স্থিতি ও গতি (Rest and Motion)

Submitted by arpita pramanik on Tue, 03/27/2018 - 23:07

স্থিতি ও গতি (Rest and Motion)

কোনো বস্তু যদি সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে পারিপার্শ্বিক বস্তুসমূহের  সাপেক্ষে স্থান পরিবর্তন না করে, তাহলে ওই বস্তুটিকে স্থির বস্তু (body is at rest) বলা হয় । বস্তুর এই অবস্থাকে স্থিতি বলে । আবার কোনো বস্তু যদি সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে পারিপার্শ্বিক বস্তুসমূহের  সাপেক্ষে স্থান পরিবর্তন করে, তাহলে ওই বস্তুটিকে গতিশীল বস্তু (body is in motion) বলা হয় । বস্তুর এই অবস্থাকে গতি বলে ।

কোনো বস্তুকে স্থির দেখলে তা কিন্তু প্রকৃত স্থির নয় । বাড়ি ঘর স্থির হলেও তা কেবল পৃথিবীর সাপেক্ষেই স্থির । কিন্তু পৃথিবী নিজেই সূর্যের সাপেক্ষে গতিশীল । তাই বাড়ি ঘর প্রকৃত পক্ষে স্থির নেই । এই মহাবিশ্বে প্রকৃত স্থির কোনো বস্তুর হদিস এখনও জানা যায় নি । অর্থাৎ, ‘পরম স্থিতি (absolute rest)’ এখনও আমাদের অজানা । আবার প্রকৃত স্থির কোনো বস্তুর সাপেক্ষে কোনো বস্তু গতিশীল হলে ওই বস্তুর গতিকে ‘পরম গতি (absolute motion)’ বলা চলে । যেহেতু পরম স্থিতি কী তা এখনও অজ্ঞাত তাই পরম গতিও আমাদের অজানা । যেমন –চলন্ত গাড়ি গতিশীল হলেও তা পৃথিবীর সাপেক্ষে গতিশীল । কিন্তু পৃথিবী নিজেই গতিশীল বলে গাড়ির গতিকে পরম গতি (absolute motion) বলা চলে না । যখনই কোনো বস্তুর স্থিতি বা গতি বিচার করা হয় তা পারিপার্শ্বিক কোনো বস্তু বা বস্তুসমূহের সাপেক্ষে বিচার করা হয় ।

আপেক্ষিক স্থিতি এবং গতি (Relative Rest and Motion) : যখন অন্য কোনো বস্তুর সাপেক্ষে কোনো বস্তুর স্থিতি বা গতি বিচার করা হয় তখন বস্তুর স্থিতি বা গতি আপেক্ষিক হয় । যে বস্তুর সাপেক্ষে স্থিতি বা গতি বিচার করা হয় তাকে নির্দেশ বস্তু বা নির্দেশতন্ত্র বলে । কোনো নির্দেশ তন্ত্রের উল্লেখ না থাকলে পৃথিবীকেই নির্দেশতন্ত্র হিসেবে ধরা হয় । যেমন –গাছটি স্থির বা গাড়িটি গতিশীল বললে আমরা পৃথিবীর সাপেক্ষেই ওই স্থিতি বা গতি বুঝি । কোনো বস্তু একটি নির্দেশতন্ত্রের সাপেক্ষে স্থির হলেও অন্য একটি নির্দেশ তন্ত্রের সাপেক্ষে গতিশীল হতে পারে । অর্থাৎ, বস্তুটিতে একই সঙ্গে স্থিতি বা গতি থাকা সম্ভব  । যেমন, কোনো ব্যক্তি চলন্ত ট্রেনে বসে থাকলে ট্রেন বা অন্যান্য সহযাত্রীর সাপেক্ষে ওই ব্যক্তি স্থির, কিন্তু ট্রেনের বাইরে দাঁড়ানো কোনো ব্যক্তি অর্থাৎ, পৃথিবীর সাপেক্ষে ওই ব্যক্তি গতিশীল । মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তুই একে অপরের সাপেক্ষে গতিশীল । তাই প্রকৃতিতে পরম স্থিতি বলে কিছু নেই । যেহেতু পরম স্থিতিশীল কোনো বস্তুর অস্তিত্ব নেই, তাই পরম গতিশীল বস্তু বলেও কিছু হয় না । তাই বলা যায় যে, সব স্থিতি এবং গতি সম্পূর্ণ আপেক্ষিক ।

