Submitted by avimanyu pramanik on Sat, 07/13/2013 - 17:21

আব্দুল গফফর খান (Abdul Ghaffar Khan) :

মহাত্মা গান্ধির অনুসৃত আদর্শ ও কর্মপন্থার একনিষ্ঠ অনুরাগী খান আব্দুল গফফর খানের নেতৃত্বে উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে আইন অমান্য আন্দোল ব্যাপক আকার ধারণ করে । এজন্য তাঁকে সীমান্ত গান্ধি নামে (Frontier Gandhi) অভিহিত করা হয় । ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি রাওলাট বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন এবং ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে সীমান্ত প্রদেশে খিলাফৎ আন্দোলন সংগঠিত করেন । কংগ্রেসের নীতি অনুসরণ করে তিনি উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে 'খোদা-ই-খিদমদগার' নামে একটি দল গঠন করেন । 'খোদা-ই-খিদমদগার' -এর অর্থ হল ঈশ্বরের সেবক । এই দলের অনুগামীদের পোশাক লাল ছিল বলে একে লালকুর্তাও বলা হত । খান আব্দুল গফফর খানের নেতৃত্বে খোদা-ই-খিদমদগার অসহযোগ আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিল । ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে এই দল কংগ্রেসে যোগদান করে । উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ সহ দেশের অন্যান্য অংশে আইন অমান্য আন্দোলনের ক্রমবিস্তার এবং গতিবেগ ইংরেজ সরকারের গভীর চিন্তার কারণ হয়ে ওঠে । নিষ্ঠুর অত্যাচার ও নির্যাতন সত্ত্বেও ব্রিটিশ সরকার জাতীয়তাবাদীদের কন্ঠরোধ করতে পারেনি । কোনো কোনো স্থানে জনসাধারণ উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করলেও এই অহিংস আন্দোলন মোটামুটি শান্তিপূর্ণ ছিল । মহাত্মা গান্ধি, জওহরলাল নেহরু সমেত শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার করে ব্রিটিশ সরকার আন্দোলনকারীদের মনোবল ভেঙ্গে দেয় । আন্দোলনে অংশ গ্রহণকারীদের ওপর নানা প্রকার অর্থনৈতিক নির্যাতন, তাঁদের বিষয়সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা এবং স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের ওপর ক্রমাগত পুলিশি অত্যাচারের ফলে আন্দোলনের গতি ক্রমশ স্তিমিত হয়ে আসে । অবশেষে ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের ৫ই মার্চ গান্ধি-আরউইন চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে এই আইন অমান্য আন্দোলনের অবসান হয় ।

*****

Related Items

অহিংস অসহযোগ আন্দোলন পর্বে নারী আন্দোলন

অহিংস অসহযোগ আন্দোলন পর্বে নারী আন্দোলন (Women and the Non Co-operation Movement):-

মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, দমনমূলক রাওলাট আইন, জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকান্ড প্রভৃতির প্রতিবাদে গান্ধিজির নেতৃত্বে জাতীয় কংগ্রেস ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে অহিংস অসহযোগ আন্দ

বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন পর্বে নারী আন্দোলন

বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন পর্বে নারী আন্দোলন (Women and the Anti-partition Movement):-

সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শাসনকালে লর্ড কার্জন প্রশাসনিক অজুহাত দেখিয়ে ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ২০শে জুলাই সরকারিভাবে বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলে বাংলা তথা ভারতে এ

বিশ শতকের ভারতে নারী আন্দোলনের চরিত্র, বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

বিশ শতকের ভারতে নারী আন্দোলনের চরিত্র, বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ (Women's Movements in the Twentieth Century):-

বিশ শতকের ভারতে ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনগুলির মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ চারটি জাতীয় আন্দোলন হল—(i) ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী স্ব

মানবেন্দ্রনাথ রায় ও ভারতের বামপন্থী আন্দোলন

মানবেন্দ্রনাথ রায় ও ভারতের বামপন্থী আন্দোলন(M.N.Roy and the Left Movement in India):-

মানবেন্দ্রনাথ রায়ের আসল নাম হল নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য । বিপ্লবী কাজ করতে গিয়ে তিনি অসংখ্য ছদ্মনাম গ্রহণ করেন, যেমন— মি. মার্টিন, হরি সিং, ডা. মাহমুদ, মি.

বিশ শতকের ভারতে উপনিবেশ-বিরোধী আন্দোলনে বামপন্থী রাজনীতির অংশগ্রহণ

বিশ শতকের ভারতে উপনিবেশ-বিরোধী আন্দোলনে বামপন্থী রাজনীতির অংশগ্রহণ (Participation of the Left in the Anti-Colonial Movement in India):-

রুশ বিপ্লবের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মানবেন্দ্রনাথ রায়, অবনী মুখার্জি, মহম্মদ আলি সহ ২৪ জন প্রবাসী ভারতীয়