শ্রীরঙ্গপত্তমের সন্ধির অপমানজনক শর্ত টিপু সুলতান ভুলতে পারে নি । কিছুদিনের মধ্যে আবার তিনি ব্রিটিশ বিরোধী কার্যকলাপে ব্যস্ত হয়ে পারেন । টিপু সুলতান মরিশাসের ফরাসি শাসক ম্যালারটিকের কাছে, কাবুলের অধিপতি জামান শাহের কাছে, তুরস্কের ...

গভর্নর জেনারেল লর্ড ওয়েলেসলি [Lord Wellesley] অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি প্রবর্তন করেন । ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিস্তারের জন্য লর্ড ওয়েলেসলি যে সকল নীতি গ্রহণ করেছিলেন, তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি ...

লর্ড ডালহৌসি একজন পুরোপুরি আগ্রাসী মনোভাবাপন্ন শাসক ছিলেন । তাঁর শাসনকালে (১৮৪৫ - ৫৬ খ্রিস্টাব্দ) ব্রিটিশ সাম্রাজ্য চরম সীমা লাভ করে । স্বত্ববিলোপ নীতি - এই নীতির মূলকথা ছিল এই যে, ইংরেজদের আশ্রিত কোনো রাজা অপুত্রক অবস্থায় মারা গেলে সেই রাজ্য ব্রিটিশ ...

১৭৮২ খ্রিস্টাব্দে হায়দর আলির মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র টিপু সুলতান দ্বিতীয় ইঙ্গ মহীশূর যুদ্ধের নেতৃত্ব হাতে নেন । ইংরেজদের প্রতিহত করাই ছিল টিপু সুলতানের একমাত্র লক্ষ্য । কিন্তু এর জন্য তাঁকে একা হাতেই ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়েছিল, কারণ ...

প্রথম ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধে ১৭৬৯ খ্রিস্টাব্দে স্বাক্ষরিত মাদ্রাজ চুক্তির (Madras Treaty) শর্ত ইংরেজগণ পরবর্তীকালে পালন করেন নি । ১৭৭১ খ্রিস্টাব্দে মারাঠাগণ মহীশূর আক্রমণ করলে প্রথম ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধে স্বাক্ষরিত মাদ্রাজ চুক্তির শর্ত অনুযায়ী হায়দার আলি ...

হায়দর আলির সঙ্গে ইংরেজদের খুব একটা ভাল সম্পর্ক ছিল না । হায়দর আলির শক্তি বৃদ্ধিতে ইংরেজরাও ঈর্ষান্বিত হয়েছিলেন । হায়দর আলি ফরাসিদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে চলতেন । তৃতীয় কর্ণাটকের যুদ্ধের সময় হায়দর ৪,০০০ অশ্বারোহী ...

রবার্ট ক্লাইভের পর ভেরেলস্ট এবং কার্টিয়ার স্বল্প সময়ের জন্য বাংলার গভর্নর নিযুক্ত হন । ওই সময়ে তাঁদের ঔদাসীন্যে বাংলার রাজনৈতিক ক্ষেত্রে চরম অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় । এই অবস্থায় ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে ওয়ারেন হেস্টিংস বাংলার ...

দ্বিতীয় ইঙ্গ-মারাঠা যুদ্ধে চূড়ান্তভাবে পরাজিত হওয়ার পরও পেশোয়া দ্বিতীয় বাজীরাও ইংরেজ বিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত থাকায় গভর্নর লর্ড হেস্টিংস পেশোয়া দ্বিতীয় বাজিরাও-কে এক নতুন অপমানজনক সন্ধি স্বাক্ষর করার জন্য বাধ্য করলে তিনি বিদ্রোহী হন । ...

দ্বিতীয় মাধব রাওয়ের সময় থেকেই পেশোয়ার কর্তৃত্ব কমে যেতে থাকে । এই সময় মারাঠাশক্তি চার মারাঠা সামন্ত রাজা যথা—গোয়ালিয়রের সিন্ধিয়া, বরোদার গায়কোয়াড়, ইন্দোরের হোলকার এবং নাগপুরের ভোঁসলে— এদের মধ্যে বিভক্ত হয়ে যায়। ...

পাণিপথের তৃতীয় যুদ্ধে ১৭৬১ খ্রিস্টাব্দে আহম্মদ শাহ আবদালির কাছে মারাঠাদের পরাজয়ের পর পেশোয়া বালাজি বাজিরাও প্রাণ ত্যাগ করেন । তখন তাঁর ১৭ বছর বয়স্ক পুত্র প্রথম মাধব রাও [১৭৬২-১৭৭২] পেশোয়া হন ..

