Submitted by avimanyu pramanik on Thu, 04/26/2012 - 15:40

প্রাদেশিক আইনসভা (Legislative Assembly)

রাজ্য আইনসভা দুই কক্ষ বিশিষ্ট হয়, যথা—  বিধান সভা ও বিধান পরিষদ । অবশ্য অনেক অঙ্গরাজ্যেই বিধানপরিষদ তুলে দেওয়া হয়েছে । রাজধানী দিল্লিকে নিয়ে ২৮টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে শুধুমাত্র পাঁচটিতে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা আছে । এর উচ্চকক্ষকে বিধান পরিষদ ও নিম্নকক্ষকে বিধানসভা বলে । এই দুটিকে একত্রে 'বিধানমন্ডলী' বলে । আর রাজ্যের এক কক্ষবিশিষ্ট আইনসভাকে বিধানসভা বলে । বিধানসভার সদস্যগণ লোকসভার মতোই প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাধিকারের ভিত্তিতে জনগণের দ্বারা প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন । কিন্তু বিধান পরিষদের সদস্যরা পরোক্ষ ভোটের মাধ্যমে একটি বিশেষ পদ্ধতিতে নির্বাচিত হয়ে আসেন । রাজ্যে বিধানসভাই হল সর্বশক্তিমান । বিধানসভা অঙ্গরাজ্যের প্রধান আইন প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান । এর মেয়াদও পাঁচ বছর । সংবিধানের ১৭০(১) ধারা অনুসারে বিধানসভার সদস্য সংখ্যা সর্বাধিক ৫০০ ও সর্বনিম্ন ৬০ হতে পারে । আর ১৭১(১) ধারা অনুসারে বিধান পরিষদের সদস্য সংখ্যা ৪০ -এর কম হওয়ার নিয়ম নেই । বিধান সভার কাজ হল রাজ্যশাসন, আইন, বিচার ও অর্থ-সংক্রান্ত বিষয়ে নীতি নির্ধারণ করা । স্পিকার বা অধ্যক্ষ বিধানসভার অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন ।

পশ্চিমবঙ্গের এক কক্ষবিশিষ্ট রাজ্য আইনসভা । বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য সংখ্যা ২৯৪ + ১ = ২৯৫ । এর মধ্যে ২৯৪টি আসনের বিধায়করা এক-আসনবিশিষ্ট বিধানসভা কেন্দ্র থেকে সরাসরি নির্বাচিত হয়ে আসেন এবং এক জন সদস্য অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান সম্প্রদায় থেকে সরাসরি মনোনীত হন । বিধানসভার মেয়াদ পাঁচ বছরের । তবে তার আগের বিধানসভা ভেঙে দেওয়া যায় ।

১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন বলে বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইনসভাকে দুটি কক্ষে বিভক্ত করা হয়— বিধান পরিষদ (Legislative Council) এবং বিধানসভা (Legislative Assembly) । ২৫০ সদস্যবিশিষ্ট অ্যাসেম্বলির মেয়াদ ছিল সর্বাধিক পাঁচ বছর । অন্যদিকে কাউন্সিল ছিল একটি স্থায়ী সংস্থা । এই সংস্থায় সদস্য সংখ্যা ৬৩ জনের কম ও ৬৫ জনের বেশি হত না । প্রতি তিন বছর অন্তর সভার এক-তৃতীয়াংশ সদস্য অবসর নিতেন । ১৯৪৭ সালের ১৪ অগস্ট ব্রিটিশ বঙ্গপ্রদেশ পশ্চিমবঙ্গ ও পূর্ব পাকিস্তানে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যায় । পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্ভুক্ত ৯০টি কেন্দ্রের বিধায়ক ও দুই জন অ্যাংলো ইন্ডিয়ান সদস্য নিয়ে গঠিত হয় পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা । বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইনসভা বিলুপ্ত হয়ে যায় । ১৯৪৭ সালের ২১শে নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার প্রথম অধিবেশন বসে । এই সময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হন প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষ । অন্যান্য নেতাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন বিধানচন্দ্র রায়, জ্যোতি বসু প্রমুখ । ভারতীয় সংবিধানে পশ্চিমবঙ্গের দ্বিকক্ষীয় বিধানসভা অনুমোদিত হয় । ১৯৫২ সালের ৫ই জুন ৫১ সদস্য বিশিষ্ট পশ্চিমবঙ্গ বিধান পরিষদ গঠিত হয় । দুই জন অ্যাংলো ইন্ডিয়ান সদস্য নিয়ে বিধান সভার সদস্য সংখ্যা হয় ২৪০ । ভারতের প্রথম সাধারণ নির্বাচনের পর ১৯৫২ সালের ১৮ই জুন প্রথম পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধিবেশন বসে । ১৯৬৯ সালের ২১শে মার্চ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিধান পরিষদ অবলুপ্তির প্রস্তাব গৃহীত হয় এবং সেই প্রস্তাব অনুসারে ভারতীয় সংসদে পশ্চিমবঙ্গ বিধান পরিষদ (অবলুপ্তি) আইন পাস হয় । ১৯৬৯ সালের ১ অগস্ট বিধান পরিষদ অবলুপ্ত হয় ।

*****

Related Items

ভারতের সংবিধানের চারটি মূল বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর ।

প্রশ্ন:-  ভারতের সংবিধানের চারটি মূল বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো ।

১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬শে জানুয়ারি ভারতের সংবিধান প্রকাশ করা হয় । ভারতীয় সংবিধানের চারটি উল্লেখযোগ্য প্রধান বৈশিষ্ট্য হল—

মুসলিম লিগ কবে প্রতিষ্ঠিত হয় ? স্যার সৈয়দ আহম্মদ খাঁ মুসলমানদের কংগ্রেসে যোগ না দিতে পরামর্শ দিয়েছিলেন কেন ? মুসলিম লিগ কেন ‘প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস’ পালন করে ?

প্রশ্ন:-  মুসলিম লিগ কবে প্রতিষ্ঠিত হয় ? স্যার সৈয়দ আহম্মদ খাঁ মুসলমানদের কংগ্রেসে যোগ না দিতে পরামর্শ দিয়েছিলেন কেন ? মুসলিম লিগ কেন ‘প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস’ পালন করে ?

‘দ্বিজাতি তত্ত্ব’ কী ? ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের শেষ পর্যায়ে এই তত্ত্বের প্রভাব উল্লেখ কর ।

প্রশ্ন:- ‘দ্বিজাতি তত্ত্ব’ কী ? ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের শেষ পর্যায়ে এই তত্ত্বের প্রভাব উল্লেখ কর ।

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে নৌ-বিদ্রোহের গুরুত্ব কী ? দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর ভারতে ছাত্র আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও ।

প্রশ্ন:-  ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে নৌ-বিদ্রোহের গুরুত্ব কী ? দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর ভারতে ছাত্র আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও ।

আজাদ হিন্দ ফৌজের লক্ষ্য কতদূর পরিপূর্ণ হয় ? আজদ হিন্দ ফৌজের বিচার ভারতীয় জনগণের ওপর কী প্রভাব বিস্তার করে ?

প্রশ্ন:- আজাদ হিন্দ ফৌজের লক্ষ্য কতদূর পরিপূর্ণ হয় ? আজদ হিন্দ ফৌজের বিচার ভারতীয় জনগণের ওপর কী প্রভাব বিস্তার করে ?