Answer for Madhyamik Examination (WBBSE) - History 2017 (Bengali version)

Submitted by avimanyu pramanik on Fri, 09/18/2020 - 22:25

Madhyamik Examination (WBBSE) - 2017 History (Bengali version)

             বিভাগ—ক

১. সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো :      ১x২০=২০

১.১ ভারতে ফুটবল খেলা প্রবর্তন করেন—

      (ক) ইংরেজরা      (খ) ওলন্দাজরা      (গ) ফরাসিরা      (ঘ) পোর্তুগিজরা

১.২ বিপিনচন্দ্র পাল লিখেছেন—

      (ক) সত্তর বৎসর       (খ) জীবনস্মৃতি       (গ) এ নেশন ইন মেকিং       (ঘ) আনন্দমঠ

১.৩  'বামাবোধিনী' পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন—

       (ক) উমেশচন্দ্র দত্ত       (খ) শিশিরকুমার ঘোষ      (গ) কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার       (গ) দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ

১.৪  সাধারন জনশিক্ষা কমিটি গঠিত হয়—

       (ক) ১৭১৩ খ্রিস্টাব্দে      (খ) ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে      (গ) ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে      (ঘ) ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে

১.৫  নববিধান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন—

       (ক) দয়ানন্দ সরস্বতী       (খ) কেশবচন্দ্র সেন       (গ) স্বামী বিবেকানন্দ       (ঘ) মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর

১.৬  সুই মুন্ডা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন—

       (ক) চুয়াড় বিদ্রোহ       (খ) কোল বিদ্রোহ       (গ) সাঁওতাল হুল      (ঘ) মুন্ডা বিদ্রোহ

১.৭  ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে অরণ্য আইনে অরণ্যকে ভাগ করা হয়—

       (ক) দুটি স্তরে       (খ) তিনটি স্তরে       (গ) চারটি স্তরে       (ঘ) পাঁচটি স্তরে

১.৮  ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ বলেছিলেন—

        (ক) সুভাষচন্দ্র বসু       (খ) জওহরলাল নেহরু       (গ) বি. ডি. সাভারকার       (ঘ) রাসবিহারী বসু

১.৯  ভারতের প্রথম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হল—

        (ক) ভারতসভা        (খ) ভারতের জাতীয় কংগ্রেস      (গ) বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা      (ঘ) ল্যান্ড হোল্ডার্স সোসাইটি

১.১০  'ভারতমাতা' চিত্রটি  আঁকেন—

         (ক) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর       (খ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর      (গ) নন্দলাল বসু      (ঘ) গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর

১.১১ ভারতে 'হাফ টোন' প্রিন্টিং পদ্ধতি প্রবর্তন করেন—

        (ক) উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী      (খ) সুকুমার রায়       (গ) পঞ্চানন কর্মকার       (ঘ) চার্লস উইলকিন্স

১.১২  বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠা করেন—

        (ক) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর      (খ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর       (গ) স্বামী বিবেকানন্দ        (ঘ) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর

১.১৩ 'একা' আন্দোলনের নেতা ছিলেন—

        (ক) মাদারি পাসি      (খ) ডঃ আম্বেদকর       (গ) মহাত্মা গান্ধি       (ঘ) বাবা রামচন্দ্র

১.১৪  নিখিল ভারত ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা হয়েছিল—

        (ক) ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে      (খ) ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে      (গ) ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে      (ঘ) ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে

১.১৫  বারদৌলি সত্যাগ্রহ হয়েছিল—

        (ক) বোম্বাই -এ       (খ) পাঞ্জাবে       (গ) মাদ্রাজে      (ঘ) গুজরাটে

১.১৬  বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন হয়েছিল —

        (ক) ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে      (খ) ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে      (গ) ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে      (ঘ) ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে  

১.১৭  মাতঙ্গিনী হাজরা 'ভারত ছাড়ো' আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন যে স্থানে—

        (ক) তমলুক      (খ) সুতাহাটা      (গ) বরিশাল     (গ) পুরুলিয়া

১.১৮  দীপালী সংঘ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন—

         (ক) কল্পনা দত্ত        (খ) লীলা নাগ (রায়)      (গ) বাসন্তী দেবী       (ঘ) বীণা দাস

