ড্রসোফিলার দ্বি-সংকর জননের পরীক্ষা

Submitted by arpita pramanik on Wed, 12/19/2012 - 12:58

ড্রসোফিলার দ্বি-সংকর জননের পরীক্ষা (Dihybrid cross in Drosophila)

ড্রসোফিলা-তে স্বাভাবিক ধূসর রং [grey = e+] কালো রং -এর [ebony = e] সাপেক্ষে প্রকট এবং স্বাভাবিক দৈর্ঘ্যের লম্বা ডানা [long = vg+], লুপ্তপ্রায় ডানার [vestigial = vg] সাপেক্ষে প্রকট

একটা হোমোজাইগাস ধূসর রং -এর লম্বা ডানাযুক্ত ড্রসোফিলার সাথে অপর একটি হোমোজাইগাস কালো রং -এর লুপ্তপ্রায় ডানাযুক্ত ড্রসোফিলার সংকরায়ণ ঘটালে F1 জনুতে প্রাপ্ত সব মাছিই ধূসর রং -এর এবং লম্বা ডানাযুক্ত হয়; অর্থাৎ ধূসর রং এবং লম্বা ডানার বৈশিষ্ট্যগুলি প্রকট । F1 জনুর মাছিদের সংকরায়ণের ফলে F2 জনুতে উত্পন্ন মাছিগুলির 9/16 হয় ধুসর রং এবং লম্বা ডানাযুক্ত,  3/16 হয় কালো রং এবং লম্বা ডানাযুক্ত,  3/16 হয় ধূসর রং এবং লুপ্তপ্রায় ডানাযুক্ত এবং 1/16 হয় কালো রং এবং লুপ্ত প্রায় ডানাযুক্ত ।

নীচের ক্রসে লক্ষ করা যায় যে, F1 মাছিরা b + b vg + vg জেনোটাইপযুক্ত এবং যেহেতু স্বাধীন বিন্যাসের ফলে তারা b + vg+,  b+vg,  b vg+ এবং  b vg  । গ্যামেট সমপরিমাণে অর্থাৎ 1 : 1 : 1 : 1 অনুপাতে উত্পাদন করে, তাই তাদের যথেচ্ছ নিষেকের ফলে F2 তে 9 : 3 : 3 : 1 অনুপাত গঠিত হয় ।

এক সংকরায়ণ ও দ্বি-সংকরায়ণ

একসংকরায়ণ দ্বিসংকরায়ণ
১. একই চরিত্রের কিন্তু বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যযুক্ত একজোড়া একই প্রজাতির দুটি জীবের মধ্যে পরনিষেক বা সংকরায়ণকে এক সংকরায়ণ বলে । ১. একই প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত দু'জোড়া বিপরীতধর্মী চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন দুটি জীবের মধ্যে পরনিষেক বা সংকরায়ণকে দ্বিসংকরায়ণ বলে ।
২. উদাহরণ — লম্বা মটরগাছের সঙ্গে বেঁটে মটরগাছের সংকরায়ণ এক সংকরায়ণের উদাহরণ । ২. উদাহরণ —গোল-হলুদ বীজযুক্ত মটরগাছের সঙ্গে কুঞ্চিত-সবুজ বীজযুক্ত মটরগাছের সংকরায়ণ দ্বিসংকরায়ণের উদাহরণ ।

জিনোটাইপ ও ফিনোটাইপ

জিনোটাইপ ফিনোটাইপ

১. জিন সংযুক্তির দ্বারা নির্ধারিত জীবের বৈশিষ্ট্যকে বলে জিনোটাইপ ।

জীবের বৈশিষ্ট্যের বাহ্যিক প্রকাশকে বলে ফিনোটাইপ ।
২. উদাহরণ —মটর গাছের ক্ষেত্রে বিশুদ্ধ লম্বা [TT], সংকর লম্বা [Tt], বিশুদ্ধ বেঁটে [tt] ইত্যাদি হল জিনোটাইপ । উদাহরণ —মটর গাছের ক্ষেত্রে লম্বা [TT বা Tt], বেঁটে [tt] ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যগুলি (যা বাইরে থেকে দেখে বোঝা যায়) হল ফিনোটাইপ ।

*****

Related Items

ক্রোমোজোমের প্রকারভেদ : অটোজোম ও সেক্স ক্রোমোজোম

ক্রোমোজোমে দু'ধরনের প্রোটিন পাওয়া যায়, যথা: হিস্টোন এবং নন-হিস্টোন। ক্ষারীয় প্রোটিন সাধারণত হিস্টোন জাতীয় প্রোটিন দিয়ে গঠিত হয়, এর মধ্যে প্রধানত আর্জিনিন , হিস্টিডিন ও লাইসিন জাতীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে । DNA অম্লধর্মী এবং হিস্টোন ক্ষারধর্মী, তাই ক্রোমোজোমে ...

আর.এন.এ. বা রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড (RNA)

বেশিরভাগ প্রোক্যারিওটিক ও ইউক্যারিওটিক কোশে DNA ছাড়াও আর এক রকমের নিউক্লিক অ্যাসিড পাওয়া যায়, যা RNA বা রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড নামে পরিচিত । RNA কোশের সাইটোপ্লাজমে মুক্ত অবস্থায় এবং রাইবোজোমের সঙ্গে যুক্ত অবস্থায় থাকে । তবে ক্রোমোজোম ...

ডি.এন.এ. বা ডি-অক্সি রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড (DNA)

ডি-অক্সিরাইবোজ শর্করা দিয়ে গঠিত যে নিউক্লিক অ্যাসিড জীবের সমস্ত জৈবিক কাজ ও বংশগত বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণ করে, তাকে DNA বা ডি-অক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড বলে। কয়েক ধরনের ভাইরাস ছাড়া সব রকমের সজীব কোশেই DNA থাকে । প্রধানত নিউক্লিয়াসের মধ্যে ...

ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমের বহির্গঠন ও উপাদান

যে-কোনো কোশের প্রতিটি ক্রোমোজোমের দুটি প্রধান অংশ থাকে, যথা -ক্রোমাটিড এবং সেন্ট্রোমিয়ার। প্রত্যেক ক্রোমোজোম লম্বালম্বিভাবে বিভক্ত হওয়ার পর যে দুটি সমান আকৃতির সুতোর মতো অংশ গঠন করে, তাদের প্রত্যেকটিকে ক্রোমাটিড বলে। প্রতিটি ক্রোমাটিড ...

ইউক্যারিওটিক কোশের ক্রোমোজোম, DNA, RNA ও জিন

1902 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী টি.বোভেরি ও ডব্লু. এস. সাটনের পরীক্ষা প্রমাণ করে যে, জিন হল ক্রোমোজোমের একটি অংশ । পরবর্তীকালে বিভিন্ন বিজ্ঞানীর গবেষণা থেকে প্রমাণিত হয় যে, জিন হল ক্রোমোজোমের মধ্যে থাকা D.N.A. -র একটি অংশ। এরপর বিজ্ঞানী গ্রিফিথ, অ্যাভারি, ম্যাকলয়েড ...