Submitted by avimanyu pramanik on Thu, 04/26/2012 - 16:05

মৌলিক অধিকার (Fundamental Rights of Indian Constitution)

ভারতের সংবিধানের তৃতীয় অংশে ১২ থেকে ৩৫ নম্বর ধারায় ভারতের নাগরিকদের মৌলিক অধিকারগুলি উল্লেখ করা হয়েছে । কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের কোনো আইন ভারতের নাগরিকদের মৌলিক অধিকারগুলি ক্ষুন্ন করতে পারে না । এই বৈশিষ্ট্য বিশ্বের খুব কম সংবিধানেই পরিলক্ষিত হয় । ভারতের সংবিধানের মৌলিক অধিকারগুলি লিখিত ভাবে স্বীকৃতিদানের ফলে নাগরিকদের ব্যক্তি স্বাধীনতার নিশ্চয়তা লাভ করেছে । এই অধিকারগুলির মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিকদের ব্যক্তিত্বের পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটে । মূল ভারতীয় সংবিধানে সাত প্রকারের মৌলিক অধিকারের উল্লেখ থাকলেও ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে ৪৪তম সংশোধনীর দ্বারা সম্পত্তির অধিকার কে মৌলিক অধিকার থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে । সরকার অধিকার ভাঙ্গলে সরকারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে তার প্রতিকার করা যায় । বর্তমানে মৌলিক অধিকার ৬টি, যথা—

(১) সাম্যের অধিকার (Right to Equality) : জাতি, ধর্ম, বর্ণ, স্ত্রী, পুরুষ নির্বিশেষে প্রতি নাগরিকের সমান অধিকার ।

(২) স্বাধীনতার অধিকার (Right to Freedom) : বাক ও মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা, ইউনিয়ন গঠন, দেশের সর্বত্র স্বাধীনভাবে চলাফেরার অধিকার, 

(৩) শোষণের বিরুদ্ধে অধিকার (Right against Exploitation) : বিনা বেতনে বেগার খাটানো, মানুষ ক্রয় বিক্রয়, ১৪ বছরের কম বয়সের শিশুদের কারখানা বা খনির কাজে লাগানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে ,

(৪) ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার (Right to Freedom of Religion) : কোনো ব্যক্তি স্বেচ্ছায় ধর্মান্তরিত হতে পারেন এবং কোনো নাগরিককে বলপূর্বক ধর্মান্তরিত করা যাবে না । ব্যক্তির ইচ্ছে অনুযায়ী ধর্ম পালন করার অধিকার আছে ।

(৫) সংস্কৃতি ও শিক্ষা বিষয়ক অধিকার (Cultural and Educational Rights) : নাগরিকদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও শিক্ষার অধিকার মৌলিক অধিকারের ভিতর ধরা হয়েছে ।

(৬) সাংবিধানিক প্রতিকারের অধিকার (Right to constitutional remedies) : কোনো নাগরিক উপরিউক্ত অধিকারগুলি বা কোনো একটি অধিকার থেকে বঞ্চিত হলে, তিনি সুপ্রিম কোর্টে প্রতিকারের জন্য আবেদন করতে পারেন ।

সংবিধানে নাগরিকদের কর্তব্যের কথাও বলা হয়েছে । যথা— সমাজের মঙ্গলের জন্য ক্ষুদ্র স্বার্থত্যাগ, আইন মেনে চলা, রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রভৃতি । সংবিধানের নির্দেশক নীতি দ্বারা জনকল্যাণমূলক নির্দেশক নীতি ঘোষণা করা হয়েছে । অধুনা এই নির্দেশক নীতিকে বাধ্যতামূলক করার প্রবণতা সংবিধানে দেখা যায় । ভারতের সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকারগুলি অবাধ নয় । জাতির বৃহত্তর স্বার্থে অধিকারগুলির ওপর যুক্তিসংগত বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, যেমন—

(১) রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটানো,

(২) আদালত অবমাননা,

(৩) অশালীনতা প্রভৃতি ঘটনা ঘটলে ভারতের নাগরিকদের মৌলিক অধিকারগুলির উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা যায় ।

(৪) বিশেষ পরিস্থিতিতে ভারতরাষ্ট্র তার নাগরিকদের মৌলিক অধিকারগুলিকে সাময়িক ভাবে নিয়ন্ত্রিত বা খর্ব করতে পারে ।

(৫) দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হলে ভারতের নাগরিকদের মৌলিক অধিকারগুলিকে খর্ব করা যায় ।

*****

Related Items

আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ । কী কারণে শেষ পর্যন্ত আজাদ হিন্দ ফৌজ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়ে ছিল ?

প্রশ্ন:-  আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ । কী কারণে শেষ পর্যন্ত আজাদ হিন্দ ফৌজ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়ে ছিল ?

আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান—

’করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গে’ -কোন আন্দোলনের রণধ্বনি ছিল ? এই আন্দোলনে কৃষক ও শ্রমিকরা কীরূপ ভূমিকা নিয়েছিল ?

প্রশ্ন:-  ’করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গে’ -কোন আন্দোলনের রণধ্বনি ছিল ? এই আন্দোলনে কৃষক ও শ্রমিকরা কীরূপ ভূমিকা নিয়েছিল ?

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ভারত ছাড়ো আন্দোলনের রণধ্বনি ছিল 'করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গে' ।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রসার আলোচনা কর ।

প্রশ্ন:- ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রসার আলোচনা কর ।

১৯৪২ সালের ৮ই আগষ্ট ‘ভারত-ছাড়ো প্রস্তাব’ গৃহীত হলে পরদিন অর্থাৎ ৯ই আগষ্ট, ১৯৪২ এর ভোর থেকেই আন্দোলন শুরু হয়, যেমন—

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে কোন ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে স্যার স্ট্যাস্ট্যাস্ট্যাফোর্ড ক্রিপ্‌স ভারতে এসেছিলেন ?

প্রশ্ন:-  ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে কোন ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপ্‌স ভারতে এসেছিলেন ?

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান আলোচনা কর ।

প্রশ্ন:- ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান আলোচনা কর ।

ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান বিশেষভাবে স্মরনীয় ।