১.১৯  ভারতের 'লৌহমানব' বলা হয়—

         (ক) মহাত্মা গান্ধিকে      (খ) সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলকে      (গ) মোহম্মদ আলি জিন্নাকে       (ঘ) রাজেন্দ্র প্রসাদকে 

১.২০  'এ ট্রেন টু পাকিস্তান' লিখেছেন—

         (ক) জওহরলাল  নেহেরু       (খ) ভি পি মেনন        (গ) খুশবন্ত সিং      (ঘ) সলমন রুশদি

                    বিভাগ—খ

২. যে-কোনো ষোলোটি প্রশ্নের উত্তর দাও  ( প্রতিটি উপবিভাগ থেকে অন্তত একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে) :   ১x১৬=১৬

       উপবিভাগ২.১ একটি বাক্যে উত্তর দাও:

২.১.১  'সোমপ্রকাশ' পত্রিকার সম্পাদক কে ছিলেন ?

     উঃ  'সোমপ্রকাশ' পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ ।

২.১.২  সরকারি নথিপত্র কোথায় সংরক্ষণ করা হয় ?

    উঃ সরকারি নথিপত্র সংরক্ষণ করা হয় মহাফেজখানায় ।

২.১.৩  বাংলায় কোন শতককে 'নবজাগরণের শতক' বলা হয় ?

     উঃ বাংলায় উনবিংশ শতককে 'নবজাগরণের শতক' বলা হয় ।

২.১.৪  'উলগুলান' বলতে কী বোঝায় ?

     উঃ 'উলগুলান' এর অর্থ ভয়ঙ্কর বিশৃঙ্খলা যা দিয়ে মুন্ডাবিদ্রোহ বোঝায় ।

           উপবিভাগ— ২.২ ঠিক বা ভুল নির্ণয় করো :

২.২.১  শ্র্রীরামকৃষ্ণ রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ।    উঃ- ভুল

২.২.২  মহাবিদ্রোহের সময় ভারতের গভর্নর জেনারেল  ছিলেন লর্ড ডালহৌসি ।   উঃ- ভুল

২.২.৩  'গোরা' উপন্যাসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইউরোপীয় সমাজকে সমর্থন করেছিলেন ।   উঃ- ভুল

২.২.৪  গান্ধিজি ও ড. আম্বেদকর যৌথভাবে দলিত আন্দোলন করেছিলেন ।     উঃ- ভুল

         উপবিভাগ—২.৩  'অ' স্তম্ভের সঙ্গে 'আ' স্তম্ভ মেলাও :

'অ' স্তম্ভ 'আ' স্তম্ভ
 ২.৩.১  অরবিন্দ ঘোষ  (১)  আজাদ হিন্দ ফৌজ
 ২.৩.২  তারকনাথ পালিত  (২)  বেঙ্গল ন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ
 ২.৩.৩  নবগোপাল মিত্র  (৩)  বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট
 ২.৩.৪  রশিদ আলি  (৪)  হিন্দুমেলা

উঃ-

'অ' স্তম্ভ 'আ' স্তম্ভ
 ২.৩.১  অরবিন্দ ঘোষ  (২)  বেঙ্গল ন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ
 ২.৩.২  তারকনাথ পালিত  (৩)  বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট
 ২.৩.৩  নবগোপাল মিত্র  (৪)  হিন্দুমেলা
 ২.৩.৪  রশিদ আলি  (১)  আজাদ হিন্দ ফৌজ

    উপবিভাগ—২.৪ প্রদত্ত ভারতবর্ষের রেখামানচিত্রে নিম্নলিখিত স্থানগুলি চিহ্নিত করো ও নাম লেখ :

২.৪.১ সাঁওতাল বিদ্রোহের এলাকা,

২.৪.২ নীল বিদ্রোহের একটি কেন্দ্র,

২.৪.৩ দেশীয় রাজ্য হায়দ্রাবাদ,

২.৪.৪ পুনর্গঠিত রাজ্য গুজরাট .

