কী উদ্দেশ্যে ঔপনিবেশিক সরকার অরণ্য আইন প্রণয়ন করেন ?

Submitted by avimanyu pramanik on Thu, 01/27/2022 - 22:42

প্রশ্ন : কী উদ্দেশ্যে ঔপনিবেশিক সরকার অরণ্য আইন প্রণয়ন করেন ?

উঃ- প্রথমে ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে এবং পরে ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে ভারতে ইংরেজ সরকার যে দুটি অরণ্য আইন প্রণয়ন করেছিল তার মূল উদ্দেশ্য ছিল ঔপনিবেশিক স্বার্থ রক্ষা করা ও আধিপত্য স্থাপন করা ।

♦ ব্রিটিশ রাজকীয় নৌবাহিনীর সম্প্রসারণ এবং ভারতে রেলপথ বিস্তারের লক্ষ্যে কাঠের স্লিপার তৈরির জন্য ভারতে বনজ সম্পদের ওপর ঔপনিবেশিক সরকারের লোলুপ দৃষ্টি পড়েছিল ।

♦ ভারতের সুবিস্তৃত বনাঞ্চলের জমিকে পরিষ্কার করে কৃষিযোগ্য করে তোলার উদ্দেশ্য যেমন ছিল তেমনি আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে ঝুম চাষের পরিবর্তে স্থায়ী কৃষিকাজে অভ্যস্ত করে তোলার তাগিদ ছিল ।

♦ ব্রিটিশ সরকারের কর্তা ব্যক্তিদের মূল উদ্দেশ্য ছিল কৃষিজমির সম্প্রসারণ ঘটিয়ে রাজস্ব বৃদ্ধি এবং বনজ সম্পদকে বাণিজ্যিক স্বার্থে ব্যবহার করে আয় ও মুনাফা বৃদ্ধি করা ।

♦ এটাও ঠিক যে ব্রিটিশ সরকার ভারতের বনভূমিকে সংরক্ষিত অরণ্য, সুরক্ষিত অরণ্য এবং গ্রামীণ (অশ্রেণিভুক্ত) অরণ্য এই তিনটি ভাগে বিভক্ত করে বন সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছিল । তবে ঔপনিবেশিক স্বার্থ ও মুনাফা বজায় রাখতে গিয়ে অরণ্য আইন প্রয়োগের মাধ্যমে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর স্বাধিকার, জীবন ও জীবিকার মূলে কুঠারাঘাত করেছিল এবং যার ফলে গড়ে উঠেছিল বিভিন্ন কৃষক ও উপজাতি বিদ্রোহ ।

*****

Comments

Related Items

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ এবং চিকিৎসাবিদ্যা চর্চার বিকাশ

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ এবং চিকিৎসাবিদ্যা চর্চার বিকাশ:-

ঊনিশ শতকের সূচনালগ্নে ভারতে প্রাচীন দেশীয় চিকিৎসা-ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল । পরবর্তীকালে ভারতের গভর্নর জেনারেল লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক দেশীয় চিকিৎসা-শাস্ত্রে শিক্ষাদানের পরিবর্তে আধু

পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারে ডেভিড হেয়ার ও জন এলিয়ট ড্রিঙ্কওয়াটার বিটন -এর ভূমিকা

উনিশ শতকে যে সব মানুষ বাংলায় পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন ডেভিড হেয়ার । ১৭৭৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি স্কটল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন । ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় এসে ঘড়ির ব্যবসা করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করেন । ঔ

পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারে রাজা রামমোহন রায় ও রাজা রাধাকান্ত দেব -এর ভূমিকা

ঊনিশ শতকে বাংলায় আধুনিক পাশ্চাত্যশিক্ষার প্রসারে রাজা রামমোহন রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন । রাজা রামমোহন রায় মনে করতেন আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার ওপর ভিত্তি করেই নতুন ভারত গড়ে উঠবে । তিনি নিজের খরচে ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় 'ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি' নামে

নারীশিক্ষা ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর

ঊনিশ শতকের সূচনালগ্ন পর্যন্ত নানা রকম সামাজিক বিধিনিষেধের ফলে বাংলায় নারীশিক্ষার বিশেষ প্রসার ঘটেনি । এরপর থেকে উনিশ শতকে ভারতে নারীশিক্ষা প্রসারের উদ্দেশ্যে কিছু সমষ্টিগত ও ব্যক্তিগত উদ্যোগ শুরু হয় । সমষ্টিগত উদ্যোগে নব্যবঙ্গীয় গোষ্ঠী, খ্রিস্টান মিশনারি এবং ব্রাহ্মসমা

ভারতে ইংরেজি শিক্ষার প্রসার

অষ্টাদশ শতকের শেষভাগে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতে ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠা করলেও প্রথমদিকে তারা এদেশে ইংরেজি ও পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের কোনো উদ্যোগ নেয়নি । ভারতে ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইংরেজদের আইন-আদালত গড়ে উঠতে শুরু করে । ইংরেজ বণিকরা নানা জায়গায