প্রথম গোলটেবিল বৈঠক (The FIrst Round Table Conference)

Submitted by avimanyu pramanik on Sat, 07/13/2013 - 17:39

প্রথম গোলটেবিল বৈঠক (The First Round Table Conference) :

১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ২৭শে মে সাইমন কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশিত হলে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী র‍্যামসে ম্যাকডোনাল্ড সাইমন কমিশনের রিপোর্ট বিচার বিবেচনার জন্য ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ১২ই নভেম্বর ভারতের রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের এক বৈঠক আহ্বান করেন । কংগ্রেস ব্যতীত দেশীয় রাজ্যের প্রতিনিধিগণ এই বৈঠকে যোগদান করেছিলেন । যোগদানকারী উল্লেখযোগ্য নেতাদের মধ্যে ছিলেন স্যার তেজবাহাদুর সাপ্রু, জয়াকর, মহম্মদ আলি জিন্না, আগা খান, বি.আর. আম্বেদকর প্রমুখ । বৈঠকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী র‍্যামসে ম্যাকডোনাল্ড কতকগুলি প্রস্তাব করেছিলেন,যথা—

(১) ভারতের জন্য যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার গঠন,

(২) প্রদেশগুলিতে দায়িত্বশীল সরকারের প্রবর্তন এবং ক্ষেত্র বিশেষে কেন্দ্রীয় সরকারকে আংশিক দায়িত্ব প্রদান প্রভৃতি ।

সাম্প্রদায়িক স্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়ে প্রতিনিধিবৃন্দের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দিয়েছিল । মহম্মদ আলি জিন্নার নেতৃত্বে মুসলিম লিগ এবং ডঃ আম্বেদকর তপশিলি সম্প্রদায়ের স্বার্থে পৃথক নির্বাচকমন্ডলীর দাবি করেছিলেন । কিন্তু ভারতের বৃহত্তম জনসংখ্যার প্রতিনিধি জাতীয় কংগ্রেস এই গোলটেবিল বৈঠকে অনুপস্থিত থাকায় কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব হয় নি । কেবল ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী র‍্যামসে ম্যাকডোনাল্ড আশা প্রকাশ করেন যে, সংবিধান রচনায় কংগ্রেস পরবর্তী বৈঠকসমূহে যোগ দেবে । সেই আশায় পরবর্তী অধিবেশন পর্যন্ত গোলটেবিল বৈঠক মুলতুবি রাখা হয় ।

*****

Related Items

প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ : বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (Resistance and Rebellion) : ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩শে জুন নবাব সিরাজদ্দৌলাকে পলাশির যুদ্ধে পরাজিত করার পর ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতে তাদের ক্ষমতা বিস্তার করতে শুরু করে । এদিকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অপশাসনের বিরুদ্ধে ভারতের বি

উনিশ শতকের বাংলার 'নবজাগরণ' ধারণার ব্যবহার বিষয়ক বিতর্ক

পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাবে উনিশ শতকে বাংলার সমাজ, সংস্কৃতি, ধর্ম, শিক্ষা প্রভৃতি ক্ষেত্রে যে অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায় কেউ কেউ তাকে 'নবজাগরণ' বলে অভিহিত করেছেন । প্রকৃত অর্থে এই অগ্রগতিকে নবজাগরণ বলা যায় কি না তা নিয়ে ঐতিহাসিক ও পন্ডিতমহলে বিতর্কের শেষ নেই । ঐতিহাসিক যদুনাথ

বাংলার নবজাগরণ -এর চরিত্র ও পর্যালোচনা

ঊনিশ শতকে বাংলায় আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাবে বাংলার শিক্ষা, সংস্কৃতি, শিল্পকলা, রাজনীতি, ধর্ম, সমাজ প্রভৃতি ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায় । এই অগ্রগতি সাধারণভাবে 'ঊনিশ শতকে বাংলার নবজাগরণ' নামে পরিচিত । রেনেসাঁস (Renaissance) কথাটির আক্

লালন ফকির

ঊনিশ শতকে বাংলায় সর্বধর্মসমন্বয়ের ক্ষেত্রে যাঁরা গুরুত্বপূর্ন অবদান রেখেছিলেন লালন ফকির বা লালন সাঁই হলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম আধ্যাত্মিক বাউলসাধক । তিনি বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ও বাংলাদেশের বাউলগানের শ্রেষ্ঠতম রচয়িতা ছিলেন । তিনি সাধারণ মানুষের কাছে লালন ফকির ...

স্বামী বিবেকানন্দের ধর্মসংস্কারের অভিমুখ : নব্য বেদান্ত — বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা

ভারতের প্রাচীন অদ্বৈত বেদান্ত দর্শনের ব্যাখ্যাকর্তা ছিলেন আদি জগৎগুরু 'শঙ্করাচার্য' । 'বেদান্ত' শব্দের অর্থ হল বেদের অন্ত বা শেষ, আর বেদের অন্ত হল উপনিষদসমূহ । ব্রহ্ম হল বেদান্ত দর্শনের মূল আলোচ্য বিষয় । উপনিষদ, ভগবতগীতা এবং ব্রহ্ম সূত্র ও তার ভাষ্য বি