     অথবা,  ( কেবলমাত্র দৃষ্টিহীন পরীক্ষার্থীদের জন্য )

শূন্যস্থান পূরণ করো :

২.৪.১ মাস্টারদা নামে পরিচিত ছিলেন —— । (উঃ সূর্য সেন)

২.৪.২  ওয়াহাবি বলতে বোঝায় —— ।   (উঃ নবজাগরণ )

২.৪.৩ 'বর্তমান ভারত' গ্রন্থটির লেখক ছিলেন —— ।  (উঃ স্বামী বিবেকানন্দ)

২.৪.৪ হরি সিং ছিলেন —— এর রাজা ।  (উঃ কাশ্মীর) 

উপবিভাগ—২.৫ নিম্নলিখিত বিবৃতিগুলির সঙ্গে সঠিক ব্যাখ্যাটি নির্বাচন করো :

২.৫.১ বিবৃতি : 'একা' আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল উত্তরপ্রদেশে ।

ব্যাখ্যা-১  এটি ছিল ব্যক্তিগত আন্দোলন ।

ব্যাখ্যা-২ এটি ছিল একটি কৃষক আন্দোলন ।

ব্যাখ্যা-৩  এটি ছিল একটি শ্রমিক আন্দোলন ।

২.৫.২ বিবৃতি :ভারত সরকার ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা শুরু করে ।

ব্যাখ্যা-১ এর উদ্দেশ্য ছিল বিপ্লবীদের দমন করা ।

ব্যাখ্যা-২ এর উদ্দেশ্য ছিল আইন অমান্য আন্দোলন দমন করা ।

ব্যাখ্যা-৩ এর উদ্দেশ্য ছিল দেশব্যাপী সাম্যবাদী কার্যকলাপ দমন করা

২.৫.৩ বিবৃতি : বিংশ শতকের ভারতে উপনিবেশ বিরোধী আন্দোলনে বামপন্থীদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল ।

ব্যাখ্যা-১ বামপন্থীরা ছিল জমিদার ও শিল্পপতিদের সমর্থক ।

ব্যাখ্যা-২ তারা ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের সমর্থক ।

ব্যাখ্যা-৩  তারা ছিল শ্রমিক কৃষকদের ব্রিটিশ বিরোধী ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের সমর্থক

২.৫.৪ বিবৃতি : ভারতের নারীরা জাতীয় আন্দোলনে প্রথম অংশ নিয়েছিল বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের সময় ।

ব্যাখ্যা-১  কারণ তারা গান্ধিজির দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল ।

ব্যাখ্যা-২  কারণ তারা অরবিন্দ ঘোষের বিপ্লবী ভাবধারার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল ।

ব্যাখ্যা-৩  কারণ তারা বিদেশি দ্রব্য বর্জন করতে চেয়েছিল

বিভাগ—গ 

৩. দুটি অথবা তিনটি বাক্যে নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও ( যে-কোনো ১১টি )      ২x১১=২২

৩.১  সামাজিক ইতিহাস কী ?

উঃ- ১৯৬০ এর দশক থেকে এডওয়ার্ড থমসন, এরিক হবসম, লুসিয়েন ফেবর, মার্ক ব্লখ প্রমুখ ঐতিহাসিকদের হাত ধরে জন্ম নেয় নতুন সামাজিক ইতিহাস । দরবারি ইতিহাসের পরিবর্তে সাধারণ মানুষের প্রাত্যহিক জীবন, সামাজিক, অর্থনৈতিক সম্পর্ক, ধর্ম-সংস্কৃতি এভাবে সামগ্রিক যাপনের কথা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সামাজিক ইতিহাস চর্চায় । হ্যারল্ড পার্কিন, রণজিৎ গুহ, পার্থ চ্যাটার্জি, শাহিদ আমিন প্রমুখরা এই ধারাকে আরও সমৃদ্ধ করে তোলেন ।

৩.২  ইতিহাসের উপাদানরূপে সংবাদপত্রের গুরুত্ব কী ?

