Submitted by avimanyu pramanik on Thu, 12/03/2020 - 21:00

ভারতে আধুনিক চিকিৎসাবিদ্যা প্রসারের সঙ্গে মধুসূদন গুপ্তের নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত । তিনি ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে হুগলি জেলার বৈদ্যবাটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন । ডেভিড হেয়ারের 'পটলডাঙ্গা স্কুলে' প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে তিনি কলকাতার সংস্কৃত কলেজে আয়ুর্বেদ চিকিৎসা নিয়ে পড়াশুনা করেন । এখানে তিনি সংস্কৃত, ন্যায়শাস্ত্র, অলংকার শাস্ত্র প্রভৃতি বিষয়ে শিক্ষা লাভ করেন । আয়ুর্বেদ নিয়ে পড়াশুনার সময় তিনি শারীরতত্ত্ব বিষয়ে যথেষ্ট আগ্রহী ছিলেন । কর্মজীবনে তিনি প্রথমে সংস্কৃৃত কলেজে চিকিৎসাশাস্ত্রের অধ্যাপক ছিলেন । সংস্কৃত কলেজে অধ্যাপনাকালে মধুসূদন গুপ্ত ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে হুপারের 'অ্যানাটমিস্টস ভাডে মেকাম' (Anatomist's Vade-mecum) গ্রন্থটি সংস্কৃত ভাষায়় অনুবাদ করেন । মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি এই কলেজে ডেমনস্ট্রেটরের পদে নিয়োজিত হন । ইতিমধ্যে তিনি মেডিকেল কলেজের বিধিবদ্ধ ছাত্র না হয়েও ফাইনাল পাস করে ডাক্তার হন । শিক্ষক হিসেবে তিনি মেডিকেল কলেজে দীর্ঘ ২২ বছর ধরে শারীরবিদ্যা বিষয়টি পড়ান । ড. হেনরি হ্যারি গুডিব -এর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দের ১০ই জানুয়ারি মধুসূদন গুপ্ত মেডিকেল কলেজে প্রথম শব-ব্যবচ্ছেদ করেন । জানা যায় তাঁর এই কীর্তিকে স্মরণীয় করে রাখতে ফোর্ট উইলিয়াম থেকে তোপধ্বনি করা হয় । এর কয়েকমাস পরে হেনরি গুডিব -এর তত্ত্বাবধানে মধুসূদন গুপ্ত ২৮শে অক্টোবর চারজন মেডিকেল ছাত্রকে নিয়ে পুনরায় শব-ব্যবচ্ছেদ করেন । এই চারজন ছাত্র ছিলেন রাজকৃষ্ণ দে, উমাচরণ শেঠ, দ্বারকানাথ গুপ্ত এবং নবীনচন্দ্র মিত্র । শব-ব্যবচ্ছেদের কারণে মধুসূদন গুপ্ত সমাজ থেকে জাতিচ্যুত হন । ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রথম শ্রেণির সাব-অ্যাসিস্টান্ট সার্জেনের পদে উন্নীত হন । ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি 'লন্ডন ফার্মাকোপিয়া' গ্রন্থটি বাংলা ভাষায় অনুবাদ করেন । ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে 'অ্যানাটোমি' নামে ইংরেজি ও ল্যাটিন নামের ওষুধের নাম ও ব্যবহারের নির্দেশাবলী সম্পর্কিত একটি অনুবাদ গ্রন্থ প্রকাশ করেন । ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই নভেম্বর তাঁর অধ্যাপনা জীবনকালেই তিনি মারা যান ।

******

Related Items

আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ । কী কারণে শেষ পর্যন্ত আজাদ হিন্দ ফৌজ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়ে ছিল ?

প্রশ্ন:-  আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ । কী কারণে শেষ পর্যন্ত আজাদ হিন্দ ফৌজ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়ে ছিল ?

আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান—

’করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গে’ -কোন আন্দোলনের রণধ্বনি ছিল ? এই আন্দোলনে কৃষক ও শ্রমিকরা কীরূপ ভূমিকা নিয়েছিল ?

প্রশ্ন:-  ’করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গে’ -কোন আন্দোলনের রণধ্বনি ছিল ? এই আন্দোলনে কৃষক ও শ্রমিকরা কীরূপ ভূমিকা নিয়েছিল ?

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ভারত ছাড়ো আন্দোলনের রণধ্বনি ছিল 'করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গে' ।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রসার আলোচনা কর ।

প্রশ্ন:- ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রসার আলোচনা কর ।

১৯৪২ সালের ৮ই আগষ্ট ‘ভারত-ছাড়ো প্রস্তাব’ গৃহীত হলে পরদিন অর্থাৎ ৯ই আগষ্ট, ১৯৪২ এর ভোর থেকেই আন্দোলন শুরু হয়, যেমন—

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে কোন ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে স্যার স্ট্যাস্ট্যাস্ট্যাফোর্ড ক্রিপ্‌স ভারতে এসেছিলেন ?

প্রশ্ন:-  ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে কোন ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপ্‌স ভারতে এসেছিলেন ?

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান আলোচনা কর ।

প্রশ্ন:- ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান আলোচনা কর ।

ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান বিশেষভাবে স্মরনীয় ।