে। ইতিমধ্যে ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে মুস্তাফা কামাল তুরষ্কে খালিফাতন্ত্রের অবসান ঘটালে ভারতে খিলাফত আন্দোলন অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ায় এই আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়।
দ্বিতয় অংশঃ
প্রশ্ন (১৩):সাইমন কমিশন কেন গঠিত হয়? এই কমিশন সম্পর্কে ভারতীয়দের প্রতিক্রিয়া কী ছিল?
উত্তর প্রথম অংশঃ সিমন কমিশন গঠনের কারণঃ
দ্বিতীয় অংশঃ সাইমন কমিশনের বিরুদ্ধে ভারতের প্রতিক্রিয়াঃ
১)সাইমন কমিশনের গঠন ছিল ত্রুটি পূর্ণ কারণ এই কমিশনে কোনো ভারতীয় সদশ্য ছিল না। এই কমিশনের সাত জনই ছিলেন শ্বেতাঙ্গ। ভারতের শাসনতন্ত্র সংস্কারের উদ্দেশ্যে গঠিত সাইমন কমিশনের গঠন ও কাজের ধরন ছিল ভারতীয়দের কাছে জাতীয় অপমান স্বরূপ- এটাই ছিল এই কমিশনের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের ক্ষোভের প্রধান কারণ, তাই সাইমন কমিশন ভারতীয়দের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়। ২)সাইমন কমিশনে কোনো ভারতীয় সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত না কারায় ভারতের জাতীয় কংগ্রেস এই কমিশন বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয়। ৩)১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে ফেব্রুয়ারি মাসে সাইমন কমিশনের সদস্যবৃন্দ ভারতে এসে পৌঁছুলে ভারতের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ প্রদর্শিত হয়। লাহোরে সাইমন কমিশন বিরোধী বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় পুলিশ আক্রমণে জননায়ক লালা লাজপত রায় গুরুতরভাবে আহত হন এবং পরে দেহত্যাগ করেন।
সাইমন কমিশনের বিরোধী আন্দোলনের ফলাফলঃ
১)সাইমন কমিশন বিরোধী আন্দোলন সারা ভারতে উত্তাল আকার ধারণ করলেও ব্রিটিশ সরকার এই সব প্রতিবাদে কোনো কর্ণপাত করেনি। সাইমন কমিশন যথারীতি দেশব্যাপী সমীক্ষা চালায় এবং দু’বছরের মধ্যে ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে মে মাসে ব্রিটিশ সংসদে তাদের প্রতিবেদন পেশ করে। ২)সাইমন কমিশনের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করেই ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইন প্রবর্তিত হয়। অন্যদিকে, ৩)সাইমন কমিশন বিরোধী গণান্দোলন ক্রমে আইন অমান্য আন্দোলনে পরিণত হয়।
প্রশ্ন (১৪):স্বরাজ দলের একজন নেতার নাম উল্লেখ করো। সাইমন কমিশন কেন ভারতে আসে? ভারতীয়রা এই কমিশনের প্রতি কীরূপ মনোভাব ব্যক্ত করেছিলেন?
উত্তর প্রথম অংশঃ স্বরাজ দলের একজন নেতা হলেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ।
দ্বিতীয় অংশঃ
তৃতীয় অংশঃ
প্রশ্ন (১৫):নেহেরু রিপোর্ট কী? ১৯২৯-এর লাহোরের কংগ্রেস অধিবেশনের গুরুত্ব কী? এই সময় ইংরেজরা ভারতীয়দের দাবির প্রতি কী মনোভাব প্রকাশ করে?
উত্তর প্রথম অংশঃ
দ্বিতিয় অংশঃ
তৃতীয় অংশঃ এই সময় ইংরেজ সরকার ভারতীয়দের দাবিগুলি অগ্রাহ্য করে এবং নির্মম দমন নীতির আশ্রয় নেয়।
প্রশ্ন (১৬):নিখিল ভারত ট্রেড ইউনিয়ন কবে গঠিত হয়? এই সংগঠনের প্রথম অধিবেশনে কে সভাপতিত্ব করেন? ‘মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা’কার বিরুদ্ধে কী উদ্দেশ্যে দায়ের করা হয়? আইন অমান্য আন্দোলনে শ্রমিক শ্রেণি কী ভূমিকা গ্রহণ করে?
উত্তর প্রথম অংশঃ ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের ৩১শে অক্টোবর বোম্বাই নগরে নিখিল ভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস নামে একটি সর্বভারতীয় কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠন গঠিত হয়।
দ্বিতীয় অংশঃ এই সংগঠনের প্রথম অধিবেশনের সভাপতি ছিলেন লালা লাজপত রায়।
তৃতীয় অংশঃ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের ২০শে মার্চ ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রায় ৩৩ জন কমিউনিস্ট নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তাঁদের বিরুদ্ধে মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা শুরু করা হয়।
চতুর্থ অংশঃ আইন মান্য আন্দোলনে শ্রমিক শ্রেণির ভূমিকাঃ
অসহযোগ আন্দোলনের সময় ভারতে শ্রমিক আন্দোলনের যে স্বতঃস্ফূর্ত চেহারা দেখা গিয়ে ছিল; বিশেষ কিছু স্থান ও সময় ছাড়া আইন অমান্য আন্দোলনে তা দেখা যায়নি। তাছাড়া ভারতের কমিনিস্ট পার্টি থেকে শ্রমিকদের আইন অমান্য আন্দোলনে যোগদন করার আহ্বান জানানো হয়নি।
- 151 views