 উঃ-  আধুনিক ইতিহাস রচনায় সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদ, সম্পাদকীয়, চিঠিপত্র, নানা বিষয়ের ওপর প্রকাশিত লেখাগুলি ইতিহাস রচনায় বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ । অন্যান্য উপাদানের সাথে তুলনা করে সংবাদপত্রে প্রাপ্ত তথ্যাদি প্রাথমিক উপাদানরূপে বিবেচিত হয় । সমকালীন সমাজ, অর্থনীতি ও রাজনীতির বার্তাবহ সংবাদপত্র ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ও আধুনিক ভারতের গঠনের ইতিহাস রচনায় বিশেষ সহায়ক ।

৩.৩  বাংলার নারী শিক্ষা বিস্তারে রাজা রাধাকান্ত দেবের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো ।

উঃ- ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারে রাজা রাধাকান্ত দেব সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন । হিন্দু কলেজ, স্কুল বুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠায় অন্যতম উদ্যোগী রাজা রাধাকান্ত দেব নারীশিক্ষার বিস্তারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন । বেথুন স্কুল, ডাফ স্কুল গঠনে, নারীদের পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার জন্য অনুপ্রাণিত করতে বিভিন্ন সভা আয়োজনে রাধাকান্ত দেব বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন ।

৩.৪  ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ বিভক্ত হল কেন ?

উঃ-  ব্রাহ্মসমাজ ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে সংস্কারের প্রশ্নে আদি ও ভারতবর্ষীয় এই দুভাগে বিভক্ত হয়েছিল । কেশবচন্দ্র সেনের খ্রিষ্টধর্ম প্রীতি, গুরুবাদের প্রতি আসক্তি, ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে নিজের নাবালিকা কন্যা সুনীতিদেবীর সাথে কোচবিহারের মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণের বিবাহদানের প্রশ্নে ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজে কেশব সেনের অনুগামী ছিলেন যারা, তাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয় । ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামীকে আচার্য করে শিবনাথ শাস্ত্রীর নেতৃত্বে গড়ে ওঠে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ । অন্যদিকে কেশবচন্দ্রের নেতৃত্বাধীন ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে 'নববিধান' ব্রাহ্মসমাজে পরিণত হয় ।

৩.৫  ফরাজি আন্দোলন কি ধর্মীয় পুনর্জাগরণের আন্দোলন ?

 উঃ- ইসলামের সংস্কার ও পুনরুজ্জীবনের আদর্শ নিয়ে ফরাজি আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল । 'ফরাজি' শব্দের অর্থ ইসলামের অবশ্য পালনীয় কর্তব্য । ইসলাম শাস্ত্রে সুপণ্ডিত হাজি শরিয়ত উল্লাহ ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে কোরান নির্দেশিত পথে ধর্মসংস্কারের জন্য এই আন্দোলনের সূচনা করেন । আন্দোলনের প্রত্যক্ষ কারণ হিন্দু জমিদার কর্তৃক ধর্মীয় কারণে ফরাজিদের উপর অতিরিক্ত ধর্মীয় 'কর' বা 'আবওয়াব' আদায় । তবে উপযুক্ত নেতৃত্বের অভাব, সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি এবং দমননীতির কারণে আন্দোলন ব্যর্থ হয় । ফরাজিদের শক্তির উৎস ছিল ধর্মীয় ঐক্য কিন্তু অবধারিতভাবে এটি একটি কৃষক অভ্যুত্থান ।

৩.৬  নীলকররা নীলচাষিদের ওপর কীভাবে অত্যাচার করত তা সংক্ষেপে আলোচনা করো ।

উঃ- ১৮৫৯-৬০ খ্রিস্টাব্দে নীলকর সাহেবদের সীমাতীত অত্যাচার ও শোষণের প্রতিবাদে কৃষকরা তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে । নীলকররা নীলচাষীদের নানাভাবে অত্যাচার করত, যেমন— নীলকুঠিতে ধরে এনে নীল চাষে বাধ্য করা হত, প্রহার করা হত, হত্যা করা হত, কৃষকেরা নীল চাষে বাধ্য না হলে তাদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিত, কৃষকদের স্ত্রী ও কন্যাদের সম্মানে হাত দিতেও পিছপা হত না ।

৩.৭  উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধকে 'সভাসমিতির যুগ' বলা হয় কেন ?

