আয়োনোস্ফিয়ার (Ionosphere) : মেসোস্ফিয়ার স্তরের শেষ সীমা হল মেসোপজ । আর এই মেসোপজের ওপরে প্রায় ৫০০ কিমি. উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত বায়ুমণ্ডলের স্তরকে আয়নোস্ফিয়ার বলে । এই স্তরে গ্যাসীয় কণাগুলি তড়িৎ-আধানযুক্ত বা আয়নিত অবস্থায় থাকে বলে, এই স্তরটিকে আয়নোস্ফিয়ার বলা হয় । এখানে হাইড্রোজেন, হিলিয়াম, ওজোন প্রভৃতি গ্যাস আয়নিত অবস্থায় থাকে । এই স্তরের নীচের অংশে উষ্ণতা অত্যন্ত দ্রুতহারে বৃদ্ধি পায় বলে স্তরটি থার্মোস্ফিয়ার (Thermosphere) নামেও পরিচিত । মেসোস্ফিয়ারের উর্ধ্বসীমায় অর্থাৎ ভূপৃষ্ঠ থেকে ৮০ কিলোমিটার উচ্চতায় বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা কম বেশি – ৯৩° সেলসিয়াস থেকে বাড়তে বাড়তে ৪৮০ কিলোমিটার উচ্চতায় প্রায় ১২৩২° সেলসিয়াসে পরিণত হয় ।
বৈশিষ্ট্য :
(i) এই স্তরে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতা অত্যন্ত দ্রুতহারে বৃদ্ধি পায় ।
(ii) অতি বেগুনি রশ্মি ও মহাজাগতিক রশ্মির সংঘাতে আয়নোস্ফিয়ারে প্রভূত পরিমাণে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আয়নের সৃষ্টি হয় ।
(iii) এই স্তরে তড়িদাহত অণুর চৌম্বক বিক্ষেপণের ফলে সুমেরু ও কুমেরু অঞ্চলে এক রকম উজ্জ্বল আলোক বিচ্ছুরণ দেখা যায়, একে মেরুজ্যোতি বা মেরুপ্রভা বলে । এই মেরুজ্যোতি বা মেরুপ্রভা সুমেরুতে সুমেরুপ্রভা এবং কুমেরুতে কুমেরুপ্রভা নামে পরিচিত ।
(iv) প্রখর সূর্য কিরণের জন্য হালকা বায়ু দিয়ে গঠিত এই স্তরের ভর বায়ুমণ্ডলের মোট ভরের মাত্র ০.৫% ।
(v) ভূপৃষ্ঠের বেতার তরঙ্গগুলি আয়নোস্ফিয়ার স্তর ভেদ করে আরও ওপরে যেতে পারে না বলে এই স্তর থেকে বেতার তরঙ্গ প্রতিফলিত হয়ে পুনরায় পৃথিবীতে ফিরে আসে । তাই বিভিন্ন রেডিও স্টেশন থেকে প্রচারিত গান, বাজনা, নাটক, কবিতা, সংবাদ প্রভৃতি আমরা রেডিও মারফত বাড়ি বসে শুনতে পাই ।
****