'কোনি' উপন্যাসের কাহিনি অবলম্বনে স্বামীর যোগ্য সহধর্মিনী রূপে লীলাবতীর পরিচয় দাও ।
উঃ- মতি নন্দী রচিত 'কোনি' উপন্যাসটি মূলত কোনি এবং তাঁর প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়েছে । পার্শ্বচরিত্র হিসেবে অনেকেই এসেছেন । তাঁদের মধ্যে ক্ষিতীশ সিংহের স্ত্রী লীলাবতী অন্যতম ।
পরিশ্রমী ও কর্মপটু : ছোটখাটো চেহারার, গৌরবর্ণা এবং গম্ভীর স্বভাবের লীলাবতী যথেষ্ট পরিশ্রমী । তাঁর সাংসারিক জ্ঞান ও সমস্ত কিছু দেখভাল করার জন্যই ক্ষিতীশ সিংহের সংসার টিকে ছিল । লীলাবতীর কর্মতৎপরতাতেই তাঁদের সংসার চলত । 'সিনহা টেলারিং' যখন লোকসানের মুখে সেই সময় লীলাবতী নিজের গয়না বন্ধক রেখে নতুন ধরনের কাজ শুরু করেন । এসময় তিনি দোকানের নাম পালটে 'প্রজাপতি' রেখে অসম্ভব পরিশ্রম ও কর্মতৎপরতার মাধ্যমে চার বছরের মধ্যেই 'প্রজাপতি'র শ্রীবৃদ্ধি ঘটান ।
ব্যবসায়ী মানসিকতাসম্পন্ন : ব্যবসায়িক মনের পরিচয় দিয়ে তিনি পুরুষদের পোশাক তৈরি বন্ধ করে দুজন মহিলা কর্মচারীকে দোকানে রেখে শুধু মেয়ে ও শিশুদের পোশাক তৈরি শুরু করেন । তাঁর নেতৃত্বেই ব্যবসা ক্রমশ বড়ো হয়ে ওঠে এবং আরও বড়ো স্থানের প্রয়োজন হয়ে পড়ে । সেক্ষেত্রেও তিনি নিজেই হাতিবাগানের মতো এলাকায় পাঁচ হাজার টাকার সেলামিতে একটি ভাড়ার দোকানের ব্যবস্থা করেন ।
যোগ্য সহধর্মিনী : গম্ভীর স্বভাবের হলেও লীলাবতী স্বামীর প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল এবং পতিপ্রাণা ছিলেন । স্বামীর স্বভাব এবং সাঁতারপ্রীতির কথা জানতেন বলেই সাংসারিক ও ব্যবসায়ীক সমস্তরকম দেখভাল নিজেই করতেন । স্বামীর আদর্শ বা ভাবনা মেনে নিয়েই তাঁরই ইচ্ছামতো খাওয়ার পদ্ধতিও প্রায় মেনে নিয়েছিলেন । স্বামীর পরিশ্রমী সত্তার প্রতি শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস অটুট ছিল বলেই তিনি কোনির সাঁতার দেখতে হাজির হয়েছিলেন । স্বল্প পরিসরেও তাঁর কর্মপ্রাণা, সংসারী এবং পরোক্ষে স্বামী অনুরাগী চরিত্রটি উপন্যাসে ধরা পড়েছে ।
****