উঃ-  উনবিংশ শতকে ব্রিটিশদের উদ্যোগে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার ঘটে এবং ভারতবর্ষের মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের মানুষ শিক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি জাতীয়তাবোধে উদ্দীপ্ত হয়ে ওঠে । মধ্যবিত্ত সম্প্রদায় উপলব্ধি করে যে ব্যক্তিগতভাবে বিচ্ছিন্ন আন্দোলনের মাধ্যমে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করা সম্ভব নয় । এর একমাত্র উপায় হল ঐক্যবদ্ধ ভাবে আন্দোলন করা । এই উদ্দেশ্য সেই সময় বাংলা, মাদ্রাজ ও বোম্বেতে অনেক সভা সমিতি গড়ে ওঠে । এই কারণে ডঃ অনিল শীল উনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধকে 'সভা সমিতির' যুগ বলে অভিহিত করেছেন ।

৩.৮  'আনন্দমঠ' উপন্যাস কীভাবে জাতীয়তাবাদী ভাবধারাকে উদ্দীপ্ত করেছিল ?

উঃ-  সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে রচিত 'আনন্দমঠ' উপন্যাসের মাধ্যমে ভারতীয়দের মধ্যে জাতীয়তাবোধের বিপুল প্রসার ঘটে । আনন্দমঠের সন্তানদের উচ্চারিত 'বন্দে মাতরম' সংগীত বিপ্লবীদের মন্ত্রমুগ্ধ করেছিল । এই উপন্যাসে বঙ্কিমচন্দ্র পরাধীন ভারতমাতার দুর্দশার চিত্র দেশবাসীর সামনে তুলে ধরে দেশবাসীকে মুক্তি আন্দোলনে আন্দোলিত করেন । সন্ন্যাসী ফকির বিদ্রোহের জ্বলন্ত দলিল স্বরূপ 'আনন্দমঠ' দেশপ্রেমের জোয়ার এনেছিল ।

৩.৯  উনিশ শতকে বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশে 'ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স' -এর ভূমিকা কী ছিল ?

উঃ- ঊনিশ শতকে বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশের জন্য মহেন্দ্রলাল সরকার ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে 'ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্স' প্রতিষ্ঠা করেন । এই বিজ্ঞান কেন্দ্রে সম্পূর্ণ নিজের তত্ত্বাবধানে স্বাধীনভাবে বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে মৌলিক গবেষণার ব্যবস্থা করা হয় ও বিজ্ঞান বিষয়ক বক্তৃতার আয়োজন করা হয় । এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের বিজ্ঞান চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে তোলা হয় ।

৩.১০  'বিশ্বভারতী' প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল ?

উঃ- কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯২১ সালে বীরভূম জেলার শান্তিনিকেতনে স্নিগ্ধপল্লী প্রকৃতির বুকে 'বিশ্বভারতী' প্রতিষ্ঠা করেছিল । এই 'বিশ্বভারতী' প্রতিষ্ঠার অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল প্রাচীন ভারতীয় আশ্রমিক শিক্ষার সাথে আধুনিক শিক্ষাচেতনার সম্মিলন, শিক্ষার্থীর জীবনের পরিপূর্ণ বিকাশ সাধন করা, শিক্ষার সঙ্গে প্রকৃতি ও মানুষের সমন্বয় গড়ে তোলা, আদর্শশিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার মৌলিক নীতিরূপ স্বাধীনতা, সৃজনশীলতার বিকাশ ।

৩.১১  নিখিল ভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস কী উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ?

উঃ- ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে লালা লাজপত রায়ের সভাপতিত্বে বোম্বাইতে নিখিল ভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হয় । এর উদ্দেশ্য গুলি হল—

(i) বিভিন্ন স্থানে শ্রমিক আন্দোলনের কার্যকলাপকে নিয়ন্ত্রণ করা ।

(ii) বিভিন্ন অঞ্চলে ব্রিটিশ বিরোধী শ্রমিক আন্দোলনকে ছড়িয়ে দেওয়া ।

(iii) শ্রমিকদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতি সাধন করা ।

(iv) শ্রমিকদের সমাজতন্ত্রী ভাবধারার সাথে যুক্ত করা । 

৩.১২  'ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি' কেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ?

