ষোড়শ মহাজনপদ (Sixteen Mahajanapadas)

Submitted by avimanyu pramanik on Tue, 04/17/2012 - 17:55

ষোড়শ মহাজনপদ (Sixteen Mahajanapadas) :

খ্রিস্ট পূর্ব ষষ্ঠ শতকে ভারত ঐক্যবদ্ধ ছিল না । মূলত বৌদ্ধ ও জৈন শাস্ত্র থেকে জানতে পারা যায় যে, ওই সময় ভারত ষোলটি রাজ্য বা মহাজনপদে বিভক্ত ছিল । যথা—

(১) অঙ্গ (বর্তমান পূর্ব বিহারের মুঙ্গের ও ভাগলপুর),

(২) মগধ (বর্তমান দক্ষিণ বিহারের পাটনা, গয়া এবং সাহাবাদের কিছু অংশ),

(৩) বৃজি (বর্তমান বিহারের গঙ্গানদীর উত্তর দিকের অঞ্চল),

(৪) কাশী (বর্তমান উত্তর প্রদেশের বারাণসী),

(৫) কোশল (বর্তমান উত্তর প্রদেশের অযোধ্যা),

(৬) মল্ল (বর্তমান উত্তর প্রদেশের দেওরিয়া, বস্তি, গোরক্ষপুর এবং সিদ্ধার্থ নগর ),

(৭) চেদি (যমুনা ও নর্মদার মধ্যবর্তী অঞ্চল),

(৮) বৎস (বর্তমান উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদ ও মির্জাপুর ),

(৯) কুরু (বর্তমান থানেশ্বর, দিল্লি ও মিরাট অঞ্চল ),

(১০) পাঞ্চাল (বর্তমান উত্তর প্রদেশের পশ্চিমাঞ্চল, বেরিলি, বদায়ুন ও ফরক্কাবাদ),

(১১) মৎস (বর্তমান রাজস্থানের আলোয়ার, ভরতপুর ও জয়পুর অঞ্চল ),

(১২) সুরসেন (বর্তমান উত্তর প্রদেশের মথুরা),

(১৩) অস্মক (বর্তমান গোদাবরীর দক্ষিণতীর),

(১৪) অবন্তী (বর্তমান মালয়),

(১৫) গান্ধার (বর্তমান পাকিস্তানের পেশোয়ার ও রাওয়ালপিন্ডি)

(১৬) কম্বোজ (দক্ষিণ-পশ্চিম কাশ্মীর)।

এই মহাজনপদগুলির অধিকাংশ রাজতান্ত্রিক হলেও, দু-একটি রাজ্যে যেমন—বৃজি ও মল্ল -এ প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত ছিল । রাজনৈতিক প্রাধান্য বিস্তারের জন্য রাজ্যগুলির মধ্যে দ্বন্দ্ব ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা লেগেই থাকত । ক্রমে চারটি রাজ্য মগধ, কোশল, অবন্তি ও বৎস অপর রাজ্যগুলিকে গ্রাস করে শক্তিশালী হয়ে ওঠে । তারপর সাম্রাজ্য গঠনের জন্য ঐ চারটি রাজ্য যুদ্ধে লিপ্ত হয় । অবশেষে মগধ এই যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে ভারতে প্রথম একটি ঐক্যবদ্ধ সাম্রাজ্য স্থাপন করে ।

*****

Related Items

সাতবাহন সাম্রাজ্য (Satabahanas dynasty)

দাক্ষিণাত্য ও মধ্য ভারতে মৌর্যদের প্রভাব খুবই কম ছিল । অশোকের মৃত্যুর পর দাক্ষিণাত্যে মৌর্যদের আধিপত্য শেষ হয়ে যায় । কিন্তু যাতায়াতের অসুবিধা ও এখানকার অনুন্নত অর্থনীতি গোড়ার দিকে এই অঞ্চলকে বিদেশি আক্রমণ থেকে মুক্ত রাখে । ফলে খ্রিস্ট পূর্ব প্রথম শতক থেকে সাতবাহন ...

কুষাণ সাম্রাজ্য (Kushana Dynasty)

মৌর্য সম্রাজ্যের পতনের পর যে সমস্ত বৈদেশিক জাতি ভারতে অনুপ্রবেশ করে ছিল, তাদের মধ্যে কুষাণরাই ছিল সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য । মৌর্যদের পর তারাই প্রথম একটি বিরাট সাম্রাজ্য স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছিল । কুষাণদের ভারতে প্রবেশের ইতিহাস অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক । ...

মগধের উত্থান (Rise of Magadha)

পরপর চারটি শক্তিশালী রাজবংশের ধারবাহিক রাজত্ব মগধের উত্থান সম্ভব করেছিল। সেই চারটি রাজবংশ হল- (১) হর্ষঙ্ক বংশ, (২) শিশুনাগ বংশ, (৩) নন্দ বংশ ও (৪) মৌর্য বংশ। মগধের উত্থানের কারণ , মৌর্যবংশ, মৌর্য শাসনব্যবস্থা, অশোক, কলিঙ্গযুদ্ধ জয় ...

রাজশক্তির উত্থান (Growth of kingship)

প্রথম দিকে আর্যরা ভরত, যদু, অনু, পুরু, সঞ্জয় প্রভৃতি বিভিন্ন উপজাতিতে বিভক্ত ছিল। পশুচারণ ও কৃষিজমি অধিকার নিয়ে প্রায়ই তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও যুদ্ধ বিগ্রহ লেগে থাকত। তখনকার দিনে রাজারা ছিল যোদ্ধাদের নেতা । ঋক্‌বেদে দশ রাজার যুদ্ধ থেকে এই যুদ্ধ ...

আধুনিক যুগের ঐতিহাসিক উপাদান

আধুনিক যুগের ইতিহাস রচনার জন্য ঐতিহাসিক উপাদানের কোনো অভাব নেই । লেখ্যাগারে সঞ্চিত সরকারি নথিপত্র, বিভিন্ন বিদেশী, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাগজপত্র, সংবাদ পত্র ও সাময়িক পত্র, শাসক ও সরকারি কাজে নিযুক্ত কর্মচারীদের দিনপঞ্জী ...