Submitted by avimanyu pramanik on Thu, 04/26/2012 - 15:26

লোকসভা (Loksova : Lower House)

ভারতীয় আইনসভা দুটি কক্ষে বিভক্ত— লোকসভারাজ্যসভা । লোকসভার অনধিক ৫৫২ (৫৩০ + ২০ + ২) জন সদস্য । ৫৩০ জন সদস্য ২৮টি রাজ্যের জনগণের ভোটে প্রত্যক্ষভাবে নির্বাচিত হয়ে আসেন । কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে ২০ জন নির্বাচিত হন এবং ২ জন অ্যাংলো ইন্ডিয়ানকে রাষ্ট্রপতি মনোনীত করেন । লোকসভার কার্যকালের মেয়াদ পাঁচ বছর । প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাধিকারের ভিত্তিতে প্রতি পাঁচ বছরের মেয়াদে লোকসভা গঠিত হয় । মেয়াদ পূর্তির আগে সরকারের পতন হলে অন্তর্বর্তী নির্বাচনের প্রয়োজন হয় । বর্তমান লোকসভার সদস্য সংখ্যা ৫৪৫ । লোকসভা দেশের সর্বোচ্চ আইন প্রণয়নকারী সংস্থা । লোকসভায় সভাপতিত্ব করেন স্পিকার বা অধ্যক্ষ । লোকসভায় নির্দিষ্ট সংখ্যক সদস্য উপস্থিত না হলে বা কোরাম (Quoram) না হলে স্পিকার সাময়িক কালের জন্য লোকসভার অধিবেশন মুলতুবি করতে পারেন । দলমত নির্বিশেষে স্পিকার নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে থাকেন ।

লোকসভার গঠন

(১) লোকসভার সদস্যগণ ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সের প্রাপ্ত বয়স্কদের ভোটে ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত হন ।

(২) বর্তমানে লোকসভার মোট সদস্য সংখ্যা ৫৪৫ জন । এর মধ্যে ৫৩০ জন সদস্য ভারতের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে এবং ১৩ জন সদস্য ভারতের কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলগুলি থেকে জনসাধারণের প্রত্যক্ষ ভোটে সরাসরি ভাবে নির্বাচিত হন । কেবলমাত্র ২ জন অ্যাংলো ইন্ডিয়ান সদস্যকে রাষ্ট্রপতি মনোনীত করেন ।

(৩) ২৫ বছর বয়সি যেকোনো ভারতীয় নাগরিক লোকসভার সদস্য হতে পারেন ।

(৪) সাধারণ নির্বাচনের পর নতুন লোকসভার প্রথম অধিবেশনে সদস্যরা একজন স্পিকার ও একজন ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন করেন এবং এই সভার স্থায়িত্বকাল পর্যন্ত তাঁরা সভার কাজ পরিচালনা করেন । লোকসভার সদস্যরা ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত হলেও বিশেষ পরিস্থিতিতে (যেমন- লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত হলে) রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে ৫ বছরের আগেই লোকসভা ভেঙে দিতে পারেন ।

লোকসভার কার্যাবলী

(১) যেকোনো বিল বা আইন-ঘটিত প্রস্তাব লোকসভায় ও রাজ্যসভায় অনুমোদন করাতে হয় ।

(২) অর্থসংক্রান্ত বিল কেবলমাত্র লোকসভাতেই উত্থাপন ও পাশ করাতে হয় ।

(৩) সংসদে গৃহীত বিল আইনে পরিণত করতে হলে রাষ্ট্রপতির লিখিত সম্মতির প্রয়োজন হয় । রাষ্ট্রপতি ইচ্ছা করলে অর্থবিল ছাড়া অন্যান্য বিল পুনর্বিবেচনার জন্য আবার সংসদে ফেরত পাঠাতে পারেন, কিন্তু অর্থবিল একবার লোকসভায় পাশ হলে রাষ্ট্রপতি তা পুনর্বিবেচনার জন্য আর সংসদে ফেরত পাঠাতে পারেন না ।

*****

Related Items

অহিংস অসহযোগ আন্দোলন পর্বে কৃষক আন্দোলন

অহিংস অসহযোগ আন্দোলন পর্বে কৃষক আন্দোলন (The Non Co-operation Movement and the Peasants) :-

মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, দমনমূলক রাওলাট আইন, জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকান্ড প্রভৃতির প্রতিবাদে গান্ধিজির নেতৃত্বে জাতীয় কংগ্রেস ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে অহিংস অসহ

বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন পর্বে কৃষক আন্দোলন

বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন পর্বে কৃষক আন্দোলন (The anti-Partition Movement and the Peasant):-

ভারতবর্ষের গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী বেশিরভাগ মানুষদের জীবিকা ছিল কৃষির ওপর নির্ভরশীল । ঔপনিবেশিক শাসনকালে ব্রিটিশদের কৃষিনীতি ভীষণভাবে কৃষক স্বার্থবিরোধী ছ

বিশ শতকের ভারতে কৃষক আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য

কৃষক আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য (The Peasants Movements in the Twentieth Century):- বিশ শতকের ভারতে সংঘটিত কৃষক আন্দোলনগুলি পর্যালোচনা করলে আন্দোলনগুলির কয়েকটি বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয় । যেমন —

বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন : বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা

বিশ শতকের ভারতে কৃষক শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন : বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা (Peasant, Working Class and Left Movements in Twentieth Century):-

ভারতবর্ষ কৃষিনির্ভর দেশ । ভারতবর্ষের গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী বেশিরভাগ মানুষদের জীবিকা ছিল কৃষির ওপর নির্ভর

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও শান্তিনিকেতন ভাবনা এবং বিশ্বভারতীর উদ্যোগ

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও শান্তিনিকেতন ভাবনা এবং বিশ্বভারতীর উদ্যোগ — প্রকৃতি মানুষ ও শিক্ষার সমন্বয় (Education in Harmony with Nature) :-

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ঔপনিবেশিক শিক্ষানীতির কঠোর সমালোচনা করলেও তিনি ইংরেজি বা পাশ্চাত্য শিক্ষার বিরোধী ছিলেন না