উঃ- শ্রমিকদের কাজের সময়সীমা কমানো, সর্বনিম্ন মজুরির হার  নির্ধারণ করা, জমিদারি প্রথার অবসান ঘটানো এবং পুনরায় নতুনভাবে শ্রমিকদের সংগঠিত করার উদ্দেশ্যে ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দের ১লা নভেম্বর মাসে 'ওয়ার্কার্স এন্ড পেজেন্টস পার্টি' গড়ে উঠেছিল । মুজফফর আহমেদ, কাজি নজরুল ইসলাম প্রমুখের নেতৃত্বে 'লাঙ্গল' ও 'গণবাণী' পত্রিকাকে মুখপত্র করে প্রাথমিকভাবে কংগ্রেসের মধ্য থেকে ও পরবর্তীতে কমিউনিস্ট আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্তভাবে শ্রমিক কৃষকদের স্বার্থরক্ষার উদ্দেশ্যে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল । 

৩.১৩  রশিদ আলি দিবস কেন পালিত হয়েছিল ?

উঃ- আজাড হিন্দ ফৌজের ক্যাপ্টেন রশিদ আলির দিল্লির লালকেল্লায় বিচার শুরু হলে তাকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয় । এই ঘটনার প্রতিবাদে ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১১ থেকে ১৩ই ফেব্রুয়ারি কলকাতা গণ আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে । ১১ই ফেব্রুয়ারি ছাত্ররা কলকাতার রাজপথে আন্দোলনে নামে এবং প্রতিবাদ দিবস রূপে ১২ই ফেব্রুয়ারি দিনটি রশিদ আলী দিবস হিসাবে পালন করা হয় ।

৩.১৪  দলিত কাদের বলা হয় ?

উঃ-  ব্যাকরণ অনুযায়ী 'দলিত' শব্দটি একটি বিশেষণ, যার অর্থ মাড়িয়ে যাওয়া হয়েছে এমন বা পদ দলিত । ১৯৩০ -এর দশক থেকে অস্পৃশ্যরা নিজেদের দলিত বলে পরিচয় দিতে শুরু করে । এরা হল বর্ণ হিন্দু সমাজের মূল স্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন । এরা সমাজের উচ্চ শ্রেণীর মানুষদের কাছে অত্যাচারিত হত । ডঃ বি. আর. আম্বেদকরের নেতৃত্বে দলিত আন্দোলন বৃহত্তর রূপ নেয় ।

৩.১৫  দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তি দলিল বলতে কী বোঝায় ?

 উঃ- ভারতের স্বাধীনতা লাভের পর ভারত সরকার দেশীয় রাজ্যগুলির ভবিষ্যৎ নির্ধারণের প্রশ্নে এক বলিষ্ঠ নীতি গ্রহণ করেছিল । ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ২৭শে জুন সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের অধীনে স্থাপিত হয় দেশীয় রাজ্য দপ্তর এবং এর সচিব হন ভি.পি.মেনন । প্যাটেল মাউন্টব্যাটেনের পরামর্শে প্রায় সমস্ত দেশীয় রাজ্যগুলিকে বিশাল পরিমাণ ভাতা, খেতাব ও অন্যান্য সুবিধার প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে "Instrument of Accession' নামে একটি দলিলে স্বাক্ষর করে ভারত ইউনিয়নে যোগদান করান । এটিই দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তির দলিল নামে পরিচিত ।

৩.১৬ ১৯৫০ সালে কেন নেহেরু-লিয়াকৎ চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল ?

উঃ- ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতার পর ভারতের কাছে প্রধান সমস্যা ছিল 'উদ্বাস্তু সমস্যা' । পাকিস্তান থেকে ভারতে বহু শরণার্থী চলে আসে এবং ভারত থেকে পাকিস্তানে বহু শরণার্থী চলে যায় । দাঙ্গা বহুল এই সমস্যার মোকাবিলা করার জন্য ১৯৫০ সালের ৮ই এপ্রিল নেহেরু-লিয়াকৎ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় । এর মাধ্যমে ভারত সরকার ১৯৪৭ থেকে ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনে উদ্যোগী হয় ।

        বিভাগ—ঘ

৪. সাত-আটটি বাক্যে যে-কোনো ছ-টি প্রশ্নের উত্তর দাও :      ৪x৬=২৪

    (প্রতিটি উপবিভাগ থেকে অন্তত একটি করে প্রশ্নের উত্তর দাও):

উপবিভাগ—ঘ.১

  ৪.১  নারী ইতিহাসের ওপর একটি টীকা লেখো ।

         উত্তর :-

  ৪.২  স্বামী বিবেকানন্দের ধর্মসংস্কারের আদর্শ ব্যাখ্যা করো ।

         উত্তর :-

উপবিভাগ—ঘ.২

  ৪.৩  ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে সাঁওতালরা বিদ্রোহ করেছিল কেন ?

