দক্ষিণ ভারতের সংস্কার আন্দোলন

Submitted by avimanyu pramanik on Sun, 04/22/2012 - 22:53

দক্ষিণ ভারতের সংস্কার আন্দোলন (Reform Movement in South India) :

দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিম ভারতে মহারাষ্ট্র ছিল ধর্ম সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম ক্ষেত্র । ১৮৪০ সালে  মুম্বই -এ স্থাপিত, পরমহংসমন্ডলী এই শিক্ষা ও আন্দোলন গড়ে তোলেন । এই আন্দোলনকে যাঁরা আরও এগিয়ে নিয়ে যান তাঁরা হলেন মহাত্মা জ্যোতিবা ফুলে এবং লোকহিতবাদী গোপালহরি দেশমুখ । এই সংস্থা জাতিভেদ ও মূর্তিপূজার ঘোর বিরোধী ছিলেন । মহারাষ্ট্রের সমাজ সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃত জ্যোতিবা ফুলে জাতিভেদ প্রথা, অস্পৃশ্যতা দূরীকরণ এবং নিম্নবর্গের মানুষের অবস্থার উন্নতির জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন । পাশ্চাত্য শিক্ষা, বিশেষত নারী শিক্ষার বিস্তারেও তিনি সচেষ্ট হয়েছিলেন । মহারাষ্ট্রের পারসিরাও সংস্কার আন্দোলনে ব্রতী হয়েছিলেন । ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজি শিক্ষিত তরুণ পারসিরা 'রুনুমাই মায়দামসনান সভা' গড়ে তুলেছিলেন । ধর্মগুরু জরথুষ্টু প্রচারিত ধর্মের বিশুদ্ধতা রক্ষা ছিল এই সভার কাজ । পারসি সংস্কারকরা স্ত্রী শিক্ষার বিস্তার, পর্দাপ্রথা রোধ ও বিয়ের বয়স বৃদ্ধির পক্ষে মত ব্যক্ত করেছিলেন । এছাড়া ঊনিশ শতকের শেষ দিকে পাঞ্জাবের অমৃতসর ও লাহোরে প্রতিষ্ঠিত সিংহসভার নেতৃত্বে পাঞ্জাব সংস্কার আন্দোলন শুরু হয়েছিল । খালসা কলেজের প্রতিষ্ঠা এবং আকালীদের যোগদানে এই আন্দোলন গতি পায় । উনবিংশ শতকে ভারতে যে ধর্মীয় এবং সামাজিক পুনরুজ্জীবন আন্দোলন শুরু হয় তা ভারতীয় সমাজে বহুবিধ প্রভাব বিস্তার করে, যেমন-

(১) ভারতবাসীরা তাদের সামাজিক কুপ্রথার বিরুদ্ধে ক্রমশ সজাগ হয়ে ওঠে ।

(২) ভারতবাসীরা তাদের প্রাচীন ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সভ্যতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে ওঠে ।

(৩) ভারতীয় নবজাগরণ ভারতীয়দের মধ্যে জাতীয়তাবাদী চিন্তাধারার বিকাশে নানা ভাবে সাহায্য করেছিল ।

(৪) ভারতীয় জাতীয়তাবাদ প্রথমে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বিকশিত হয়েছিল, পরে উনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে তা রাজনৈতিক চরিত্র লাভ করে ।

বীরসা লিঙ্গম পানতুলে :

(১) বীরসালিঙ্গম পানতুলে ছিলেন উনিশ শতকের মধ্যভাগে দক্ষিণ ভারতের সমাজ সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ।

(২) তিনি অন্ধ্র তথা দক্ষিণ ভারতের সমাজ, শিক্ষা, সাহিত্য-সংস্কৃতির মান উন্নয়নের জন্য আন্তরিক প্রচেষ্টা চালান এবং তেলেগু উপন্যাস, নাটক এবং পত্রপত্রিকা প্রকাশের মাধ্যমে সমাজের প্রচলিত কুসংস্কার, জাতিভেদ, বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ প্রভৃতি কুপ্রথার বিরোধিতা করেন ।

(৩) শিক্ষা বিস্তারের উদ্দেশ্যে তিনি দুটি বালিকা বিদ্যালয়সহ বহু বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন । এইব কাজের জন্য বীরসা লিঙ্গমকে ‘আধুনিক অন্ধ্রের জনক’ বলা হয় ।

*****

Related Items

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে কী কী কারণে ইউরোপীয় দেশগুলির গণতন্ত্রের পতন ঘটে ? দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ আলোচনা কর ।

প্রশ্ন:- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে কী কী কারণে ইউরোপীয় দেশগুলির গণতন্ত্রের পতন ঘটে ? দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ আলোচনা কর ।

হিটলার কীভাবে পররাজ্য গ্রাস শুরু করেছিলেন ? হিটলারের আক্রমণ প্রতিহত না করে পশ্চিমী গণতান্ত্রিক শক্তিগুলি কোন নীতি গ্রহণ করেছিল এবং কেন ? এর ফল কী হয়েছিল ?

প্রশ্ন:- হিটলার কীভাবে পররাজ্য গ্রাস শুরু করেছিলেন ? হিটলারের আক্রমণ প্রতিহত না করে পশ্চিমী গণতান্ত্রিক শক্তিগুলি কোন নীতি গ্রহণ করেছিল এবং কেন ? এর ফল কী হয়েছিল ?

(ক) পোল্যান্ড-জার্মান অনাক্রমণ চুক্তি, (খ) মিউনিখ চুক্তি, (গ) রুশ-জার্মান অনাক্রমণ চুক্তি— এই চুক্তিগুলি হিটলার কেন স্বাক্ষর করেছিলেন ?

প্রশ্ন:- (ক) পোল্যান্ড-জার্মান অনাক্রমণ চুক্তি, (খ) মিউনিখ চুক্তি,  (গ) রুশ-জার্মান অনাক্রমণ চুক্তি— এই  চুক্তিগুলি হিটলার কেন স্বাক্ষর করেছিলেন ?

নাৎসি দলের পররাষ্ট্রনীতির মূল উদ্দেশ্য কী ছিল ?

প্রশ্ন:- নাৎসি দলের পররাষ্ট্র নীতির মূল উদ্দেশ্য কী ছিল ?

জার্মানির নাৎসি দলের পররাষ্ট্রনীতির মূল উদ্দেশ্য —

(ক) ইউরোপ তথা সারা বিশ্বে জার্মানিকে প্রধান শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা ।

(খ) ভার্সাই সন্ধির অপমান জনক চুক্তিগুলি অমান্য করা ।

নাৎসি দলের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য কী ছিল ? নাৎসি দল জার্মানিতে কীভাবে সরকারি ক্ষমতা দখল করে ?

প্রশ্ন :- নাৎসি দলের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য কী ছিল ? নাৎসি দল জার্মানিতে কীভাবে সরকারি ক্ষমতা দখল করে ?

হিটলার বা তাঁর নাৎসি দলের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য ছিল:-