১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দ: ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতের পূর্ব ও পশ্চিম উপকূল বরাবর কয়েকটি ঘাঁটি স্থাপন করে প্রথম ব্যবসা-বাণিজ্য ও এদেশ থেকে কাঁচামাল সংগ্রহের কাজ শুরু করে, পরে মোগল সাম্রাজ্যের দুর্বলতার সুযোগে রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের

চূড়া ও শিখরের আকৃতির বিচারে গুপ্ত যুগের পর থেকে প্রাচীন যুগের শেষ পর্যন্ত সময়ের শিল্পরীতিকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে । ইন্দো-এরিয়ান বা উত্তর ভারতীয় শিল্পরীতি এবং দক্ষিণ ভারতীয় দ্রাবিড়ীয় শিল্পরীতি । মহাবলী পুরম বা মামল্লপুরমের রথগুলি পল্লব শিল্পরীতির সবচেয়ে বড় উদাহরণ ...

গুপ্তযুগের আর্যভট্ট, বরাহমিহির, গর্গ, লাটদেব ও আর্যভট্টের শিষ্যগণ গণিত ও জ্যোতির্বিদ্যায় মৌলিক অবদান রেখেছিলেন । পৃথিবীর আহ্নিকগতি ও বার্ষিকগতির কথা আর্যভট্টের কাছ থেকে আমরা জানতে পারি । আর্যভট্টের লেখা ‘সুর্যসিদ্ধান্ত’ একটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ ...

প্রাচীন ভারতে সংস্কৃত ভাষায় সাহিত্যের স্বর্ণভান্ডার ছিল । এ ছাড়া পালি,প্রাকৃত,বাংলা,হিন্দি,তামিল প্রভৃতি ভাষাতেও উল্লেখযোগ্য সাহিত্য রচিত হয়েছিল । বৈদিক সাহিত্য, রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণ, স্মৃতি প্রভৃতি কালজয়ী সাহিত্য সংস্কৃত সাহিত্যকে প্রভূতভাবে প্রভাবিত করেছিল । ...

ধর্ম : একটা সময় ছিল যখন প্রাচীন ভারতের ইতিহাসকে ‘হিন্দুযুগ’ বলে অভিহিত করা হত । প্রাচীন ভারতে বৈদিক, ব্রাহ্মণ্য বা হিন্দুধর্মই একমাত্র ধর্ম ছিল না । বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের জন্ম প্রাচীন ভারতের ধর্মীয় জীবনকে জটিল করেছিল । কোনো সময় বৌদ্ধধর্ম, আবার কোনো সময় হিন্দু ধর্ম ...

ভারতীয় সামন্ততন্ত্র একটি অত্যন্ত ব্যাপক, জটিল ও বিতর্কিত বিষয় । সাধারণত ‘সামন্ততন্ত্র’ শব্দটি মধ্যযুগে ইউরোপের ক্ষেত্রে প্রযুক্ত হয়ে থাকে । বর্বর আক্রমণের এক বিশেষ প্রেক্ষাপটে নবম শতকে এই প্রতিষ্ঠানটি বিকশিত হয়েছিল মূলত পশ্চিম ইউরোপে । ভূমিকেন্দ্রিক ও ভূমিনির্ভর ...

প্রাচীন ভারতে কৃষিই ভারতের অধিকাংশ মানুষের জীবিকা ছিল । আর্যসভ্যতা ছিল গ্রামকেন্দ্রিক এবং আর্য অর্থনীতির মূল ভিত্তি ছিল কৃষি । ঋকবৈদিক যুগে পশুচারণই ছিল আর্যদের প্রধান উপজীবিকা এবং গো-সম্পদ ছিল ধনসম্পত্তির মাপকাঠি । ধনী ব্যাক্তিকে বলা হত ‘গোমৎ’ । ...

বৈদিক যুগে নারীর স্থান: প্রাচীন ভারতে নারীর স্থান নিয়ে বিতর্ক আছে । সাধারণভাবে বলা হয় বৈদিক যুগে নারীর স্থান ছিল খুব উপরে । পিতৃতান্ত্রিক সমাজে কন্যাসন্তানের জন্ম অনভিপ্রেত হলেও তার যত্ন ও লালনপালনে কোনো ত্রুটি থাকত না । ঘোষ, অপালা, বিশ্ববারার ...

বৈদিক যুগ : আর্যরা প্রথম দিকে যাযাবর ছিল । পরে তারা আগুন লাগিয়ে জঙ্গল পরিষ্কার করে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকে। ক্রমশ তারা কৃষিকাজ করতে শিখে । প্রথমের দিকে ব্যক্তিগত উদ্যোগ বলে কিছু ছিল না । সব কিছু ছিল যৌথ । এই সময় ...

মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের পর ভারতে ব্যাকট্রীয়, গ্রীক, শক, পহ্লব, কুষাণ ও আরও পরে হুন প্রভৃতি বিদেশি জাতির আগমনের ফলে ভারতীয় সমাজে তার প্রভাব পড়ে । এইসব বিদেশির মধ্যে অনেকেই ভারতে থেকে যান, বিবাহ করেন এবং ভারতীয় সমাজের অঙ্গীভুত হয়ে যান । ...