বিদ্রোহ, অভ্যুত্থান ও বিপ্লবের ধারণাগত আলোচনা

Submitted by avimanyu pramanik on Tue, 12/22/2020 - 20:42

বিদ্রোহ, অভ্যুত্থান ও বিপ্লবের ধারণাগত আলোচনা (Concept of Rebellion, Uprising and Revolution) :বিদ্রোহ, অভ্যুত্থান ও বিপ্লব —এই তিনের-ই আলাদা আলাদা অর্থ ও উদ্দেশ্য আছে । মানুষ যখন কোনো কিছু পাওয়ার চেষ্টা করে অথবা তাদের স্বার্থ বিরোধী কোনো ব্যবস্থা পছন্দ না করে, তখন বিদ্রোহ, অভ্যুত্থান বা বিপ্লবের আকারে তাদের প্রতি ক্ষোভ ও প্রতিবাদে শামিল হয় ।

বিদ্রোহ— কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলে, নির্দিষ্ট কিছু মানুষ যখন নিজেদের স্বার্থ সুরক্ষিত করার জন্য কোনো প্রচলিত ব্যবস্থার পরিবর্তনের দাবিতে অসংগঠিত বা সুসংগঠিতভাবে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটায় তখন তাকে বিদ্রোহ বলে । ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতে রংপুর বিদ্রোহ, পাবনা বিদ্রোহ, নীল বিদ্রোহ, সিপাহী বিদ্রোহ প্রভৃতি হল বিদ্রোহের উল্লেখযোগ্য উদাহরণ । 

অভ্যুত্থান— কোনো দেশ বা সমাজে কিংবা প্রশাসনে কোনো প্রচলিত ব্যবস্থার বিরুদ্ধে নিজ গোষ্ঠীর অধিকাংশ মানুষ যখন একই জাতীয় স্বার্থে প্রতিবাদে শামিল হয়ে নিজেদের নেতা বা প্রভুদের বিরুদ্ধে তাদের অধীনস্থ মানুষ সংগ্রাম করে তখন তাকে 'অভ্যুত্থান' বলে । ১৮৫৭ সালে ভারতের ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর একাংশের উদ্যোগে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সিপাহি বিদ্রোহ এবং ১৯৪৬ সালে ভারতের ব্রিটিশ নৌবাহিনীর সেনাদের একাংশের নেতৃত্বে নৌবিদ্রোহ হল অভুত্থানের উল্লেখযোগ্য উদাহরণ ।

বিপ্লব— 'বিপ্লব' কথার অর্থ হল কোনো প্রচলিত ব্যবস্থার দ্রুত, ব্যাপক ও আমূল পরিবর্তন । যখন একটি দেশ বা জাতির প্রায় সমগ্র অংশ আর্থিক, সামাজিক, রাজনৈতিক বা ধর্মীয় ব্যবস্থায় সম্পূর্ণ বদল ঘটানোর উদ্দেশ্যে নিজেদের নিয়োজিত করে তখন তাকে 'বিপ্লব' বলা হয় । বিপ্লবের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হল— অষ্টাদশ শতকে ইউরোপের শিল্পবিপ্লব এবং ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি বিপ্লব । শিল্পবিপ্লবের দ্বারা ইউরোপের শিল্পব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটে । ফরাসি বিপ্লবের দ্বারা ফ্রান্সে পূর্বতন সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থার দ্রুত ও আমূল পরিবর্তন ঘটে ।     

***

Comments

Related Items

আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ । কী কারণে শেষ পর্যন্ত আজাদ হিন্দ ফৌজ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়ে ছিল ?

প্রশ্ন:-  আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ । কী কারণে শেষ পর্যন্ত আজাদ হিন্দ ফৌজ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়ে ছিল ?

আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান—

’করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গে’ -কোন আন্দোলনের রণধ্বনি ছিল ? এই আন্দোলনে কৃষক ও শ্রমিকরা কীরূপ ভূমিকা নিয়েছিল ?

প্রশ্ন:-  ’করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গে’ -কোন আন্দোলনের রণধ্বনি ছিল ? এই আন্দোলনে কৃষক ও শ্রমিকরা কীরূপ ভূমিকা নিয়েছিল ?

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ভারত ছাড়ো আন্দোলনের রণধ্বনি ছিল 'করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গে' ।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রসার আলোচনা কর ।

প্রশ্ন:- ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রসার আলোচনা কর ।

১৯৪২ সালের ৮ই আগষ্ট ‘ভারত-ছাড়ো প্রস্তাব’ গৃহীত হলে পরদিন অর্থাৎ ৯ই আগষ্ট, ১৯৪২ এর ভোর থেকেই আন্দোলন শুরু হয়, যেমন—

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে কোন ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে স্যার স্ট্যাস্ট্যাস্ট্যাফোর্ড ক্রিপ্‌স ভারতে এসেছিলেন ?

প্রশ্ন:-  ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে কোন ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপ্‌স ভারতে এসেছিলেন ?

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান আলোচনা কর ।

প্রশ্ন:- ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান আলোচনা কর ।

ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান বিশেষভাবে স্মরনীয় ।