তড়িৎ-পরিবাহী এবং তড়িৎ-অপরিবাহী

Submitted by arpita pramanik on Tue, 02/19/2013 - 21:24

তড়িৎ-পরিবাহী এবং তড়িৎ-অপরিবাহী (Conductors and Non-Conductors) :

তড়িৎ-পরিবাহী (Conductor) : যে সব পদার্থের মধ্য দিয়ে তড়িৎ-প্রবাহিত করলে তা তড়িৎ-পরিবহনে সক্ষম হয়, তাদের তড়িৎ-পরিবাহী পদার্থ বলে । যেমন— সোনা, রুপো, তামা, প্রভৃতি ধাতু, গ্রাফাইট, সোডিয়াম ক্লোরাইড দ্রবণ ইত্যাদি । 

তড়িৎ-পরিবহনে সক্ষম এমন পদার্থগুলিকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়—

  1. ধাতব পরিবাহী 
  2. অধাতব পরিবাহী 
  3. তড়িৎ-বিশ্লেষ্য পদার্থ

ধাতব পরিবাহী : যে সব ধাতব পদার্থ তড়িৎ পরিবহন করে কিন্তু তড়িৎ পরিবহন করলে শুধু উষ্ণতার পরিবর্তন ঘটে কিন্তু কোনো স্থায়ী রাসায়নিক পরিবর্তন হয় না, সেই পদার্থগুলিকে ধাতব পরিবাহী বলে । যেমন— Cu, Fe, Ag ইত্যাদি ধাতু ।

অধাতব পরিবাহী : কতগুলি পদার্থ তড়িৎ পরিবহন করে কিন্তু তড়িৎ পরিবহনের ফলে পদার্থগুলির অস্থায়ী ভৌত পরিবর্তন, যেমন— উষ্ণতার পরিবর্তন ছাড়া আর কোনো স্থায়ী রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে না । এই জাতীয় পরিবাহী অধাতু হলে তাদের অধাতব পরিবাহী বলে । যেমন—  গ্রাফাইট এবং গ্যাস কার্বন অধাতু হলেও তড়িৎ পরিবহনে সক্ষম । এই জাতীয় পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎ-প্রবাহের সময় ইলেকট্রন কণা তড়িৎ পরিবহন করে ।

তড়িৎ-বিশ্লেষ্য পদার্থ : যেসব পদার্থ গলিত অবস্থায় বা জলে দ্রবীভূত অবস্থায় তড়িৎ পরিবহন করে এবং তড়িৎ পরিবহনের সময় যেসব পদার্থের রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে ভিন্ন ধর্মবিশিষ্ট নতুন পদার্থ উৎপন্ন করে, সেই সব পদার্থকে তড়িৎ-বিশ্লেষ্য পদার্থ বলে । অ্যাসিড, ক্ষার, লবণ জাতীয় পদার্থগুলি হল এই শ্রেণির পরিবাহী । H2SO4,  HCl, NaOH, NaCl প্রভৃতি এই জাতীয় পদার্থগুলি আয়নে বিশ্লিষ্ট হয়ে তড়িৎ পরিবহন করে ।

তড়িৎ-অপরিবাহী বা অন্তরক (Non-Conductor) :- যেসব পদার্থের মধ্য দিয়ে সহজে তড়িৎপ্রবাহ হয় না, সেগুলিকে অন্তরক পদার্থ বলে । যেমন - কাঠ,  রবার, কাচ, পলিথিন ইত্যাদি ।

*****

Comments

Related Items

কয়েকটি জারক ও বিজারক পদার্থ

কয়েকটি জারক পদার্থ - ম্যাঙ্গানিজ ডাইঅক্সাইড, নাইট্রিক অ্যাসিড, অক্সিজেন, পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট, গাঢ় সালফিউরিক অ্যাসিড, ওজোন, পটাশিয়াম ডাই-ক্রোমেট, হাইড্রোজেন পারক্সাইড, ফ্লুওরিন, রেড লেড, তরল ব্রোমিন, ক্লোরিন, কয়েকটি বিজারকের বিজারণ ক্ষমতার উদাহরণ ...

জারণ বিজারণের ইলেক্ট্রনীয় মতবাদ

জারণ ও বিজারণ রসায়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিক্রিয়া । সাধারণত কোনো মৌলে বা যৌগে অক্সিজেনের সংযুক্তি বা কোনো যৌগ থেকে হাইড্রোজেনের বিযুক্তিকে জারণ এবং কোনো মৌলে বা যৌগে হাইড্রোজেনের সংযুক্তি বা কোনো যৌগ থেকে অক্সিজেনের বিযুক্তিকে বিজারণ বলা হয় । ...

সমযোজী যৌগগুলির বৈশিষ্ট্য

সাধারণ তাপমাত্রায় বেশির ভাগ সমযোজী যৌগ সাধারণত তরল কিংবা গ্যাসীয় অবস্থায় থাকে কিন্তু বেশি আণবিক গুরুত্ববিশিষ্ট সমযোজী মৌল বা যৌগগুলি কঠিন বা তরল হয় । সমযোজী যৌগে সমযোজী বন্ধন দৃঢ় প্রকৃতির, তার ফলে অণুগুলি স্থায়ী হয় । ...

ইলেক্ট্রনীয় যোজ্যতা বা তড়িৎ-যোজ্যতা

সাধারণ অবস্থায় পরমাণুর মধ্যে ইলেকট্রন এবং প্রোটন সংখ্যা সমান হওয়ার জন্য পরমাণু নিস্তড়িৎ হয় । সাধারণ নিয়মে পরমাণুর সংযোগ হওয়ার সময় ধাতুর পরমাণু ইলেকট্রন বর্জন এবং অধাতুর পরমাণু ইলেকট্রন গ্রহণ করে । ফলে কোনো পরমাণু ইলেকট্রন বর্জন করে ধনাত্মক আয়নে পরিণত হয় ...

সমযোজ্যতা (Covalent)

সমযোজ্যতা: অনেকক্ষেত্রে দুটি পরমাণু সংযোগের সময় প্রত্যেক পরমাণুর সবচেয়ে বাইরের কক্ষ থেকে একটি করে ইলেকট্রন এসে ইলেকট্রন জোড় সৃষ্টি করে । এই রকম এক বা একাধিক ইলেকট্রন জোড় উভয় পরমাণুর মধ্যে সাধারণভাবে থেকে যৌগ গঠন করে । এই ধরনের যৌগ তৈরি হওয়ার ...