প্রার্থনা সমাজ (Prarthana Samaj) :
১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে বোম্বাই শহরে প্রার্থনা সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয় । এই সমাজের নেতা ছিলেন ডঃ আত্মারাম পান্ডুরঙ্গ (Atmaram Pandurang) । ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দে কেশবচন্দ্র সেন বোম্বাই শহরে গেলে মহারাষ্ট্রের প্রার্থনা সমাজকে তিনি আরও শক্তিশালী করে তোলেন । ব্রাহ্মসমাজের ন্যায় প্রার্থনা সমাজের সদস্যগণ এক ঈশ্বরে বিশ্বাসী এবং সমাজ সংস্কারমূলক কাজকর্মে উৎসাহী ছিলেন । কিন্তু ব্রাহ্মসমাজের মতো প্রার্থনা সমাজের সদস্যগণ নিজেদের হিন্দুধর্ম বহির্ভূত পৃথক সম্প্রদায় বলে মনে করতেন না । এঁরা পাশ্চাত্য যুক্তিবাদ গ্রহণ করেছিলেন । প্রার্থনা সমাজের আদর্শ অনুযায়ী সদস্যগণ শিক্ষাবিস্তার এবং নানাবিধ সংস্কারমূলক কাজকর্মে নিজেদের উৎসর্গ করেছিলেন । ১৮৭০ সালে বিখ্যাত ঐতিহাসিক রামকৃষ্ণ গোপাল ভান্ডারকর এবং বিচারপতি মহাদেব গোবিন্দ রাণাডে প্রার্থনা সমাজে যোগ দেন ও এই সমাজকে শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত করেন । মহাদেব গোবিন্দ রাণাডে প্রার্থনা সমাজের প্রাণপুরুষ ছিলেন ।
প্রার্থনা সমাজের সমাজ-সংস্কার বিষয়ক নীতি :
সমাজ উন্নয়ন ও নারী কল্যাণের ব্যাপারে এই সমাজ ব্রাহ্মসমাজের কর্মসূচিই অনুসরণ করত, যেমন—
(১) অসবর্ণ বিবাহ, বিধবা বিবাহ, অস্পৃশ্যতা বর্জন ইত্যাদি প্রার্থনা সমাজের কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত ছিল । এই সমাজের উদ্যোগে অনেকগুলি শিশুসদন, অনাথ-আশ্রম, বিধবা আশ্রমের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ।
(২) উচ্চ শিক্ষার বিস্তার ঘটানো । এই সমাজের প্রাণপুরুষ মহাদেব গোবিন্দ রাণাডে শিক্ষা বিস্তারের উদ্দেশ্যে দাক্ষিণাত্যে শিক্ষাসমাজ গঠন করেন । এই সংস্থার উদ্যোগে পুনায় ফারগুসন কলেজ এবং সাংলিতে উইলিংডন কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় ।
*****
- 18476 views