Submitted by avimanyu pramanik on Mon, 09/06/2021 - 08:53

ঘনীভবন (Condensation) : যে প্রক্রিয়ায় বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্প জলকণায় পরিণত হয়, তাকে ঘনীভবন বলে । আর্দ্র বায়ুর উষ্ণতা শিশিরাঙ্কের নীচে নেমে গেলে বায়ুমণ্ডলে অবস্থিত জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলকণায় পরিণত হয় । এই জলকণাসমূহ বিভিন্নরূপে আকাশে ভেসে থাকে । যেমন—  (i) শিশির, (ii) কুয়াশা, (iii) ধোঁয়াশা ও (iv) মেঘ ।

(i) শিশির (Dew) : ভূপৃষ্ঠের কোনো বস্তুকণার (যেমন— ঘাস) ওপর জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে জলবিন্দুর আকারে সঞ্চিত হলে তাকে শিশির বলে । ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুস্তরের অধিক আর্দ্রতা, অতি আর্দ্র মাটি, বাতাসের শান্ত অবস্থা প্রভৃতি অনুকূল অবস্থায় শিশির সৃষ্টি হয় ।

(ii) কুয়াশা (Fog) : ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুস্তরে ভাসমান অতি সূক্ষ্ম কঠিন পদার্থের জলাকর্ষী কণাসমূহকে আশ্রয় করে মেঘের মতো যে ঘনীভবন হয়, তাকে কুয়াশা বলে । ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন আর্দ্র বায়ুস্তর, বায়ুতে জলাকর্ষী কণার উপস্থিতি প্রভৃতি অনুকূল অবস্থা কুয়াশার সৃষ্টি করে । কুয়াশা যখন অত্যন্ত ঘন হয় তখন কুয়াশার মধ্যে ইলশেগুঁড়ির মতো বৃষ্টি হয় । একে কুজ্ঝটিকা বলে ।

(iii) ধোঁয়াশা (Smog) : দূষিত ধোঁয়াকে আশ্রয় করে যে ঘন কুয়াশার সৃষ্টি হয়, তাকে ধোঁয়াশা বলে । ধোঁয়া জলাকর্ষী কণারূপে কাজ করে বলে বৃহৎ শিল্পনগরীতে কলকারখানা ও যানবাহনের ধোঁয়াকে আশ্রয় করে গভীর ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয় । ধোঁয়াশা অনেক সময় ৭ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয় । লন্ডন, টোকিয়ো, লস অ্যাঞ্জেলস প্রভৃতি শিল্পনগরীতে ধোঁয়াশার প্রকোপ অত্যন্ত বেশি । 

(iv) মেঘ (Cloud) : বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তরে ভাসমান অতি সূক্ষ্ম জলকণার পুঞ্জিভূত অবস্থাকে মেঘ বলে । বাতাসে ভাসমান ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ধূলিকণাকে আশ্রয় করে জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে মেঘের সৃষ্টি হয় । মেঘের জলকণাগুলির ব্যাস সাধারণত ০.০২ থেকে ০.০৬ মিমি. হয় । অধিক জলীয় বাষ্পযুক্ত ঘন কালো মেঘ থেকে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে ।

*****

Comments

Related Items

নর্মদা নদী (The Narmada)

নর্মদা নদী (The Narmada) : মহাকাল পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ অমরকন্টক থেকে উৎপন্ন হয়ে নর্মদা নদী উত্তর-পশ্চিমে বেঁকে মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্র হয়ে গুজরাটের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিন্ধ্য ও সাতপুরার সংকীর্ণ গিরিখাত অতিক্রম করে

ব্রহ্মপুত্র নদ (The Brahmaputra)

ব্রহ্মপুত্র নদ : তিব্বতের মানস সরোবরের নিকটবর্তী চেমায়ুং-দুং হিমবাহ থেকে সাংপো নামে উৎপন্ন হয়ে নামচাবারওয়া শৃঙ্গের কাছে চুলের কাটার মত বেঁকে অরুণাচল প্রদেশের মধ্য দিয়ে ডিহং নামে ভারতে প্রবেশ করেছে । এর মোট দৈর্ঘ্য ২,৯০০ কিমি, এর মধ্

সিন্ধু নদ (The Indus)

সিন্ধু নদ : সিন্ধু নদ তিব্বতের মানস সরোবরের উত্তরে অবস্থিত সিন-কা-বাব জলধারা থেকে উৎপন্ন হয়ে উত্তর-পশ্চিমে প্রথমে তিব্বতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পরে লাদাখ অঞ্চল দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে । সিন্ধু নদের মোট দৈর্ঘ্য ৩,১৮০ কিমি এবং এর মধ

গঙ্গা নদী (The Ganges)

গঙ্গা নদী : গঙ্গা ভারতের শ্রেষ্ঠ নদী এবং ভারতের দীর্ঘতম নদী । গঙ্গানদীর মোট দৈর্ঘ্য ২৫১০ কিমি এবং এর মধ্যে ২০১৭ কিমি ভারতে প্রবাহিত । কুমায়ুন হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহের গোমুখ তুষার গুহা থেকে ভাগীরথী নামে উৎপন্ন হয়ে সংকীর্ণ গিরিখাতের

ভারতের নদনদী (Rivers of India)

ভারতের নদনদী : ভারতে অসংখ্য নদনদী বিভিন্ন দিকে প্রবাহিত হয়েছে । উৎস, প্রবাহের অঞ্চল, এবং মোহানা অনুসারে ভারতের নদনদীকে প্রধানত দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় । যেমন— (১) উত্তর ভারতের নদী এবং (২) দক্ষিণ ভারতের নদী ।