         উত্তর:-

  ৪.৪  ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের প্রতি শিক্ষিত বাঙালি সমাজের কীরূপ মনোভাব ছিল ?

         উত্তর :-

উপবিভাগ—ঘ.৩ 

  ৪.৫  ছাপা বইয়ের সঙ্গে শিক্ষাবিস্তারের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করো ।

         উত্তর :-

  ৪.৬  কারিগরি শিক্ষার বিকাশে 'বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট' -এর কী ভূমিকা ছিল ?

         উত্তর :-

উপবিভাগ—ঘ.৪ 

  ৪.৭  দলিত আন্দোলন বিষয়ে গান্ধি-আম্বেদকর বিতর্ক নিয়ে একটি টীকা লেখ ।

         উত্তর :-

  ৪.৮ স্বাধীনতার পরে ভাষার ভিত্তিতে ভারত কীভাবে পুনর্গঠিত হয়েছিল ?

         উত্তর :-

বিভাগ—ঙ

৫. পনেরো-ষোলোটি  বাক্যে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:   ৮x১=৮ 

  ৫.১  শিক্ষাবিস্তারে প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্যবাদী বিতর্ক কী ?   উচ্চশিক্ষার বিকাশে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা আলোচনা করো । (৫+৩)

         উত্তর :-

  ৫.২  সংক্ষেপে মহাবিদ্রোহের (১৮৫৭) চরিত্র বিশ্লেষণ করো ।

         উত্তর :-

৫.৩  সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা বিশ্লেষণ কর ।

        উত্তর :-

*****

Comments

Related Items

মুসোলিনির পররাষ্ট্রনীতির মূল উদ্দেশ্য কী ছিল ?

প্রশ্ন:-  মুসোলিনির পররাষ্ট্রনীতির মূল উদ্দেশ্য কী ছিল ?

ইতালির শাসনভার গ্রহণ করার পর মুসোলিনি তাঁর পররাষ্ট্রনীতি ঘোষণা করেন । মুসোলিনির ফ্যাসিবাদী পররাষ্ট্রনীতির মূল উদ্দেশ্য ছিল—

ফ্রাঙ্কো কে ? স্পেনে গৃহযুদ্ধের সূচনা হয়েছিল কেন ? এই গৃহযুদ্ধের গুরুত্ব কী ?

প্রশ্ন:- ফ্রাঙ্কো কে ? স্পেনে গৃহযুদ্ধের সূচনা হয়েছিল কেন ? এই গৃহযুদ্ধের গুরুত্ব কী ?

কোন সময়কে গান্ধী যুগ বলা হয় ? অসহযোগ আন্দোলনের মুল লক্ষ্য কী ছিল ?

প্রশ্ন:-  কোন সময়কে গান্ধী যুগ বলা হয় ? অসহযোগ আন্দোলনের মুল লক্ষ্য কী ছিল ?

১৯১৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালকে গান্ধী যুগ বলা হয় ।

সাইমন কমিশন সম্পর্কে ভারতীয়দের প্রতিক্রিয়া কী ছিল ?

প্রশ্ন:- সাইমন কমিশন সম্পর্কে ভারতীয়দের প্রতিক্রিয়া কী ছিল ?

খিলাফৎ আন্দোলন কী ? এই আন্দোলনের লক্ষ্য কী ছিল ? এই আন্দোলন প্রত্যাহারের কারণ কি ?

প্রশ্ন:- খিলাফৎ আন্দোলন কী ? এই আন্দোলনের লক্ষ্য কী ছিল ? এই আন্দোলন প্রত্যাহারের কারণ কি ?