 

গতির প্রকারভেদ

গতি সংক্রান্ত কয়েকটি রাশি

নিউটনের গতিসূত্র

নিউটনের প্রথম সূত্র আলোচনা পদার্থের জাড্য ধর্ম এবং বলের সংজ্ঞা

বল এবং বলের সংজ্ঞা

নিউটনের তৃতীয় সূত্রের আলোচনা বলের পরিমাপ

বলের পরিমাপ

বলের একক

নিউটনের তৃতীয় সূত্রের আলোচনা ক্রিয়া এবং প্রতিক্রিয়া

*****

Comments

Related Items

প্রেসার কুকার (Pressure Cooker)

প্রেসার কুকার যন্ত্রে জলীয় বাষ্পের চাপ বাড়িয়ে 100°C এর বেশি উষ্ণতায় জলকে ফোটানো হয় । ফলে বেশি উষ্ণতায় খাদ্যদ্রব্য অল্পসময়ের মধ্যে সুসিদ্ধ হয় । অ্যালুমিনিয়াম বা স্টিলের সংকর ধাতু দিয়ে তৈরি শক্ত একটি পাত্র প্রেসার কুকার তৈরীর জন্য ব্যবহার করা হয় যাতে 2 বায়ুমন্ডল চাপের

অ্যাসিড, ক্ষারক ও লবণ

সালফিউরিক অ্যাসিড (H2SO4), নাইট্রিক অ্যাসিড (HNO3), হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড (HCL), সোডিয়াম হাইড্রক্সাইড (NaOH), পটাশিয়াম হাইড্রক্সাইড (KOH), ম্যাগনেসিয়াম সালফেট (MgSO4), সোডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl)

দ্রবণ (Solution)

যে পদার্থ দ্রবীভূত হয় তাকে দ্রাব বলে এবং যার মধ্যে দ্রাব দ্রবীভূত হয় তাকে বলা হয় দ্রাবক । দ্রাব এবং দ্রাবক এর সমসত্ব মিশ্রণ হল দ্রবণ । দ্রবণের দুটি অংশে থাকে --- দ্রাব (Solute) এবং দ্রাবক (Solvent) । অর্থাৎ দ্রবণ = দ্রাব + দ্রাবক

শব্দ বিস্তারের জন্য মাধ্যমের প্রয়োজন হয়

শব্দের উৎস থেকে উৎপন্ন শব্দ বায়ু মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আমাদের কানে এসে পৌঁছলে মস্তিষ্কে এক রকম অনুভূতি সৃষ্টি করে । তখন আমরা শব্দ শুনতে পাই । বায়ু মাধ্যম না থাকলে শব্দ আমাদের কানে পৌঁছতে পারত না । ফলে আমরা শব্দ শুনতে পেতাম না । কঠিন মাধ্যমের মধ্য দিয়ে শব্দের বিস্তার ...

পদার্থের অবস্থার পরিবর্তন

পদার্থ কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় এই তিন অবস্থায় থাকতে পারে । তাপ প্রয়োগ করলে পদার্থের অবস্থার পরিবর্তন হয় । তাপ প্রয়োগে কঠিন পদার্থ প্রথমে তরল এবং পরে গ্যাসীয় অবস্থায় পরিবর্তিত হয় আবার তাপ নিষ্কাশনে গ্যাসীয় পদার্থ প্রথমে তরল এবং পরে কঠিন অবস্থায় রূপান্তরিত হয় ।