প্রশমন ক্রিয়া (Neutralisation)

Submitted by arpita pramanik on Mon, 09/21/2020 - 20:36

প্রশমন ক্রিয়া (Neutralisation)

অ্যাসিড ও ক্ষারের মধ্যে যে বিক্রিয়ার ফলে অ্যাসিড ও ক্ষারের ধর্ম সম্পূর্ণভাবে লোপ পেয়ে লবণ ও জল উৎপন্ন হয় সেই বিক্রিয়াকে প্রশমন ক্রিয়া বলে ।

যেমন তুল্যাঙ্ক পরিমাণ ক্ষার NaOH এর সঙ্গে তুল্যাঙ্ক পরিমাণ অ্যাসিড HCl এর বিক্রিয়ায় NaCl লবণ ও জল উৎপন্ন হয় । উৎপন্ন দ্রবণে অ্যাসিড বা ক্ষারের কোন ধর্ম প্রকাশ পায় না । এইরূপ বিক্রিয়া কে প্রশমন ক্রিয়া বলে ।

HCl + NaOH = NaCl + H2O

জলীয় দ্রবণে H+ আয়ন উপস্থিত থাকলে দ্রবণের অ্যাসিড ধর্ম প্রকাশ পায় আবার জলীয় দ্রবণে OH-  আয়ন উপস্থিত থাকলে দ্রবণে ক্ষার ধর্ম প্রকাশ পায়। জল তড়িৎ নিরপেক্ষ পদার্থ অর্থাৎ জলের অ্যাসিড ধর্ম বা ক্ষার ধর্ম নেই কারণ জলের প্রতিটি অনু তড়িৎ বিয়োজিত হয়ে সমান সংখ্যক H+ আয়ন এবং OH- আয়ন উৎপন্ন করে ।

H2O = H+ + OH-

জলীয় দ্রবণে তুল্যাঙ্ক পরিমাণে অ্যাসিড ও ক্ষারের দ্রবণ মেশালে অ্যাসিডের H+ আয়ন এর সঙ্গে ক্ষারের OH- আয়ন বিক্রিয়া করে তড়িৎ নিরপেক্ষ ও অবিয়োজিত জলের অনু গঠন করে ।  সুতরাং এক্ষেত্রে অ্যাসিড ও ক্ষারের বিক্রিয়া ফলে উৎপন্ন দ্রবণে অতিরিক্ত পরিমাণে H+ বা OHকোনো আয়নই অতিরিক্ত থাকে না তাই দ্রবণে অ্যাসিড ও ক্ষারের কোন ধর্ম প্রকাশ পায় না । এই দ্রবণে লাল লিটমাস নীল হয় না বা নীল লিটমাস লাল হয় না ।

HCl = H+ + Cl-

NaOH = Na+ + OH-

HCl + NaOH = H+ + Cl- + Na+ + OH-

HCl + NaOH = H2O + Cl- + Na+

প্রশমন বিক্রিয়ায় অ্যাসিডের অ্যানায়ন এবং ক্ষারের ক্যাটায়ন বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে না ।

আয়নীয় তত্ত্ব অনুসারে যে বিক্রিয়ায় অ্যাসিড থেকে উৎপন্ন H+ আয়ন তুল্যাঙ্ক পরিমাণ ক্ষার থেকে উৎপন্ন OH- আয়নের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অবিয়োজিত জলের অনু গঠন করে তাকে প্রশমন ক্রিয়া বলে ।

তুল্যাঙ্ক পরিমাণ: কোন অ্যাসিডের যত ভাগ ওজনে একভাগ ওজনের প্রতিস্থাপনীয় H থাকে, অ্যাসিডের তত ভাগ ওজনকে তুল্যাঙ্ক পরিমাণ অ্যাসিড বলে। আবার ক্ষারের যত ভাগ ওজন এক তুল্যাঙ্ক পরিমাণ অ্যাসিডকে প্রশমিত করে তাকে তুল্যাঙ্ক পরিমাণ ক্ষার বলে ।

*****

Comments

Related Items

অ্যাসিড ও অ্যাসিডের ধর্ম

সব অ্যাসিড কমবেশি অম্ল স্বাদ যুক্ত । লেবু, আমলকি, তেতুল, টক দই প্রভৃতিতে অ্যাসিড আছে । সেই জন্য এদের স্বাদ অম্ল যুক্ত । অ্যাসিড নির্দেশকের (Indicators) বর্ন পরিবর্তন করে । অ্যাসিডের জলীয় দ্রবণ নীল লিটমাসকে লাল করে এবং মিথাইল অরেঞ্জ এর রং কমলা থেকে লাল বর্ণে পরিণত করে । এর দ্বারা অ্যাসিডকে সনাক্ত করা হয় ।

বল এবং বলের পরিমাপ

নিউটনের প্রথম গতিসূত্র থেকে আমরা বলের সংজ্ঞা পাই । এই সূত্র থেকে বোঝা যায় কোন বস্তুর উপর বাইরে থেকে কিছু প্রয়োগ করলে তবেই বস্তুটির অচল বা সচল অবস্থার পরিবর্তন হয় । কোন জড় বস্তু জাড্য ধর্মের জন্য নিজে থেকে নিজের অচল বা সচল অবস্থার পরিবর্তন করতে পারে না ।

পদার্থের জাড্য ধর্ম (Inertia of Matter)

জড়বস্তু যে ধর্মের জন্য নিজের স্থিতিশীল বা গতিশীল অবস্থার পরিবর্তনে বাধা দেয় বা জড়বস্তু যে ধর্মের জন্য নিজে যে অবস্থায় থাকে সেই অবস্থায় থাকতে চায় সেই ধর্মকে পদার্থের জাড্য ধর্ম বা জড়তা (Inertia) বলে । এজন্য নিউটনের প্রথম গতিসূত্রকে জাড্যের সূত্র ( Law of Inertia) বলে।

নিউটনের গতিসূত্র

বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্যার আইজ্যাক নিউটন (Sir Isaac Newton) বস্তুর গতি সম্পর্কে তিনটি মূল্যবান সূত্র আবিষ্কার করেন । এই সূত্র নিউটনের গতিসূত্র নামে পরিচিত । দার্থবিদ্যা (Physics)এবং কারিগরি বিদ্যার অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব হয়েছে নিউটনের গতিসূত্র দ্বারা

প্রেসার কুকার (Pressure Cooker)

প্রেসার কুকার যন্ত্রে জলীয় বাষ্পের চাপ বাড়িয়ে 100°C এর বেশি উষ্ণতায় জলকে ফোটানো হয় । ফলে বেশি উষ্ণতায় খাদ্যদ্রব্য অল্পসময়ের মধ্যে সুসিদ্ধ হয় । অ্যালুমিনিয়াম বা স্টিলের সংকর ধাতু দিয়ে তৈরি শক্ত একটি পাত্র প্রেসার কুকার তৈরীর জন্য ব্যবহার করা হয় যাতে 2 বায়ুমন্ডল চাপের