১৮৫৭ -এর মহাবিদ্রোহকে কি সামন্ত-শ্রেণির বিদ্রোহ বলা যায় ?

Submitted by avimanyu pramanik on Thu, 01/27/2022 - 22:51

প্রশ্ন : ১৮৫৭ -এর মহাবিদ্রোহকে কি সামন্ত-শ্রেণির বিদ্রোহ বলা যায় ?

উঃ- ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের সময় থেকেই এই বিদ্রোহের চরিত্র বা প্রকৃতি নিয়ে বিভিন্ন ধারার ইতিহাসচর্চার নানা ধরনের গবেষণালব্দ মতামত পাওয়া যায় ।

♦ ডঃ সুরেন্দ্রনাথ সেন তাঁর 'Eighteen Fifty Seven' গ্রন্থে এবং ডঃ শশীভূষণ চৌধুরী তাঁর 'Civil Rebellion in the Indian Mutinies, 1857-59' গ্রন্থে এই বিদ্রোহকে সামন্ত শ্রেণির বিদ্রোহ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন । তাঁদের মতে ইংরেজ শাসন ও পাশ্চাত্য সংস্কৃতি সামন্ত প্রভুদের মনে ভীতির সঞ্চার করেছিল এবং তাদের ক্ষমতা খর্ব করেছিল । তাদের হাতেই ছিল বিদ্রোহের নেতৃত্ব । দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে সামনে রেখে তারা পুরাতন রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোর পুনঃপ্রবর্তন করতে চেয়েছিল । ডঃ রমেশচন্দ্র মজুমদারের মতে ১৮৫৭ -এর বিদ্রোহ ছিল ক্ষয়িষ্ণু অভিজাততন্ত্র ও মৃতপ্রায় সামন্তশ্রেণির 'মৃত্যুকালীন আর্তনাদ' ।

♦ অধ্যাপক সুশোভন সরকার উপরোক্ত বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন । তাঁর মতে— নানাসাহেব, লক্ষ্মীবাঈ, হজরৎ মহল, কুনওয়ার সিং প্রমুখরা সামন্ত জমিদার ও তালুকদার হলেও তারা ছিলেন বিদ্রোহের স্বাভাবিক নেতা । ডঃ সরকার এই বিদ্রোহকে অনেকাংশে জাতীয় বিদ্রোহ হিসাবে দেখার পক্ষপাতী ।

♦ আমরা ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহে যেমন সামন্ত শ্রেণির নেতৃত্বদানের বিষয়টিকে অস্বীকার করতে পারি না তেমনি সৈনিক, কৃষক, কারিগর সহ সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত যোগদান ও ভাবাবেগকেও অগ্রাহ্য করতে পারি না । প্রকৃতপক্ষে ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহ নানা সুরে বাঁধা ছিল, যেখানে নানা ধরনের প্রতিরোধ নানারূপে আত্মপ্রকাশ করেছিল ।

*****

Comments

Related Items

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে কী কী পরিবর্তন ঘটেছিল ?

প্রশ্ন:- প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে কী কী পরিবর্তন ঘটেছিল ?

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে ইউরোপীয় দেশগুলির অর্থনৈতিক অবস্থা কীরূপ ছিল ? ইতালিতে ও জার্মানিতে গণতন্ত্রের পতন হয় কেন ?

প্রশ্ন:- প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে ইউরোপীয় দেশগুলির অর্থনৈতিক অবস্থা কীরূপ ছিল ?  ইতালি ও জার্মানিতে গণতন্ত্রের পতন হয় কেন ?

মহারাষ্ট্রের বিপ্লবী আন্দোলনে আর্যবান্ধব সমাজ ও অভিনব ভারতের ভূমিকা আলোচনা কর ।

প্রশ্ন:-  মহারাষ্ট্রের বিপ্লবী আন্দোলনে আর্যবান্ধব সমাজ ও অভিনব ভারতের ভূমিকা আলোচনা কর ।

ক্ষুদিরাম বসু ও লালা হরদয়ালকে মনে রাখা হয় কেন ?

প্রশ্ন :-  ক্ষুদিরাম বসু ও লালা হরদয়ালকে মনে রাখা হয় কেন ?

ক্ষুধিরাম বসুকে মনে রাখার কারণ :

ভারতের সংগ্রামশীল জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে অরবিন্দ ঘোষের ভূমিকা আলোচনা কর ।

প্রশ্ন:  ভারতের সংগ্রামশীল জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে অরবিন্দ ঘোষের ভূমিকা আলোচনা কর ।