বায়ুর চাপ পরিমাপ

Submitted by avimanyu pramanik on Mon, 08/09/2021 - 07:48

বায়ুর চাপ পরিমাপ (Measurement of Atmospheric Pressure) : পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি অন্যান্য পদার্থের মতো বায়ুকেও নিজের কেন্দ্রের দিকে আকর্ষণ করে বলে পৃথিবীর যাবতীয় পদার্থের মতো বায়ুরও ওজন আছে ফলে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে বায়ু ভূপৃষ্ঠের সকল বস্তুর চারপাশে প্রবল চাপ দেয় । ব্যারোমিটার নামক যন্ত্রের সাহায্যে বায়ুর এই চাপ পরিমাপ করা হয় । ব্যারোমিটার যন্ত্রে ব্যহৃত পারদস্তম্ভের উচ্চতার ভিত্তিতে বায়ুর চাপ পরিমাপ করা হয় । প্রথমদিকে ব্যারোমিটার যন্ত্রে পারদের ব্যবহার থাকলেও বর্তমানে উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে পারদের ব্যবহার ছাড়াও নানান ব্যারোমিটারের প্রচলন রয়েছে । যেমন — টরিসেলি ব্যারোমিটার, ফর্টিন্স ব্যারোমিটার, অ্যানিরয়েড ব্যারোমিটার, ডিজিটাল ব্যারোমিটার ইত্যাদি ।

টরিসেলি ব্যারোমিটার (Torricelli's Barometer) : ইতালীয় বিজ্ঞানী ই.টরিসেলি সর্বপ্রথম ১৬৪৩ খ্রিস্টাব্দে বায়ুর চাপ পরিমাপ করার জন্য ব্যারোমিটার যন্ত্রটি উদ্ভাবন করেন । একটি সমান ব্যাসযুক্ত কাচনলের ভেতর পারদস্তম্ভের উচ্চতা দেখে বায়ুর চাপ নির্ণয় করেন । তিনি দেখেন বায়ুর চাপ = কাচনলে পারদস্তম্ভের চাপ । সমুদ্রপৃষ্ঠে বায়ুর স্বাভাবিক চাপ হয় ১০১৩.২৫ মিলিবার ।

ফর্টিন্স ব্যারোমিটার (Fortin's Barometer) : বায়ুর চাপ পরিমাপের জন্য বর্তমানে ফর্টিন্স ব্যারোমিটারের ব্যবহারই সর্বাধিক প্রচলিত । এই ব্যারোমিটারের থার্মোমিটারে মূল স্কেলের সঙ্গে একটি ভার্নিয়ার স্কেল যুক্ত থাকে । ভার্নিয়ার স্কেলের ভাগের সঙ্গে ভার্নিয়ার স্থিরাঙ্ক গুণ করে ভার্নিয়ার পাঠ গ্রহণ করা হয় । যেমন— ব্যারোমিটারে মোট পাঠ ৭৬.৪২ সেমি. হলে, বায়ুর চাপ হয় ১০১৮.৮৫ মিলিবার ।

অ্যানিরয়েড ব্যারোমিটার (Aneroid Barometer) : উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে যে সমস্ত ব্যারোমিটার তৈরি হয়েছে তার মধ্যে অ্যানিরয়েড ব্যারোমিটার অন্যতম । এই ব্যারোমিটারে পারদের উপস্থিতি ছাড়াই অ্যানিরয়েড কক্ষে আটকানো একটি শক্ত স্প্রিং বায়ুচাপের সামান্য পরিবর্তনে চালিত হয়ে অ্যানিরয়েড ব্যারোমিটারের স্কেলে বায়ুর চাপকে নির্দেশ করে । এই ব্যারোমিটারটি বিমান চালক ও পর্বতারোহীরা ব্যবহার করে থাকেন ।   

ডিজিটাল ব্যারোমিটার ও অত্যাধুনিক ব্যারোমিটার : বর্তমানে অত্যাধুনিক ডিজিটাল ব্যারোমিটারের সাহায্যে অতি সহজেই বায়ুর চাপ পরিমাপ করা যায় । এ ছাড়া সাম্প্রতিককালে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির স্মার্ট মোবাইল ফোনের সাহায্যেও বায়ুর চাপ পরিমাপ করা হয়ে থাকে ।

****

Comments

Related Items

বান ডাকা (Tidal Bores)

বান ডাকা (Tidal Bores) : সাধারণত বর্ষাকালে অমাবস্যা ও পূর্ণিমার ভরা কোটালের সময় চন্দ্র ও সূর্যের মিলিত আকর্ষণে জোয়ারের জল নদীর খাড়িপথ ও মোহনা দিয়ে খুব উঁচু হয়ে প্রবল বেগে উজানের দিকে অর্থাৎ নদী প্রবাহের বিপরীত দিকে অগ্রসর হয় । ঢেউ, জলোচ্ছ্বাসসহ নদীর এই

অ্যাপোজি ও পেরিজি (Apogee and Perigee)

অ্যাপোজি ও পেরিজি (Apogee and Perigee) : চাঁদ ও পৃথিবীর মধ্যে গড় দূরত্ব হল ৩,৮৪,৪০০ কিমি.

সিজিগি (Syzygy)

সিজিগি (Syzygy) : জ্যোতির্বিজ্ঞান অনুসারে সূর্য, চাঁদ ও পৃথিবীর একই সরলরৈখিক অবস্থানকে সিজিগি (Syzygy) বলে । সিজিগি আবার সংযোগ অবস্থান ও প্রতিযোগ অবস্থান — এই দু-প্রকারের হয় ।

জোয়ার ভাটার ফলাফল (Effect of Tides)

জোয়ার ভাটার ফলাফল (Effect of Tides) : বিভিন্ন ক্ষেত্রে জোয়ার ভাটার যথেষ্ট প্রভাব লক্ষ্য করা যায় । সমুদ্র উপকূলে ও উপকুলের কাছে নদনদীতে জোয়ার ভাটার প্রভাব বেশি । জোয়ার ভাটার নিম্নলিখিত ফলাফল গুলি হল —

ভরা জোয়ারের তুলনায় মরা জোয়ারে জলস্ফীতি অপেক্ষাকৃত কম হয়

ভরা জোয়ারের তুলনায় মরা জোয়ারে জলস্ফীতি অপেক্ষাকৃত কম হয়